post

উত্তর দিচ্ছেন সম্মানিত কেন্দ্রীয় সভাপতি

২৪ এপ্রিল ২০১৪

প্রশ্ন : সালাম নেবেন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ছাত্রশিবির ছাত্রসংগঠন হওয়া সত্বেও ছাত্রদের কল্যাণমুখী কাজের চেয়ে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম বেশী করে কেন? সম্মানিত কেন্দ্রীয় সভাপতি : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহ। ভাই, আপনাকে ধন্যবাদ জনাচ্ছি আপনার প্রশ্নের জন্য। ছাত্রশিবিরে মুল কাজ ছাত্রদেরকে ইসলামের দিকে আহবান করা এবং তাদেরকে আদর্শ মুসলমান হিসেবে গড়ে তোলা ছাত্রসমাজ নিয়ে কাজ করায় ছাত্রদের প্রকৃত সমস্যাসমূহে সমাধান করাও আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ সে হিসাবে আমরা ছাত্রদের কল্যাণমুখী নানাবিধ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে থাকি। যেমন লেন্ডিং লাইব্ররী তৈরি, ক্যারিয়ার গই্ডলাইন, গরীব ছাত্রদের পড়ালেখায় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, শিক্ষা উন্নয়ন কল্পে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরন, প্রয়োজনের আলোকে ছাত্রদেরকে লজিং এর ব্যবস্থা করে দেয়া, ফ্রী কোচিং এর ব্যবস্থা করে দেয়া, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্ট চালানো ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সুষ্ঠু আন্দোলন গড়ে তোলা প্রভৃতি।

আমরা ছাত্র জীবনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড খুব বেশী চালানোর পক্ষপাতী নই আমরা চাই আমাদের কর্মীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রাজনীতি সচেতন হয়ে গড়ে উঠুক। কিন্তু একই সাথে জাতির সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় এবং জাতির জরুরী প্রয়োজনে আমরা আবার নিশ্চুপ বসে থাকতে পারি না এতদবস্থায় আমরা জাতি জরুরী প্রয়োজনে সরাসরি রাজনৈতিক প্রোগ্রমাম পরিচালনা করতে বাধ্য হই। তবে অবশ্যই রাজানৈতিক প্রোগাম প্রয়োজনের আলোকে সাময়িক সময়ের জন্য। কিন্তু ছাত্রকল্যাণমূলক প্রোগ্রাম আমাদের নিয়মিত ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি সব সময়ই গুরুত্বের দিক থেকে উচ্চ অবস্থায় বিরাজ করছে এবং করবে ইনশাআল্লাহ। প্রশ্ন : মুহতারাম সালমা নেবেন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পদার্থ বিজ্ঞানের একজন ছাত্র ও শিবিরের একজন সাথী। এ পর্যায়ে এসে আমার মধ্যে ইসলামী স্কলার হওয়ার দৃঢ় ইচ্ছ জাগ্রত হয়েছে। ক্লাসে আমার রেজাল্ট আলহামদুলিল্লহ ভাল। এ ক্ষেত্রে পদার্থ বিজ্ঞানে পড়ালেখা করে আমি কিভাবে ইসলামিক স্কলার হতে পারি, সে ব্যাপার পরামর্শ চাই। জিয়াদ আদনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানিত কেন্দ্রীয় সভাপতি : ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ, আপনর বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতের সুন্দর লক্ষ্যের কথা জেনে খুব ভাল লাগল। প্রথমেই দোয়া করছি, আল্লাহর যেন আপনার এই ইচ্ছাকে পূর্ণ করেন। ভাই, ইসলামিক স্কলার হওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিভাগ পড়া কোন বাধার বিষয় নয়। বরং এটা সহযোগী। করণ, বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাব আল্লার্হ নিদর্শনসমূহ বুঝতে পারা আপনার জন্য অনেক সহজ হওয়ার কথা। আসলে ইসলামিক স্কলার হওয়ার জন্য মূলত ইসলাম নানাবিধ বিষয়ে গভীর জ্ঞনার্জন এবং একজন কামিল মুসলমানের প্রতি বর্তানো দায়িত্ব পূর্ণরূপে আমলে কোন বিকল্প নেই। যথাযথ জ্ঞনার্জনের জন্য কুরআন, হাদিস, ইসলামী সাহিত্য, ফিকাহ ও উসুলে ফিকাহ, নবী রাসূলদের জীবনী, ইসলামী মনিষিদের জীবনী, ইসলামের বিভিন্ন দিকের উপর লিখা বইসমূহ প্রভৃতি যথেষ্ট পরিমানে অধ্যয়ন করতে হবে। আর গভীর জ্ঞানার্জনের জন্য আরবী ভাষা ভালভাবে শিখে নেয়া আবশ্যকীয়। কারণ, কুরআন এবং ইসলামের উপর অনেক মূল বই আরবিতে লিখিত। এক্ষেত্রে মুল গ্রন্থের ভাষ্য যথাযথভাবে বুঝতে গেলে সরাসরি সে ভাষা জানার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ফার্সির গুরুত্বও কম নয়। অভিজ্ঞ এক বা একাধিক শিক্ষকের শরাণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। আর অধ্যায়নের সময় মনোযোগ সহকারে শানে নুযুলের সাথে বর্তমান প্রেক্ষাপটকে ও মেলানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে। সেজন্য ইসলামী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার কোন বিকল্প নেই সাথে বিজ্ঞানের অধ্যায়নকে ও যথেষ্ট পরিমানে চালিয়ে যেতে হবে।

প্রশ্ন : আসসালাম আলাইকুম। বর্তমান সময়ে ছাত্রশিবিরকে দমন করার জন্য সরকার হত্যা ও গুমসহ জুলম নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে, যা মিডিার মাধ্যমে আমরা দেখিছ। কিন্তু তারপরেও ছাত্রশিবির দমছে না বরং আরো বেশি বেশি শক্তির প্রদর্শণ করছে। আমার প্রশ্নহল ছাত্রশিবির এতো শক্তি পায় কোথা থেকে? শফিউর রহমান, গাইবান্ধা সম্মানিত কেন্দ্রীয় সভাপতি : ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ, আপনি খুব ভাল একটি প্রশ্ন করেছেন। ছাত্রশিবির হল একটি ইসলামী আন্দোলন। আমাদের অভিভাবক আল্লাহর তায়ালা। আমরা আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাই এবং তাঁর উপরই নির্ভর করি। আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহর সাহায্য পেলে পৃথিবীতে আর কেউ আমাদেরকে দমাতে পারেনা। আমরা যখন থেকে ঈমান এনেছি, তখন থেকেই নিজেদের সব কিছু আল্লাহর জন্য নিবেদিত করে নিয়েছি। আমরা আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় পাইনা। শত বাধা উপেক্ষা করেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কথা আমরা বলবই। সেক্ষত্রে যদি আমাদেরকে বিভিন্ন রকমের দুনিয়াবী ক্ষতি সম্মূখীন হতে হয়, আমরা সেজন্য প্রস্তত। আমাদেরকে যদি নিজেদের জীবন দিতে হয়, সেক্ষেত্রেও আমরা পিছপা হব না কারণ ঈমানদারদের জানমাল তো আল্লাহ কাছে বিক্রি হয় গেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর মু’মিনদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন’ আমাদের প্রতিটি কর্মী এ দৃঢ় প্রত্যয় লালন করেন। এ ঈমানী শক্তিই আসলে আমাদের আসল সম্পদ। এ শক্তিকে সাথে নিয়ে আমরা আল্লাহর সাহায্য কামনায় আমাদের পথ চলি। দোয়া করবেন, যে আমরা ঈমানের পথে সব সময় দৃঢ় থাকতে পারি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির