করোনা মহামারী আমাদের মনে গভীর দাগ কেটে গেছে। এ সময়ে অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন নিয়েও ছিল নানা রকম কথার ছড়াছড়ি। আলোচনার বিষয়বস্তু যাই থাকুক না কেনো আমরা হয়তো ভেবেই দেখিনি কীভাবে এত দ্রুততম সময়ে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলো আর আরটিপিসিআর ব্যবহার করে করোনা ভাইরাসের ইনফেকশন শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অক্সফোর্ড-অস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না, সাইনোফার্ম- এই যে এত ধরনের ভ্যাকসিন মহামারী প্রতিরোধে আবিষ্কার হলো এসবের মূলে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা জীবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল। মানুষ এবং প্রাণীর রোগ প্রতিরোধে সব ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির মূল কারিগর বায়োটেকনোলজি বিষয়ে পড়াশোনা করা একজন গ্র্যাজুয়েট।
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো বহুমুখী প্রায়োগিক বিজ্ঞান। যেখানে বিভিন্ন জীব এবং তাদের অংশবিশেষ ব্যবহার করে সঠিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট বাণিজ্যিক পণ্য তৈরি করা হয়। যেমন সব ধরনের জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফসল এবং খাদ্য, উন্নত জাতের গবাদিপশু এবং ব্রয়লার মুরগি, কোয়েল পাখি, হাইব্রিড মাছ, সবজি ইত্যাদি। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষের অনুমোদন পাওয়া প্রথম জেনেটিক্যালি মডিফায়েড খাদ্য হলো বিটি বেগুন। যেটি একটি ব্যাক্টেরিয়ার রোগপ্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য বেগুনের জেনেটিক রিকম্বিনেশন করে বেগুনকে রোগপ্রতিরোধী ও পতঙ্গপ্রতিরোগী করা হয় এই ব্যবস্থার মাধ্যমে। জিন থেরাপি, অ্যারোমেটিক্স প্রোডাক্টস, কৃত্রিম গ্রাফটস বা চামড়া, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি, টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উন্নত জাতের ফল এবং ফসল, ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতের প্রাণী তৈরি, ট্রানজেনিক অ্যানিমেলস, ট্রানজেনিক ক্রপস, ট্রানজেনিক ফিশ তৈরি এবং এর যথাযথ ব্যবহার এসবই জীব প্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশলের অবদান। এর ব্যবহারিক অনেক দিক রয়েছে। তার মধ্য অন্যতম হলো- জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড ক্রপস ও অ্যানিমেলস, অ্যাগ্রো-কেমিক্যালস, অর্গানিক অ্যাগ্রিকালচার, মেডিসিনস, ভ্যাকসিনস, এনজাইমস, হরমোনস বিভিন্ন অ্যান্টিবডিস প্রোটিন, অর্গানস, মিট, ফিশ, ভেজিটেবলস, বেভারেজ, ডিজিজ রেজিস্ট্যান্স ক্রপস ও অ্যানিমেলস, স্ট্রেস রেজিস্ট্যান্স ক্রপস, সল্ট টলারেন্স ক্রপস, ড্রট বা খরা রেজিস্ট্যান্স ক্রপস, গোল্ডেন রাইস, বিটি-টমেটো তৈরি এবং পরিবেশ দূষণ নিরাময়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ইত্যাদি।
যা পড়ানো হয়
বায়োকেমিস্ট্রি, মলিকুলার বায়োলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ইমিউনোলজি ও জেনেটিকস ইত্যাদি বিষয়ের একটি সমন্বিত রূপ হলো বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং। যেসব বিষয় পড়ানো হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো- অ্যানিমেল সেল কালচার, প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার, ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং, রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ টেকনোলজি, জিন থেরাপি, জেনোম সিকুয়েন্সিং, ডেভেলপমেন্ট বায়োলজি, স্টেম সেল থেরাপি, ক্যান্সার বায়োলজি, রিজেনারেটিভ মেডিসিন, ন্যানোটেকনোলজি, ড্রাগ ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। এ ছাড়া পিসিআর, আরটিপিসিআর, এনএমআর, স্পেকট্রসকপি, মাইক্রোঅ্যারে, ফ্লো সাইটোমেট্রির মতো বিশেষায়িত প্রযুক্তি সম্পর্কেও পড়ানো হয়।
চাকরির বাজার
দেশের স্বনামধন্য ভ্যাকসিন কোম্পানির গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন ড. মইনুল ইসলাম। ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষ করে চার বছর পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে ইংল্যান্ডেই গবেষণা করেন। এর আগে স্নাতক সম্পন্ন করেন দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০১১ সালে দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে হিউম্যান ভ্যাকসিন গবেষণা শুরু করেন। তিনি জানান, তার গবেষণা দল নতুন নতুন ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তাদের গবেষক দলের তৈরি মেনিঞ্জোকক্কাল ভ্যাকসিন, রিকম্বিন্যান্ট হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন, ওরাল কলেরা ভ্যাকসিন, জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন ও টাইফয়েড প্রতিরোধী ভ্যাকসিন- এ পাঁচটি ভ্যাকসিন সফল ট্রায়াল সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়েছে।
বর্তমানে ফার্মাসিউটিক্যাল ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ, সরকারি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ প্রাইভেট, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এবং এনজিওতে গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বায়োটেকনোলজি ডিভিশন রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষা গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটসহ বেশকিছু প্রাইভেট ও ফুড ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিতে গবেষণা কাজ চলছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সরকারি- বেসরকারি ও দেশী-বিদেশী দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় গবেষণাকাজ পরিচালিত হচ্ছে।
কোথায় পড়বেন
দেশে প্রথমবারের মতো ১৯৯৫ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) বায়োটেকনোলজি বিষয়ে চার বছরের ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন বায়োটেকনোলজি প্রোগ্রাম চালু হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন চালুর সিদ্ধান্ত নিলে ২০০৩ সালে ডিসিপ্লিনের নাম পরিবর্তন করে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামকরণ করা হয়। দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকে একসঙ্গে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি নামে পড়ানো হয়। অবশ্য বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামেও এ বিভাগ রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে অবশ্যই বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করতে হবে। তবে এ বিষয়ে পড়তে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পর্যায়ে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ সহ মোট জিপিএ ৭.৫০-৮.০০ প্রয়োজন হতে পারে। একাধিক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক, এক বছরের স্নাতকোত্তর, দুই বছরের মাস্টার অব ফিলোসফি (এমফিল) এবং তিন বছরের ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি রয়েছে গবেষণার অনেক সুযোগ।
দেশে ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষিগুচ্ছভুক্ত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর নেওয়া যাবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পড়তে পারবেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষায় বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়
ইউএস নিউজ এবং দ্য ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৪ এর তথ্যমতে বায়োটেকনোলজিতে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (ক্যামব্রিজ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র); ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি, ক্যামব্রিজ, ইউএস); স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (স্ট্যানফোর্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র); ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান দিয়েগো (ইউসিএসডি); ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (ক্যামব্রিজ, যুক্তরাজ্য); ইউনিভার্সিটি অফ চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেস; সিএএস (বেইজিং, চীন); জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি (বাল্টিমোর, ইউএস); ডেনমার্ক টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি (কনজেনস লিংবি, ডেনমার্ক); ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে (ইফসিবি, বার্কলে, ইউএস); কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ফ্রান্সিসকো (সান ফ্রান্সিসকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র); হারবিন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, সাংহাই জিয়াও টং বিশ্ববিদ্যালয়, পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (ফিলাডেলফিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র); ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় (হ্যাংজু, চীন); ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন, সিয়াটেল (সিয়াটেল, ইউএস); সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেইজিং, চীন); কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় (ইথাকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র); অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য); টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় (টরন্টো, কানাডা)।
উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ সুবিধা
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, সুইডেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়া যায়। জাপান সরকারের মনবুকাগাকুশো, চীনা সরকারের চাইনিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ, ব্রিটেনের কমনওয়েলথ, জার্মানির ডিএএডি, বেলজিয়ামের ভিলারওস স্কলারশিপ, ইউরোপীয় দেশগুলোর ইরাসমুস মুন্ডুস স্কলারশিপ, সুইডেনের সুইডিস ইনস্টিটিউট স্টাডি স্কলারশিপ লুফে নিতে পারেন। এসব বৃত্তির মাধ্যমে টিউশন ফি ছাড়াই সেখানে পড়ালেখা ও গবেষণা করা যায়।
লেখক : সাংবাদিক ও গবেষক
আপনার মন্তব্য লিখুন