post

জানা

অজানা জুলাই ২০১৩

১১ জুলাই ২০১৩

পবিত্র কুরআনের মহিমা নিয়ে পার্ক সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই কর্তৃপক্ষ অনন্যসাধারণ একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। পবিত্র কুরআনের মহিমা প্রদর্শনে তারা একটি পার্ক নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এর নাম হবে ‘হলি কুরআন পার্ক’। প্রায় ৬০ হেক্টর এলাকা নিয়ে পার্কটি করা হবে। পবিত্র কুরআনে উল্লেখিত সব ধরনের উদ্ভিদ এই বিশেষ পার্কে রাখার চেষ্টা করা হবে। এসবের মধ্যে রয়েছে ডুমুর, ডালিম, জলপাই, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রশুন, মসুর, যব, গম, আদা, কুমড়া, তেঁতুল, কলা, শসা ইত্যাদি। এই উদ্ভিদের মধ্যে যেগুলো পাওয়া যাবে, তা পার্কে রাখা হবে। থিম পার্কটি দুবাইয়ের আল খাওয়ানিজ এলাকায় অবস্থিত। ইসলামী প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে পার্কটি বিশেষভাবে সাজানো হবে। পবিত্র কুরআনের নানা বিস্ময়কর মহিমা দর্শনার্থীর জন্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হবে পার্কে। দুবাই পৌর কর্তৃপক্ষের প্রকল্প বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুর মাশরাউম সম্প্রতি প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের কথা বিস্তারিতভাবে জানান। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ ডলার বা ৫৭ কোটি ৩৬ লাখ ছয় হাজার টাকা। তবে চূড়ান্ত নকশা অনুমোদনের পর খরচ কিছুটা এদিক-সেদিক হতে পারে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে দুবাই পৌরসভার সাধারণ প্রকল্প বিভাগ। উদ্যোক্তারা জানান, পার্কটিতে থাকবে একটি দৃষ্টিনন্দন প্রধান প্রবেশ পথ, একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি ইসলামী বাগান, শিশুদের খেলার জায়গা, ওমরা কর্নার, একটি আউটডোর থিয়েটার, কুরআনের মহিমা প্রদর্শনের স্থান ও ফোয়ারা। এর পাশাপাশি আরও থাকবে বাথরুম, একটি কাচের ভবন, একটি মরূদ্যান, একটি পাম বাগান, একটি লেক, একটি রানিং ট্র্যাক, একটি সাইক্লিং ট্র্যাক ও একটি হাঁটার ট্র্যাক। কাচের ভবনে ১৫ ধরনের উদ্ভিদ লাগানো হবে। অন্যান্য উদ্ভিদ লাগানো হবে বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট বাগানে। পার্ক নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি, ট্র্যাক নির্মাণ, সার্ভিস ভবনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে শেষ হবে। তৃতীয় দফার কাজ শুরু হবে ২০১৪ সালের আগস্টে। পার্কের কাজ পুরোপুরি শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর। ফোন দিয়ে তেলাপোকা নিয়ন্ত্রণ! তেলাপোকা দেখে আঁতকে ওঠার দিন শেষ। এবার হাতের মোবাইলফোন ব্যবহার করেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তেলাপোকাকে। অবশ্য সেটি নিছক তেলাপোকা হবে না, হবে সায়েন্স ফিকশনে দেখা যন্ত্রপোকা বা সাইবর্গ! অলাভজনক সংস্থা কিকস্টার্টারের সহায়তায় ব্যাকইয়ার্ড ব্রেইনস নামে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের একদল গবেষক রবোট ও ককরোচের (তেলাপোকা) সমন্বয়ে এই রবোরোচ তৈরি করেছেন। তেলাপোকা তাদের দীর্ঘ শুঁড়ের মাধ্যমে আশেপাশের পরিবেশকে অনুভব করতে পারে। এ শুঁড় কোনো বস্তুকে স্পর্শ করা মাত্র তার সঙ্কেত তেলাপোকার মস্তিষ্কে চলে যায়, যার ফলে সেটি বুঝতে পারে যে সামনে বাধা আছে। তেলাপোকার এই প্রাকৃতিক চলাচল পদ্ধতিকেই রবোরোচে কাজে লাগিয়েছেন গবেষক দল। তারা সার্জারির মাধ্যমে তেলাপোকার শুঁড়ে একটি বৈদ্যুতিক উদ্দীপক বসিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য তেলাপোকার ছয়টি পায়ের একটি অপসারণ করতে হয়েছে। এরপর এর পিঠে একটি ‘ব্যাকপ্যাক’ বসিয়ে দিয়েছেন, যা ওই উদ্দীপক যন্ত্র থেকে স্মার্টফোনে সিগন্যাল পাঠাবে। ফলে ব্যবহারকারীরা অ্যাপটি চালু করে স্ক্রিনের বিভিন্ন দিকে স্পর্শ করে পোকাটিকে চলাচলের নির্দেশ দিতে পারবেন। রবোরোচ সেই নির্দেশিত দিকেই হাঁটবে। এর ব্যাখ্যা হিসেবে গবেষকরা জানান, ফোনের স্ক্রিনের স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে উদ্দীপক যন্ত্রের মাধ্যমে তেলাপোকার মস্তিষ্কে সিগন্যাল চলে যাবে, যার ফলে তার মনে হবে সামনে কোনো বাধা আছে। পুরো প্রক্রিয়াটি তেলাপোকার জন্য ব্যথা ও যন্ত্রণাবিহীন বলে দাবি করছেন গবেষকরা। তিন বছরের গবেষণা ও ১১ বার পুনরাবৃত্তির পর এ প্রজেক্ট সাফল্যের মুখ দেখলো। নিউরোজইক্যাল গবেষণার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ব্যাকইয়ার্ড ব্রেইনসের সদস্যরা। কৃত্রিম পাতা দেবে হাইড্রোজেন যেকোনো সজীব উদ্ভিজ পাতা কার্বন ডাই-অক্সাইড (যা মানুষ নিঃশ্বাসে ছাড়ে) শুষে নেয় বাতাস থেকে। ছাড়ে জলজ অণু ও তৈরি করে হাইড্রোজেন আয়ন। কিন্তু বাড়ির ড্রইংরুমের কৃত্রিম প্লাস্টিক গাছের পাতা যদি শুষে নিতে পারত সব কার্বন ডাই-অক্সাইড? তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এতো বেশি মাথা ঘামাত না মানুষ। না, সত্যিই আর মাথা ঘামাতে হবে না। চীনের বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এমন এক ধরনের কৃত্রিম পাতা, যা প্রাকৃতিক পাতার মতোই আচরণ করে। এমনকি এটা প্রাকৃতিক পাতার চেয়ে দ্বিগুণ আলো শোষণ করতে পারে, বিনিময়ে শক্তি দেবে তিন গুণ! ভিনগ্রহে প্রাণের সন্ধানে পৃথিবীর বাইরে আর কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা মাথা ঘামাচ্ছেন বহু বছর ধরে। ঠিক কী ধরনের পরিবেশে প্রাণের উন্মেষ ঘটে, তার একটা মোটামুটি ধারণা এখন বিজ্ঞানীদের আছে। পৃথিবীর কাছাকাছি মঙ্গলগ্রহে এই প্রাণের সন্ধানে কিছু অভিযান ইতোমধ্যে চালানো হয়েছে। প্রাণের সন্ধানে তারা এখন যেতে চাইছেন আরও দূরে, সৌরজগতের একেবারে প্রান্তসীমায়। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা তাদের পরবর্তী মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সৌরজগতেরই একটি প্রহ জুপিটার বা বৃহস্পতি এবং তিনটি চাঁদ অভিমুখে এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে জুপিটার আইসি মুন এক্সপ্লোরার বা সংক্ষেপে- জুস। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের মহাকাশ পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মিশেল ডাউর্টি বলেন, “জুস মিশনের মূল উদ্দেশ্য হবে এটা দেখা যে আমাদের সৌরজগতে বা তার বাইরে প্রাণের জন্ম বা বিকাশের মতো পরিবেশ আছে কি না।” এই মিশনের লক্ষ্য হবে বৃহস্পতির কাছাকাছি পৌঁছানোর পর তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তার কক্ষপথ পরিভ্রমণ করা। এরপর এই মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়েই এই মিশন বৃহস্পতির একটি চাঁদ ইউরোপার দিকে যাবে। বৃহস্পতির দুটি মেরু পর্যবেক্ষণ করবে। এভাবে নয় মাস কাটানোর পর এটি যাবে আরেকটি চাঁদ গ্যানিমিডের দিকে। জুস মিশনের জন্য তৈরি হচ্ছে যে প্রোব বা রকেটচালিত অনুসন্ধানী যান, তা শেষ হতে আরও প্রায় দশ বছর সময় লাগবে। সব ঠিকঠাক থাকলে এটি উৎক্ষেপন করা হবে ২০২২ সালে। আর উৎক্ষেপনেরও আরও প্রায় আট বছর পরে, ২০৩০ সাল নাগাদ এটি বৃহস্পতির কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। টাকা টুকরো করবে অ্যালার্ম ঘড়ি! ফজরের ওয়াক্তে ওঠাটা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ভীষণ জরুরি। এই কথা জানান দিতে সাত সকালে হয়তো ঠিক সময় মেনেই বেজে উঠল অ্যালার্ম ঘড়িটা। কিন্তু আপনি সেই অ্যালার্ম শুনে ঘুম থেকে উঠলেন না। বরং আর পাঁচ মিনিট পরে উঠব ভেবে আবারও খানিকটা চোখ বন্ধ করার নামেই কেমন করে যেন কাটিয়ে দিলেন আরও আধঘণ্টা। ফলাফল, নামাজটা কাজা হয়ে গেল এবং সঠিক কাজটি সঠিক সময়ে না করে দেরিতে শুরু করা কিংবা কাজের জন্য নিজেকে দ্রুত প্রস্তুত করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলা। বলা বাহুল্য, অ্যালার্ম বাজার পরও আরও খানিকটা ঘুমাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলার এই রোগ গোটা দুনিয়ার অনেক মানুষের মাঝেই আছে। আর এই ঝামেলা থেকে ঘুমের বদভ্যাসে আক্রান্ত মানুষকে খানিকটা মুক্তি দিতেই সম্প্রতি অভিনব এক অ্যালার্ম ঘড়ি উদ্ভাবন করেছেন আমেরিকার এক উদ্ভাবক। রিচ ওলসন নামের এই ব্যক্তি সম্প্রতি এমন একটি অ্যালার্ম ঘড়ির পরীক্ষামূলক প্রদর্শন করেছেন যেটি নির্ধারিত সময়ে ঘুম থেকে না উঠলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এর সাথে সংযুক্ত টাকা ছিড়ে কুটিকুটি করে ফেলবে। অ্যালার্ম ঘড়িটি তৈরি করার জন্য তিনি স্পার্কফুনের একটি ক্লককিটকে সংযুক্ত করেন ইউএসবি পেপার শ্রেডার (অপ্রয়োজনীয় কোনো কাগজ টুকরো টুকরো করে ফেলার যন্ত্র)-এর সাথে। আর এরপর তিনি তার ডিভাইসটিকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করেন যেন অ্যালার্ম বেজে ওঠার পর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেটি আগে থেকে শ্রেডারের ট্রে’তে রাখা টাকা টুকরো টুকরো করে ফেলে। এক্ষেত্রে শ্রেডারে ঠিক কী পরিমাণ টাকা আপনি টুকরো টুকরো করার জন্য রাখবেন সেটা একেবারেই ব্যবহারকারীর নিজের সিদ্ধান্ত। তবে ওলসনের বিশ্বাস, যখন ঘুম থেকে দেরি করে উঠলে আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি থাকবে তখন হয়তো কেউই অ্যালার্ম শোনার পর বিছানা ছেড়ে না উঠে ঘুমিয়ে থাকার বিলাসিতা দেখাবেন না। যদিও রাষ্ট্রীয় সম্পদ টাকার এমন যথেচ্ছ ব্যবহার বা ব্যাংকনোটের ক্ষতি করা এই যন্ত্র আমেরিকার ফেডারেল আইনের পরিপন্থী বলে ইতোমধ্যে বেশ কিছু সমালোচনাও শুনতে হচ্ছে ওলসেনকে। আর এইসব সমালোচনার জবাবে ওলসেন জানিয়েছেন যে, সময় মতো ঘুম থেকে না ওঠাও একটি অপরাধ এবং কেউ যদি সময় মতো ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে তার টাকা নষ্ট হওয়ারও কোনো কারণ নেই। ভাঁজ করা যাবে টিভির পর্দা জাপানের গবেষকেরা এবার এমন একটি টেলিভিশনের (টিভি) নমুনা তৈরি করেছেন, যেটি জানালার পর্দার মতো ভাঁজ করে রাখা যায়। কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘ডিসপ্লে উইক ২০১৩’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতে নমুনাটি প্রদর্শন করা হয়। এই টিভির নাম দেয়া হয়েছে ‘লুমিনাস অ্যারে ফিল্ম’ বা সংক্ষেপে ‘লাফি’। জাপানের শিনোদা প্লাজমা করপোরেশনের গবেষকেরা প্লাজমা দিয়ে ওই বিশেষ টিভিপর্দা তৈরি করেছেন। প্লাজমা অনেকটা ফ্লুরোসেন্ট বাতির মতো কাজ করে। শিনোদার টিভিপর্দাটির দৈর্ঘ্য তিন ফুট। কেবল একদিকে সর্বনিম্ন চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধে এটি ভাঁজ করা যায়। একটি কাচের বদলে এক মিলিমিটার ব্যাসার্ধের অসংখ্য কাচের টিউব দিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি বাজারজাতকরণের সময় সম্পর্কে জানানো হয়নি। ইলেকট্রনিক রেটিনা বহু বছর ধরে পুরোপুরি অন্ধ ব্রিটেনের দ’জন মানুষ তাদের আংশিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন তাদের চোখে ইলেকট্রনিক রেটিনা সংযোজনের মাধ্যমে। বিজ্ঞানীরা একে যুগান্তকারী এক সাফল্য বলে বর্ণনা করছেন। এই নতুন উদ্ভাবন এখনো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ভবিষ্যতে এভাবে ইলেকট্রনিক রেটিনার মাধ্যমে বহু অন্ধ মানুষ তাদের দৃষ্টিশক্তি হয়তো পুরোপুরি ফিরে পাবেন। যে দুজনের চোখে পরীক্ষামূলকভাবে এই ইলেকট্রনিক রেটিনা সংযোজন করা হয় তাদের একজন রবিন মিলার। মিস্টার মিলার বলছেন, বহু বছর পর তিনি আবার আলো দেখতে পাচ্ছেন: ইলেকট্রনিক রেটিনা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে এই গবেষণা চলছে অক্সফোর্ড আই ক্লিনিক এবং লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গবেষণা এখনো একেবারে প্রাথমিক ধাপে, বলা যেতে পারে ক্যামেরা আবিষ্কারের প্রথম যুগে ফটোগ্রাফীর অবস্থা যেরকম ছিল, অনেকটা সেরকম। কিন্তু আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অন্ধদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এই আবিষ্কার বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে পারে বলে তারা আশা করছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির