post

সিরিয়া সঙ্কট সর্বাগ্রে চাই সহিংসতার অবসান

০১ মে ২০১২
মীযানুল করীম সিরিয়া সঙ্কটের সুরাহা দূরের কথা, তা দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। এ জন্য মূলত দায়ী দেশটির ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে থাকা স্বৈরাচারী রাষ্ট্রশক্তি। এই একদলীয় সেক্যুলার ও সোস্যালিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতীক ও প্রতিভূ বাশার আল আসাদ। তিনি নিজেকে প্রগতিশীল বলে দাবি করলেও মধ্যযুগের সামন্ত প্রভুদের কায়দায় স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে শাসনকাজ চালান। জনগণকে স্বাধীন দেশের নাগরিক নয়, রাজার রাজত্বে হুকুম তামিলের প্রজা বলে গণ্য করে থাকেন। তিনি ক্ষমতাসীন হয়েছেন সামন্তবাদী কায়দায় পিতার উত্তরাধিকারীরূপে। বছরাধিক কালের প্রচণ্ড গণ-আন্দোলন এবং সশস্ত্র সংঘাতের কোনো তোয়াক্কা না করে তিনি গদি আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছেন। এ জন্য যখন যে অপকৌশল পছন্দ হয়, সেটা ব্যবহার করেন নির্দ্বিধায়। এর সর্বশেষ নজির শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হঠাৎ শর্তারোপ। ফলে ১২ এপ্রিল থেকে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। আর যদি বাশার আপাতত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের ভান করেন, আবার সহসা যে তার বাহিনী কোনো ছলছুতায় হামলা ও হত্যায় মেতে উঠবে, সে আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। বাশার, তার দল বাথ পার্টি, তার সরকার ও সৈন্যরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের কেবল আস্থাই হারায়নি, বরং তারা বাশার এবং তার দল, সরকার ও বাহিনীগুলোকে শত্রু গণ্য করছে। জাতিসঙ্ঘের বিগত মহাসচিব কফি আনান তার আমলে বিশ্বশান্তির প্রয়াসে নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের পরিচয় দিয়ে প্রশংসা পেয়েছেন। বিশেষ ইমেজের কারণে তিনি সিরিয়ার বিবদমান দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণীয়। তাই জাতিসঙ্ঘ ও আরব লিগ তাঁকে সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত নিযুক্ত করেছে। অনেক দৌড়ঝাঁপ করে তিনি একটি শান্তি পরিকল্পনা পেশ করেছেন। সে মোতাবেক ১২ এপ্রিল থেকে সংশ্লিষ্ট সবাই সশস্ত্র সঙ্ঘাত ত্যাগ করেছেন। এর আগে ১০ তারিখের মধ্যে সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেয়া হয়েছে শহরগুলো থেকে। বাশার বিনাশর্তে এই পরিকল্পনা ও প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলেন। এতে সবাই আশাবাদী হন যে, সিরিয়ায় রক্তক্ষয় বন্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং তখন দুই পক্ষের মাঝে আলোচনার অনুকূল পরিবেশ থাকবে। এতে সংলাপ ও সমঝোতার দ্বারা দেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করে জাতিকে ক্রমান্বয়ে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেয়া যাবে। কিন্তু বিধিবাম! শেষ মুহূর্তে বাশার সরকার বেঁকে বসে। তাদের শর্ত, বিরোধী দল লিখিতভাবে অঙ্গীকার করতে হবে যে, তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে। যদি এটাই বাশারদের মনের কথা হয়, তাহলে আগে কেন এটা বলা হলো না? দামেস্ক সরকার নানা অজুহাতে টালবাহানা করে যুদ্ধবিরতি এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল বলে সন্দেহ করা যায়। কিন্তু এতে দেশের যেমন ক্ষতি, তেমনি বাশারও শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। সিরিয়ার পরিস্থিতি অন্যান্য আরব দেশ থেকে বেশ কিছুটা পৃথক। এই ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যের কারণে বেশি ফায়দা পাচ্ছে স্বৈরতন্ত্রী বাশার আল আসাদ। যেমন ১. প্রধানত নিজের আলাভি গোত্রের লোকজন দিয়ে সেনা ও গোয়েন্দা বাহিনী গড়ে তুলেছেন বাশার ও তাঁর পিতা। বাথ পার্টি ও সরকারের নেতৃত্বেও তাদের দাপটের ফলে দীর্ঘকাল ক্ষমতা কুক্ষিগত রেখে প্রতিপক্ষ দমন সম্ভব হয়েছে। ২. সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে নৃশংস রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং মানবাধিকার হত্যার বহু অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে এই সরকার ইসরাইল ও ইহুদিবাদের ঘোরবিরোধী ভূমিকা রাখায় ফিলিস্তিনিসহ আরবদের অনেকে কিছুটা সহানুভূতি পোষণ করে। বাথ পার্টির সরকার একদিকে কট্টর সেক্যুলার এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রতি বিদ্বেষী; অপর দিকে হিজবুল্লাহ মুক্তি সংগ্রামীদের এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ঘোর সমর্থক। ৩. আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৫টি বৃহৎশক্তির মধ্যে চীন ও রাশিয়ার ভূরাজনৈতিক কারণে বরাবর সিরিয়া সরকারের পক্ষে। তারা মনে করে দামেস্কে সরকার পতন ঘটলে সিরিয়া কর্তৃপক্ষের নীতি বদলে যাবে এবং দেশটির সরকার মার্কিনপন্থী হতে বাধ্য হবে। তা হলে মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি ও রাজনীতির ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। আমেরিকাকে চাপে রাখতে এবার রাশিয়া সিরিয়ায় নৌবহর পাঠিয়েছিল শুভেচ্ছা মিশনে। তা ছাড়া ইরান, কিউবা, ভেনিজুয়েলা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দেশও সিরিয়ার মার্কিন ও ইসরাইল বিরোধী অবস্থানের কারণে বাশার সরকারকে সরব সমর্থন কিংবা নীরব অনুমোদন দিচ্ছে। বাইরের এসব সমর্থন পেয়ে বাশার ভেতরের গণশক্তিকে তোয়াক্কা করছেন না। ৪. যদিও সিরিয়া সরকার কট্টর মার্কিনবিরোধী এবং বামপন্থী হিসেবে পরিচিত, বাথ পার্টির এই সরকার তার আদর্শগত কারণেই সুন্নি অধ্যুষিত আল কায়েদার চরমবিরোধী। এ জন্য আমেরিকা একদিক দিয়ে স্বস্তি বোধ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাশার সরকারের চেয়ে বিন লাদেনের আলকায়েদা বেশি ভয়াবহ ও বিপজ্জনক। ৫. সিরিয়ার সরকার এত নিষ্ঠুর নিপীড়ক হওয়ার পরও আরবদের একটা অংশ তাদের ব্যাপারে নমনীয় বা দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ায় এর সুযোগ নিচ্ছে। তিউনিসে সাম্প্রতিক শীর্ষ সম্মেলনে যেমনটা আশা করা গিয়েছিল তেমন ঐকমত্য কিংবা জোরালো ও সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, তুরস্কের মতো অন্যরা দামেস্ককে অবিলম্বে সরকার বদল কিংবা কঠোর পদক্ষেপের ব্যাপারে সিরিয়াস নয়। এই অবস্থায় বাশারকে পদত্যাগের জন্য সরাসরি চাপ  দেয়া যাচ্ছে না। ৬. সিরিয়ায় অবিলম্বে এসপার ওসপার একটা কিছু হয়ে যাকÑ এমনই আকাক্সক্ষা অনেকের। কারণ, দীর্ঘদিনের সহিংসতায় সরকারে পতন হয়নি। তদুপরি অবস্থান একটুও না বদলিয়ে সরকার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য প্রভাবশালী ও নেতৃস্থানীয় কোনো কোনো মুসলিম রাষ্ট্র বাশারের বিপক্ষ ও বিদ্রোহী লোকজনকে অস্ত্র জোগানের পক্ষে। কিন্তু এতে গৃহযুদ্ধ ভয়ানক আকার নিয়ে কেবল রক্তপাতই দীর্ঘায়িত করবে এবং পরিণামে সিরিয়া খণ্ডিত হতে পারে, এহেন আশঙ্কাও কম নয়। মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অখণ্ডতা নস্যাতের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এখন ওপেন সিক্রেট। তাই সিরিয়ায় সঙ্ঘাত নয় সংলাপ এবং অস্ত্র নয়, আলোচনার পক্ষেই সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে। এটা কিছুটা হলেও স্বস্তিকর বাশার আল আসাদের জন্য। সিরিয়ার একগুঁয়ে নিপীড়ক বাথ পার্টির স্বৈরতন্ত্র মানুষের রক্তের স্রোত বইয়ে দিতে পারে নির্দ্বিধায়। দেশটিতে প্রতিদিন ৫০ থেকে শুরু করে এক শ’, দেড় শ’, দু’শ মানুষের হত্যাকাণ্ড এরই প্রমাণ। সম্প্রতিক কিংবা অতীতের কোনো গণ-আন্দোলনে আরব বিশ্বের কোনো দেশে এত মানুষ নিহত হওয়ার নজির নেই। বাশার আল আসাদের গণবিরোধী রাষ্ট্রশক্তির কাছে গণমানুষের জীবনের চেয়ে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতার মূল্য বেশি। তাই তো বর্তমান আন্দোলনের এক বছরে প্রায় ১১ হাজার মানুষের মৃত্যুর পরও সিরিয়া সরকারের একরোখা ও নিষ্ঠুর মনোভাবে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এ অবস্থায় সিরীয় জনগণের কল্যাণকামিতা থেকেই কোনো কোনো মুসলিম দেশ বিদ্রোহী সেনা এবং সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি যাইহোক এবং যুক্তি যতই থাকুক না কেন, সিরিয়ায় অঘোষিতভাবেই গৃহযুদ্ধ যেটুকু ছড়িয়ে গেছে, এটাও বন্ধ করা দরকার অবিলম্বে। না হয় পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ ও রক্তক্ষয়ী হয়ে দাঁড়াবে যে সিরীয় জনগণের মধ্যে বিভেদ হানাহানি, হিংসা প্রতিহিংসার পথ ধরে দেশটি বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে। যে কোনো মূল্যে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংহতি ও অখণ্ডতা অক্ষুণœ রাখতে হবে। মনে রাখা উচিত, আরব ও মুসলিমদের প্রতি বৈরী বহিঃশক্তির কোপদৃষ্টি রয়েছে সিরিয়ার প্রতি। তারা স্বৈরাচার হঠানোর সুযোগে সেখানে স্বদেশী একনায়কের স্থলে বিদেশী খলনায়কদের অন্যায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সিরিয়া খণ্ডিত হলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে এর প্রভাবে অস্থিতি উত্তেজনা আরো বেড়ে যাবে। ইসরাইল এবং তার মুরব্বিরা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে নানা অজুহাতে এ সুযোগে বিভক্ত করে দুর্বল বানিয়ে রাখতে চায়। এর আগে সিরিয়ার পাশের ইরাক শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের নামে তিন ভাগ করার মার্কিন পরিকল্পনার কথা শোনা গেছে। কুর্দি এলাকা কার্যত এখন ভিন্ন রাষ্ট্রের মতো। পাকিস্তান ভেঙে অন্তত ৪ ভাগ করার নীলনকশাও ফাঁস হয়ে গেছে। বৃহত্তর মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া থেকে পূর্ব তিমুর বিচ্ছিন্ন করার পর আরো কোনো কোনো অংশকে আলাদা হতে উস্কিয়ে দেয়া হচ্ছে। বৃহৎ সুদান থেকে দক্ষিণাঞ্চল পৃথক করে নতুন রাষ্ট্রের জন্ম দেয়া হয়েছে। লিবিয়াকে সাম্রাজ্যবাদী আমলের মতো আবার তিন খণ্ড করার অপচেষ্টা চলছে। স্বৈরাচার পতনের সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক শক্তি এটা করছে। অথচ সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য চাই সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য। আর এই সিরিয়াকে নিয়ে প্রথম মহাযুদ্ধের পর ব্রিটিশ ও ফরাসিদের বানরের পিঠাভাগের খেলা অনেকেরই জানা। তখন ওসমানি খেলাফত থেকে সিরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। সিরিয়াকে ভেঙে খ্রিস্টানদের স্বার্থে লেবাননের জন্ম দেয়া হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে গৃহযুদ্ধ নয়, প্রথমে সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে সংলাপের অনুকূল পরিবেশ সিরিয়ার শান্তি, স্থিতি ও গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে সর্বাধিক প্রভাবশালী ও আলোচিত ব্যক্তি হচ্ছেন হেনরি কিসিঞ্জার। তিনি বলেছিলেন, আরবরা মিসর ছাড়া যুদ্ধ করতে অক্ষম এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সিরিয়ার ভূমিকা থাকতেই হবে। এখন সেই সিরিয়াতেই অশান্তির দাবানল জ্বলছে আর সিরিয়ার ত্রাতার ভূমিকায় নেমে কিসিঞ্জারের দেশ যা করছে, তা নিঃস্বার্থ তো নয়ই, শান্তিরও অনুকূল নয় পুরোপুরি। সিরিয়ার বিপর্যয় শুধু রাজনৈতিক ও সামরিক নয়, মানবিকও। হাজার হাজার মানুষ হতাহত, নিখোঁজ, ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের বহু জায়গা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বিদেশী সাংবাদিকদেরও প্রাণ দিতে হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সিরিয়ায় গত এক বছরে ৮ থেকে ১১ হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছে রাজনৈতিক গোলযোগে। হামলা ও সংঘর্ষের অসংখ্য ঘটনায় যেসব লোক মারা গেছে, তাদের অন্তত ৭০ শতাংশই সরকারবিরোধী কিংবা সাধারণ নাগরিক। ৪০০ শিশুও রয়েছে এই মৃতদের তালিকায়। সিরীয় বাহিনীর বর্বরতা প্রবাদপ্রতিম। বাশার তাঁর বিরোধী দলমত নির্মূল করার উত্তরাধিকারও যেন পেয়েছেন পিতার প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হয়ে। তাঁর পিতা হাফেজ আল আসাদ আশির দশকে শক্তিশালী ইসলামী সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড দমনে অবর্ণনীয় নৃশংসতা অবলম্বন করেছিলেন। তখন সরকারি ফৌজ যে ধ্বংস-তাণ্ডব ও গণহত্যায় মেতে উঠেছিল, তা মনে করে অনেকে আজো শিউরে ওঠেন। সিরিয়ার মানুষ সাধারণ সুন্নি মুসলিম। আর বাথ পার্টির হাফেজ ও বাশারের মতো নেতারা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি চালিয়ে গেছেন সংখ্যালঘু ও বিকৃত বিশ্বাসী নুসাইরিদের ওপর নির্ভর করে। শিয়াদের থেকে অতীতের উদ্ভূত ও বিচ্ছিন্ন এই সম্প্রদায়ের আরেকটি নাম আলাভি। এদের ধর্মবিশ্বাস বিকৃত ও চরম প্রান্তিক। ইসলাম নিয়ে মারাত্মক বিভ্রান্তির অনুসারী এই জনগোষ্ঠী মুসলমানদের মূল ধারাবহির্ভূত। তারা বিভিন্ন সময়ে উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থ এবং ইসলামের বিরুদ্ধে স্বৈরশাসক কর্তৃক ব্যবহৃত হয়ে নিজেদের পরিণত করেছে গণশত্রুতে। সিরিয়ার ক্ষমতাসীন দল, সরকার, সশস্ত্র বাহিনী, গোয়েন্দা কর্র্র্তৃপক্ষ আলাভি অধ্যুষিত বা নিয়ন্ত্রিত। কারণ, সর্বশীর্ষে অধিষ্ঠিত এবং সর্বময় ক্ষমতাবান বাশার আল আসাদ নিজেই আলাভি সম্প্রদায়ের সদস্য। সর্বশেষ খবর হলো, ১২ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে আপাতত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। তবে কোথাও কোথাও সংঘর্ষ এবং সরকারি বাহিনীর হাতে আরো লোক নিহত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এই অস্ত্র সংবরণ পরিকল্পনাকে অতীব গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। তাই যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ কতটা কার্যকর হচ্ছে এবং কোনো পক্ষ তা ভঙ্গ করছে কি না, এসব ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে সিরিয়া পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির