লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বালাকোট থেকে বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা
১০ এপ্রিল ২০১১
মুহাম্মদ ওমর ফারুক
ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলাসহ সমগ্র ভারতবর্ষব্যাপী এক সুসংগঠিত স্বাধীনতা আন্দোলন ভারতীয় মুসলমানদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। এ আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন সাইয়েদ আহমদ শহীদ। আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভারতে একটি অখণ্ড ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। সুনিপুণ কর্মসূচি ও ঈমানী চেতনায় উদ্ভাসিত হয়ে এ আন্দোলনের কর্মসূচি পরিচালিত হলেও কতিপয় লোকের চরম বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তা চূড়ান্ত লক্ষ্যে উপনীত হতে পারেনি।
ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত অবিভক্ত ভারতে শাহ ওয়ালিউল্লাহ মোহাদ্দেস দেহলভীর চিন্তা চেতনায় যে ইসলামী রেনেসাঁর সৃষ্টি হয়েছিল, তার ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্নসমূহের মধ্যে বালাকোটের ঘটনা অনন্য গুরুত্বের দাবিদার। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বীর সেনানী সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রায় বেরলভী) (১৭৮৬-১৮৩১), শিখ ও ইংরেজদের অধীনতাপাশ কাটিয়ে এবং তাদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে স্বাধীন সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তিনি সাইয়েদ আহমদ বেরলভী নামেও সমধিক পরিচিত। তরিকতে মুহাম্মদী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি মুসলমানদের কাছে আমিরুল মোমেনীন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তৎকালীন ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে শুরু করে মর্দান পর্যন্ত এ বিশাল অঞ্চলে তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ইসলামী শাসনব্যবস্থা চালু করেন। মাওলানা সাইয়েদ মাজহার আলীকে প্রধান বিচারপতি, সুলতান মুহাম্মদকে গভর্নর জেনারেল, শাহ ইসমাইল মুহাদ্দিস দেহলভীকে প্রধান সেনাপতি নির্বাচিত করে তার এ ইসলামী রাষ্ট্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
চরম মুসলিমবিদ্বেষী শিখ ও ইংরেজ সরকার মুসলমানদের এ প্রচেষ্টায় ভীত হয়। তারা ছলেবলে কলা-কৌশলে উদীয়মান নবগঠিত এ মুসলিম প্রজাতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আর এ জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে সীমান্তবর্তী কিছু বিশ্বাসঘাতকের সহায়তায় ১৮৩১ সালের ৬ মে ঐতিহাসিক বালাকোটের ময়দানে ইংরেজ সমর্থনপুষ্ট শিখদের বিশাল বাহিনী তাদের ষড়যন্ত্র সফল করে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এপ্রচেষ্টা সাময়িকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলেও এ ঘটনাটি ইতিহাসে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখে যেতে সমর্থ হয়েছে।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ১২০১ হিজরির ৬ সফর মতান্তর ১৭৮৬ সালে এলাহাবাদের রায়বেরলভীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন ১৭-১৮ বছর তখন পিতা আলমুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। ১৮০৪ সালের দিকে বিদ্যার্জনের জন্য তিনি দিল্লিতে শাহ আব্দুল আজিজ মোহাদ্দেস দেহলভীর নিকট গমন করেন। ১৮১৮ সালের দিকে তিনি পুনরায় দিল্লিতে আসেন। জীবনের এ সময়ে তিনি প্রায় ২ বছরকাল রোহিলাখণ্ড, আগ্রা, অযোধ্যার মিরাট, মুজাফ্ফার নগর, মুরাদাবাদ, রামপুর, সাহারানপুর, লক্ষেèৗ, কানপুর ও বেনারসে অনেক মাহফিলে ধর্মীয় সংস্কার ও ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি আধ্যাত্মিক শিক্ষায় এত বেশি যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন যে, তৎকালীন বিখ্যাত উলামাগণ তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে মাওলানা ইমামুদ্দিন বাঙালি, মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হাই, মাওলানা বেলায়াত আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া আলী, বিপ্লবী আহমাদউল্লাহ এবং সুফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরীর মত ব্যক্তিরা তার আধ্যাত্মিক ও জিহাদী কর্মের সমর্থক ও অনুসারী ছিলেন।
তার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের শিরক ও বিদআত মুক্ত করা, তৌহিদের মর্মবাণীর দিকে ফিরিয়ে নেয়া এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার পরিপূর্ণতা সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। সুফি তরিকা বা আধ্যাত্মিকতার প্রভাব তার আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
১৮২১ সালের দিকে প্রায় ৪০০ ভক্তসহকারে তিনি হজ পালনের জন্য মক্কায় গমন করেন। হজ থেকে ফিরে এসে তিনি দু’ভাবে তার সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন।
প্রথমত, সমাজ থেকে সকল কুসংস্কার ও যাবতীয় জুলুম নির্যাতন এবং অনৈসলামিক কার্যকলাপ দূর করে মুসলমানদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন উন্নত করা।
দ্বিতীয়ত, ইংরেজ বেনিয়াদের ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করা।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ভারতের প্রধান প্রধান শহরে তার প্রতিনিধি বা খলিফা নিযুক্ত করেন। পাটনাকে কেন্দ্র করে এ আন্দোলনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ভারতের সর্বত্র জিহাদের প্রচারণা ও প্রস্তুতি শেষে তিনি জন্মভূমি রায়বেরলভী ত্যাগ করে কান্দাহার হয়ে নওশেরায় পৌঁছেন। মুসলমানদের ওপর নির্যাতনকারী শিখদের ইসলাম গ্রহণ নতুবা বশ্যতা স্বীকার বা যুদ্ধের আমন্ত্রণ জানান। শিখরা যুদ্ধ করতে সম্মত হয়। মুসলমানরা এ যুদ্ধে জয়লাভ করে। ১৮২৪ সালের দিকে শিখদের আক্রমণে যখন মুসলমানদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ তখন তিনি ১৮২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি হিজরতের জন্য রায়বেরলভী থেকে কাপলী, গোয়ালিয়র, ঠংকু, আজমীর, পালী, অসরকোট, হায়দরাবাদ, পীরকোট, মাজদাহী, শিকারপুর, বুলান, কোয়েটা, কান্দাহার, গজনী, কাবুল এবং জালালাবাদ হয়ে পেশোয়ারে পৌঁছান। পথিমধ্যে সাধারণ মুসলমানরা ছাড়াও তিনি ভাওয়ালপুর, বেলুচিস্তান, কান্দাহার ও কাবুলের শাসকদের জেহাদের জন্য আহ্বান জানান। পেশোয়ারবাসীরা শিখদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুুুরু করার জন্য তাকে অনুরোধ করে। স্থানীয় প্রায় লক্ষাধিক লোক তার বাহিনীতে যোগ দেয়। কিন্তু সীমান্তের সর্দাররা ছিল অর্থলোভী ও চরম স্বার্থপর। অর্থের প্রলোভনে উপজাতীয় মুসলিমরা শিখদের পক্ষাবলম্বন করলে মুসলিম মুজাহিদ বাহিনী বিপর্যস্ত হয়। প্রায় ৭০০ জন মুজাহিদ নিয়ে ১০,০০০ মতান্তরে ২০,০০০ শিখ বাহিনীর মোকাবেলা করেছিল মুসলিমরা।
বালাকোটের যুদ্ধে শহীদ মুজাহিদদের সংখ্যা প্রায় ৩০০। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের ৯ জন শীর্ষস্থানীয় মুজাহিদও ছিলেন। মাওলানা ইমামুদ্দিন বাঙালিসহ প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশী মুজাহিদ আহত হয়েছিলেন যাদের সকলে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। অন্যদিকে প্রায় ১০০০ শিখ নিহত হয়েছিল। শিখরা যুদ্ধশেষে বালাকোটের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে সেখানে তাদের নিহত শিখ সৈন্যদের দাহ করে। শিখদের অগ্নিসংযোগে মুসলমানদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতিও সাধিত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সাইয়েদ আহমাদ শহীদ ও ইসমাঈল শহীদের (রহ) প্রায় সকল রচনাবলি ভস্মীভূত হয়।
উপমহাদেশের অন্য সকল স্থানের চেয়ে বালাকোট স্থানটি এ কারণে সর্বাধিক গুরুত্বের অধিকারী হয়ে রয়েছে যে, স্বাধীনতা আন্দোলন তথা ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষার পুনঃ প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের ইতিহাসে তা বিশেষ মর্যাদার আসন লাভ করেছে।
বালাকোটের শিক্ষা
৩৪০ ৩৩” উত্তর দ্রাঘিমাংশ এবং ৭৩০২১” পূর্ব অক্ষাংশের খাইবার-পাখতুনখায় অবস্থিত মেনশেহরা শহরের ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি শহরের নাম বালাকোট। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং খাইবার-পাখতুনখায়ার কাগান উপত্যকার প্রবেশদ্বারও বটে। লুলুসার হ্রদ থেকে উৎপন্ন কুনহার নদীটি এ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরের মুজাফ্ফারাবাদের ঝিলাম নদীতে গিয়ে মিশেছে। মূল যুদ্ধ ক্ষেত্রটি বালাকোট শহর বা জনপদ থেকে সাতবানে ঝরনার পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত, যেখান থেকে মেট্টিকোট ঝরণা ও মেট্টিকোট টিলার পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
আলোচ্য লেখার শিরোনাম ‘বালাকোট থেকে বাংলাদেশ’ দেখে অনেকে আশ্চর্যান্বিত হতে পারেন। তবে মূল শব্দ দুটোর মাঝে যে একটা বিশেষ মিল রয়েছে তা অস্বীকার করার কোন জো নেই। চেতনা আর লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দিক থেকে বালাকোটের মুসলমানরা যে বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছিল, বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের মুসলমানরা আজো ইসলামবিরোধী শাসক ও মুসলিমবিদ্বেষী অমুসলিমদের নিকট থেকে তেমনি বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছে। আজ মুসলমানরা কাশ্মীরে ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের, ইরাক ও আফগানে ইঙ্গ-মার্কিন খ্রিষ্টানদের, ফিলিস্তিনে জায়নবাদী ইহুদিদের, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সমাজতন্ত্রী বৌদ্ধদের আক্রমণের শিকার। মুসলিম দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দোসরদের অব্যাহত ষড়যন্ত্র ইসলাম ও মুসলিমদের জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে প্রতিনিয়ত। বালাকোটের ময়দানে মুসলমানরা পরাজিত হওয়ার আগে যে রকম পরিকল্পিত আন্দোলন ও ঈমানী চেতনায় আন্দোলিত হয়েছিল আজ বিশ্বব্যাপী তেমন পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মুসলমানদের বিশেষ করে আলেমদের প্রচেষ্টা প্রণিধানযোগ্য। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে মুসলমানদের যে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শিত হয়, তা বালাকোট আন্দোলনেরই অংশ। ১৯৪৭ সালে মুসলমানদের জন্য আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা তথা পাকিস্তান এবং তারই পথ ধরে পরবর্তীতে বাংলাদেশ সৃষ্টি, তার সবটাই বালাকোটের সুদূরপ্রসারী শিক্ষা। মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার পশ্চাতে বালাকোটের আন্দোলনই ছিল সূচনাপর্ব। ঊনবিংশ শতকে এদেশে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ইংরেজ বেনিয়াদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা মুসলমানরাই প্রথম শুরু করেছিল। আর সে জন্যই ইংরেজদের আক্রোশ ও আক্রমণের শিকার হয়েছিল মুসলমানরা। মুসলমানদের শাসন ক্ষমতা, জমিদারি ও ওয়াকফ সম্পত্তি বাতিল করে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে অমুসলিমদের ক্ষমতায়ন আর ফারসি ভাষার পরিবর্তে ইংরেজিকে রাষ্ট্র ভাষা করে মুসলিমদের চাকরিচ্যুত করার যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়।
বালাকোটের ইসলামী আন্দোলন ভারতীয় উপমহাদেশের সকল সংগ্রামের জন্য অনুকরণীয় হলেও এর সাময়িক ব্যর্থতার পেছনে ইসলামবিরোধী শক্তির ঐক্যের গভীর মিল রয়েছে। আজকের মুসলিম বিশ্বে ইসলামী রেনেসাঁ ও ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রধান শত্র“ হচ্ছে স্বজাতীয় একশ্রেণীর স্বার্থপর, বিশ্বাসঘাতক বা বিভ্রান্ত গাদ্দার। তারা ইসলামী আন্দোলনের পদে পদে যে অন্তরায় সৃষ্টি করছে, বাইরের শত্র“রা তা আদৌ করতে পারে না।
অমুসলিম বা বাইরের শত্র“রা তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে থাকে সাধারণত এসব মুসলিম নামধারী বিশ্বাসঘাতকের কাঁধে ভর করে। সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ)ও তার ইসলামী আন্দোলনে স্বজাতীয় শত্র“দের দ্বারাই বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। ১৮৩১ সালের পর ১৭৯ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সে সময়কার শিখ ও ইংরেজ আশীর্বাদপুষ্ট জমিদার শ্রেণীর নির্যাতনের মতই আজকের মুসলিম উম্মাহর অবস্থা আরো বেশি সঙ্কটাপন্ন। বিশ্বব্যাপী মুসলিম মিল্লাতের এ করুণ দশা থেকে মুক্তি পেতে আমরা সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারি।
সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) ইচ্ছা করলে মসজিদ, মাদ্রাসা ও খানকার মধ্যে ইসলাম প্রচারে কাজ সীমাবদ্ধ রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে মহানবী (সা) এর জীবনাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের সাহায্য করেছেন। এমনকি ঈমান আকিদা রক্ষার্থে হিজরত পর্যন্ত করেছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে জানমালের মায়া ত্যাগ করে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর চরম দুশমন আল্লাহদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বালাকোটের ময়দানে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেছেন। বর্তমান মুসলিম মিল্লাতের দুর্দিনে যারা ইসলামের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে চান, যারা ইসলামী জ্ঞানের ধারক ও বাহক আলেম সম্প্রদায়, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সর্বোপরি যারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন তাদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে বালাকোটের সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর জীবন থেকে প্রকৃত ইসলামের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা। তবেই মুসলিম জাতির শ্রেষ্ঠত্ব বিশ্বের বুকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ) এর আলোকিত জীবন হোক প্রাচুর্যের মিথ্যা মরীচিকায় ধোঁকা খাওয়া মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও অনুসারীদের জেগে ওঠার দুর্বার প্রেরণা।
আপনার মন্তব্য লিখুন