বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সকলকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শহীদ হিসেবে কবুল করুন। আমীন
সকলের প্রত্যাশা ছিল- আমাদের মেধাবী সন্তান আগামীদিনের দেশ গড়ার দক্ষ কারিগরদের স্বপ্ন পূরণ হবে। তাদের দাবি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই পূরণ হবে। কিন্তু না কোনো অনির্বাচিত ডামি সরকারের কাছে এমন প্রত্যাশা করা অরণ্যে রোদন ছাড়া কিছু নয়। তাই তো আজ নতুন করে লিখতে হচ্ছে আমাদের বীর সন্তান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী মুখ আবু সাঈদ, ভবিষ্যত পৃথিবীর উজ্জ্বল বিজ্ঞানী গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মেধাবী ছাত্র জাহিদুজ্জামান, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের রুদ্র সেন, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আসিফ, ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী ইয়ামিন, রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র ফারহান, নরসিংদীর হাসি মুখের কিশোর তাহমিন ভূঁইয়া, মো. ইমন মিয়া, মাদারীপুরের দীপ্ত দেসহ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খোঁজ মেলা প্রায় তিনশত শহীদসহ অসংখ্য নাম না জানা নক্ষত্রের মহাকাব্য।
স্বৈরাচারের গোলামীতে দলান্ধ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঘাতক বুলেট কেড়ে নিয়েছে ঢাকা টাইমস এর সাংবাদিক হাসান মেহেদী, দ্য রিপোর্টের ফটো সাংবাদিক তাহির জামানসহ (মায়ের স্নেহবঞ্চিত ছোট্ট শিশুকন্যা সাদিরা জামানের ‘পিও’ বাবা) অসংখ্য শিশু হারিয়েছে তাদের বাবাকে। ছোট্ট শিশুপুত্র আবদুল আহাদ, শিশুকন্যা দিয়া গোপের মা-বাবার মতো অসংখ্য পিতা-মাতা হারিয়েছেন তাদের আদরের সন্তানদেরকে। নিজের ঘরে বাবা-মায়ের কোলেও তারা পাইনি নিরাপদ আশ্রয়। হেলিকপ্টার থেকে বাড়ির ছাদ, রাস্তা থেকে ঘরের জানালা লক্ষ্য করে ছুঁড়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক শ্রেণির দলকানা সদস্য ও সরকারের পেটুয়া ক্যাডাররা। সংবিধানের সীমা এবং শপথ বাক্য ভুলে তারা অনির্বাচিত সরকারের আদেশ পালন করতে গিয়ে নিজ দেশের এমন কি কোথাও নিজের সন্তানের বুকেও গুলী চালিয়েছে, হত্যা করেছে অসংখ্য বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার দাবিতে সোচ্চার প্রতিবাদী মেধাবী তরুণ তাজা প্রাণ। অথচ আলোচনার টেবিলে সংলাপে নয়তো সর্বদলীয় অধিবেশন ডেকে জাতীয় সংসদেই সমাধান হওয়ার মতো বিষয় ছিল এটি। একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের এমন রক্তাক্ত পরিণতি ঘটলো বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলকারী সরকারের দম্ভ অহংকার আর ভয়ের কারণে। কারণ ভেবেই নিয়েছিল প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে বৈষম্য মুক্তির দাবি মেনে নিলে বিনা ভোটের সরকারের পদত্যাগের দাবি উঠবে।
সেই ভয়ে ভীত হয়ে তারা দেশের নিরীহ নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান শুরু করেছে। গত ১৬ জুলাই থেকে যা চলছে তা কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে চলতে পারে না। এ কথা প্রতিটি সচেতন মানুষের। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর দায়িত্ব জনগণের জান-মালের হেফাজতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের সংবিধানসম্মত আদেশ পালন করা। কোনো ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত প্রতিবাদী জনতাকে হত্যা বা তাদের বিক্ষোভে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক ছড়ানো নয়। বরং কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যেন প্রতিবাদীদের ওপর হামলা করতে না পারে সেই দায়িত্ব পালন করা। কিন্ত দেশবাসী কী দেখলো, সন্ত্রাসীদের সাথে একসাথে নিরস্ত্র শিশু-কিশোর, তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়া বলছে, যা হয়েছে তা রীতিমতো গণহত্যা। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ও হল থেকে বের করতে যখন সরকারের পেটুয়া বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে, তখন তারা রণসজ্জায় সেখানে প্রবেশ করেছে। এমনভাবে সাজোয়া যান নিয়ে ঢুকেছে যেন কোনো ভিনদেশি শত্রুশিবিরে অপারেশন চালানো হচ্ছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিতে দলীয় ক্যাডার বাহিনীদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও বিরোধীদলের বিরুদ্ধে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ এনে জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এত কিছুর দরকার ছিল না। সরকার আন্তরিক হলে বিনা রক্তপাতেই সমস্যার সমাধান সম্ভব ছিল।
রিট আমল অযোগ্য, মামলার রক্তাক্ত পরিণতি; দায় কার?
বিশ্লেষকরা মনে করেন, অনির্বাচিত এ সরকার দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাদের আর ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। যে ইস্যু নিয়ে এত রক্তক্ষয় হলো এত মায়ের বুক খালি হলো আইনজীবীরা মনে করেন, এই মামলার রিট আমলে নেওয়ার মতোই ছিল না। এ আমলার রিট গ্রহণ করে কারা দেশকে অস্থিতিশীল করেছেন। কারা নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিধান বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন, আশা করি ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। কারণ উনারা ‘খোদার আসন আরশ ছেদিয়া’ এত ওপরে ওঠা ব্যক্তিবর্গ যে, উনাদের সমালোচনা করলে নির্ঘাত দাজ্জালের গড়া দোজখে প্রবেশের মতো অপরাধ হবে।
তবে এ প্রসঙ্গে আইনজীবীদের অনেকে অনেক কথাই বলেছেন। তার মধ্য থেকে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়ির আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর একজন। তিনি আওয়ামী ঘরানার আইনজীবী যিনি সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের কন্যা। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের মতামতের কলামে বলেছেন, ‘যেহেতু রিটকারী ব্যক্তিরা সংক্ষুব্ধ নন অথবা জনস্বার্থে মামলা করেননি, তাই রিটকারীদের মামলা আমলযোগ্য নয়। সেই বিবেচনাতেই আপিল খারিজ হওয়ার যোগ্য ছিল।’ তিনি আরো লিখেছেন, মুক্তিযোদ্ধা নাতি-পুতিদের ক্ষেত্রে যে কোটার বিষয়টি ছিল তা স্বপ্লমেয়াদি নয়, বংশপরম্পরায় চলার কথা। আমাদের সংবিধানের যে জনগণতান্ত্রিক (রিপাবলিকান) চরিত্র, এটি তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রাজতন্ত্রের মতো বংশপরম্পরা জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে হয় না। এটি আমদের রাষ্ট্রের চরিত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যারা মামলা করেছিল, অর্থাৎ ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্ম’ সংগঠন, তারা অনিবন্ধিত। তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে মামলা করেছিল। মামলা করার (লোকাস স্ট্যান্ডাই) ভিত্তি ছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের সন্তান ও প্রজন্ম প্রতিনিধিস্বরূপ (রিপ্রেজেনটিটিভ ক্যাপাসিটি)। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের ক্ষমতাবলে কোনো প্রতিনিধিত্বশীল (ক্লাস অ্যাকশন) মামলা করা যায় না। যিনি সংক্ষুদ্ধ তিনি সরাসরি অথবা সমষ্টিগতভাবে সংক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে রিট মামলা দায়ের করতে পারেন। তাই প্রশ্ন জাগে, বর্তমান রিটকারীরা প্রতিনিধিত্বের ক্ষমতাবলে কাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন? ভবিষ্যৎ বংশধরদের, যাদের এখনো জন্ম হয়নি (আনবর্নড চিলড্রেন)।’ তিনি আরো যুক্তি দিয়েছেন, কোটার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন এখনো হয়নি। এটি কেবল সরকারের নীতির মাধ্যমে নির্ধারিত বিষয় হচ্ছে। আইনের জগতে এটি প্রতিষ্ঠিত যে সরকারের নীতির বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। তাই হাইকোর্টের রায়টি বাতিল হওয়ার যোগ্য।’
আমাদের প্রত্যাশা
অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন শোষণের বিরুদ্ধে দেশের তরুণরা জেগে উঠলে নিপীড়িত জনতার মনে আশার আলো জ্বলে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে গত ১ জুলাই চাকরিতে কোটার বাঁধে মেধাবী তরুণদের বঞ্চিত করার বাঁধ ভাঙার আন্দোলনের ডাক এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকারে ঐক্যবদ্ধ তারুণ্যের সেই জোয়ার বাঁধ ভেঙে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। এ নিবন্ধ যেদিন প্রকাশিত হবে তার আগেই আন্দোলনের সাফল্য ঘরে আসবে- এমন প্রত্যাশা নিয়েই এ লেখা।
প্রত্যাশা পূরণের পরও হয়তো কিছু প্রশ্ন থেকেই যাবে। সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে যারা এতদিন চাকরিতে কোটা সুবিধা পেয়েছেন তাদের মধ্যে কিছু প্রশ্ন এবং না পাওয়ার বেদনাও মাথাচাড়া দেবে, যদিও সে সংখ্যা খুবই নগণ্য। তবুও ন্যায্যতার যুক্তি মেনে তারা যেন সান্ত¡না ও শান্তি পায় তেমন কিছু বিষয় এ নিবন্ধে তুলে ধরা হলো।
কেন আবার শিক্ষার্থীরা রাজপথে?
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চাপে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির সব ধরনের কোটা বাতিল করেছিল।
এর আগে সব গ্রেডের চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি কোটা পাঁচ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ কোটা ছিল। ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোটা বাতিল করলেও অন্যান্য গ্রেডের চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বহাল ছিল। ২০১৮ সালে এই প্রজ্ঞাপনের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ বাতিল চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ২০১৮ সালের সরকারের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়।
শিক্ষার্থীরা এ রায়কে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বৈষম্যমুলক আখ্যা দিয়ে রায় প্রত্যাখ্যান করে ১ জুলাই থেকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে। প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা প্রথমে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা মন্তব্য করেন, ‘আদালতের রায়, আন্দোলন করে বদলানো যায় না।’ প্রধান বিচারপতির মুখেও এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়। সরকার পক্ষ থেকে বলা হয় বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কথা সাবজুডিস। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন,‘মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সময় যখন শাহবাগে দিনের পর দিন রাস্তা বন্ধ করে, ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই’ স্লোগান তোলা হয়েছে সেখানে মন্ত্রীরা গিয়ে যখন সংহতি প্রকাশ করেছেন, তখন তাদের মনে ছিল না বিষয়টি সাবজুডিস। আন্দোলন করে শুধু রায় নয়, নতুন আইন করে তারপর রায় দিয়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে, একথা কী তারা ভুলে গেছেন? এমন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি কখনো কাম্য নয়।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এদেশের তরুণরা সব সময় সরব ছিল বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছে, আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকলে দেশ স্বাধীন হতো না।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার আদালতকে ব্যবহার করে এ জাতির ঘাড়ে অনেক কিছুই চাপিয়ে দিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করতে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছে। সেই দুঃসাহসের কারণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২০১৮ সালে জারি করা চাকরির কোটা বাতিল করার প্রজ্ঞাপন বাতিল করেছে। সরকারের অবস্থা দেখে মনে হয়, তারা এ জাতির ইতিহাস ভুলে গেছে, নয়তো নতুন প্রজন্মকে ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু এদেশের তরুণরা ইতিহাস সন্ধানী, তারা আত্মবিস্মৃত নন। তারা বিশ^াস করেন, শোষণ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ জাতি কোনো দিন পরাজিত হয়নি। তারা ভুলে যায়নি ১৯৭০ এর ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন কীভাবে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে রূপ নিয়েছিল। দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, চাকরিতে কোটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধান বিরোধী।
কী বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বিশ্লেষণ করলে কারো বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় মুক্তিযুদ্ধ ছিল অধিকারহারা সামাজিক ন্যায়বিচার বঞ্চিত গণতন্ত্রমনা এক দল মানুষের মাথা উঁচু করে বাঁচার লড়াই। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এই সংগ্রাম শুরু হয়, ১৯৬৯-এ স্বাধিকারের দাবি ১৯৭০-এ ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সেই সংগ্রাম শেষ হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভের মাধ্যমে। অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২৬ মার্চ ১৯৭১, এ দিনেই এসেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক; চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে।
সাড়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরুর পরপরই ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে : ‘... এবং যেহেতু... আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করিয়া পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের কর্তব্য- সেহেতু আমরা বাংলাদেশকে রূপায়িত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিতেছি এবং উহা দ্বারা পূর্বাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করিতেছি...’ (দ্রষ্টব্য : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, তথ্য মন্ত্রণালয়, ১৯৮২, তৃতীয় খণ্ড, স্বাধীনতার লক্ষ্য)। ঘোষণাপত্রে তিনটি বিষয়কে স্বাধীনতার লক্ষ্য বলে উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে ১. সাম্য ২. মানবিক মর্যাদা ও ৩. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এই তিনটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য। এগুলো প্রতিষ্ঠার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল।
১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের নবগঠিত প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এক বেতার ভাষণে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের নিরন্ন দুঃখী মানুষের জন্য রচিত হোক এক নতুন পৃথিবী যেখানে মানুষ মানুষকে শোষণ করবে না। আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক ক্ষুধা, রোগ, বেকারত্ব আর অজ্ঞানতা থেকে মুক্তি। গড়ে উঠুক নতুন গণশক্তিকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থা, গণ-মানুষের কল্যাণে সাম্য আর সুবিচারের ভিত্তি প্রস্তরে লেখা হোক জয় বাংলা, জয় বাংলাদেশ’ (ঐ, পৃ. ৮)। প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভাষণেও সাম্য, ন্যায় বিচার আর শোষণ মুক্তিকে স্বাধীনতার উদ্দেশ্য বলে উল্লেখিত হয়েছে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের অভিমত
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক ও আইনজীবীদের মতামত বিভিন্ন মিডিয়ায় তুলে ধরা হচ্ছে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই। তার আলোকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারাও মনে করেন সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের জোরালো বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমি ৩০-৩৫ বছর ধরে সাংবিধানিক আইন পড়াই। আমি সাংবিধানিক আইনের ওপর বিনয়ের সঙ্গে বলি, এই কোটা কোনোভাবেই মুক্তিযোদ্ধার চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না। কোনোভাবেই কমনসেন্সে যায় না এটা। পৃথিবীর কোনো দেশে এই সিস্টেম নাই। অনেকে হয়তো বলে পৃথিবীর কোন দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে? হ্যাঁ হয়েছে ইন্দোনেশিয়াতে, ভিয়েতনামে, মেক্সিকোতে, আমেরিকাতে, জিম্বাবুয়েতে হয়েছে, আপনি একটা উদাহরণ দেখান যেখানে চিরস্থায়ীভাবে মুক্তিযোদ্ধার কোটা করে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়গুলো ভালোভাবে রিসার্চ করে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস যদি আপিলেট ডিভিশনে দাঁড়ান তাহলে এটা আপিলেট ডিভিশনের টেকার কোনো কারণ দেখি না।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের কোথাও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটার ব্যবস্থার কথা বলা হয়নি। তাদের সবিনয় বলতে চাই মুক্তিযোদ্ধাদের অবশ্যই অবদান আছে, অনেক বড় অবদান আছে। তাদের প্রতি আমরা সারা জীবন কৃতজ্ঞ। তাদের জন্য সরকার বিভিন্ন পদবি করেছে; বীরশ্রেষ্ঠ, বীরবিক্রম, বীরপ্রতীক। তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা আছে, তাদের জন্য বিশেষ সম্মান, বিভিন্ন সুবিধার কথা আছে। এই সুবিধা দেওয়ার কথাই আমাদের সংবিধানের আর্টিকেল ১৫-তে বলা হয়েছে। এটাকে বলে সামাজিক নিরাপত্তা। সামাজিক নিরাপত্তা মানে হচ্ছে যারা আর্থিকভাবে দুরবস্থায় আছে তাদের জন্য রাষ্ট্র অর্থের সংস্থান করবে। যেটা মুক্তিযুদ্ধ ভাতা হয়েছে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের কোথাও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটার ব্যবস্থার কথা বলা হয়নি। চাকরি সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিধান আমাদের সংবিধানে আর্টিকেল ২৯-এ আছে। সেখানে বলা হয়েছে, চাকরি সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে সবার সুযোগের অধিকার সমান। শুধুমাত্র নারী, শিশু এবং সমাজে যারা অনগ্রসর শ্রেণি আছে তাদের জন্য রাষ্ট্র বিশেষ ব্যবস্থা করতে পারবে। এটা বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেছন, ‘তবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বঙ্গবন্ধু একটি কোটার ব্যবস্থা করেছিলেন এটা সত্যি। এটা ১৯৭৩ সালে উনি করেছিলেন ১৯৭২ সালের একটি আইন দ্বারা। তবে ওই আইনটিতেই বলা আছে, এটি অস্থায়ী আইন। এটা অস্থায়ী ওই সময়ের জন্য করেছেন যারা জাস্ট যুদ্ধ করে এসেছেন। মুক্তিযোদ্ধার ছেলেরা কী মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিরা কী মুক্তিযুদ্ধ করেছে? তাহলে সংসদ সদস্যের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখেন। মন্ত্রীদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখেন। সামরিক বাহিনীর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখেন। একুশে পদকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখেন। সবই রাখেন। শুধু সরকারি চাকরিতে কেন?
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের আমলে ৬২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অরজিনিয়াল যে তালিকা ছিল সেটাকে এই সরকারের আমলে বাড়িয়ে তিনগুণ করা হয়েছে। এটা একটি দুর্নীতিবান্ধব ব্যবস্থা। সংবিধানবিরোধী ব্যবস্থা। এটা একটি চরম বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা। সেটার বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করবে না? তাদের সারা জীবনের যে চাকরির অধিকার, জীবনে যে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অধিকার সেটাকে আপনি নিয়ে নেবেন আর তারা সেটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে না? ’
এ বৈষম্য সরকারের দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে দূর করা দরকার বলে মনে করেন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেছেন, ‘‘সরকার দ্রুতই তা করতে পারে। আদালতের আদেশ মেনে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে আবার তা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। সময় নষ্ট না করে আপিল প্রত্যাহার করে সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা করতে পারে।”
ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক মনে করেন, ‘আমার মনে হয়, আন্দোলনকারীরা সরকারকে আস্থায় নিতে পারছে না। সেজন্য আইনের কথা বলছে। আসলে ভুলটি সরকারই করেছে ২০১৮ সালে। তারা সব কোটা বাতিল করে ঠিক করেনি। সব কোটা বাতিল করায় এই সমস্যা হয়েছে, সংক্ষুব্ধরা আদালতে গেছেন। সরকার চাইলে কোটার সংস্কার এখন করতে পারে। সরকার এই পরিবর্তনের উদ্যোগ নিলে কোনো বাধা নেই। কিন্তু সেটা যেন আদালতের রায়ের স্পিরিটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। কিন্তু সরকার কোটা বাতিল করতে পারবে না। কমাতে-বাড়াতে পারে। আবার ধরুন, হিজড়াদের জন্য নতুন কোটা করতে পারে, এতে কোনো সমস্যা হবে না। তবে এরজন্য সংসদে আইন পাশের কোনো দরকার নেই। কারণ, কোটার বিষয়টি সংবিধানে অলরেডি আছে।’
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘‘হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে এবং আপিল বিভাগ যে স্থিতি অবস্থা দিয়েছে সেটা সরকারের স্বাধীন সিদ্ধান্তে কোনো বাধা হতে পারে না। সরকার কোটা রাখবে কী রাখবে না এটা সরকারের একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত। একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সরকার যদি মনে করে ২০১৮ সালে তারা আন্দোলনের চাপে কোটা বাতিল করেছে। আবার এখন যদি মনে করে আন্দোলনের চাপ সহ্য করে তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে, এটা তাদের ব্যাপার।”
শুধু কোটা বাতিল নয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনও জরুরি
কোন ন্যায্য অধিকারের দাবি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা যুগে যুগে স্বৈরাচারী শাসকরা করে এসেছে এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। কিন্তু আখেরে ন্যায্যের পক্ষের জনগণই বিজয়ী হয়। বর্তমানে দেশে যে সরকার আছে, তাকে রাষ্ট্রদার্শনিকরা কেউ গণতান্ত্রিক বলে স্বীকার করেন না, স্বৈরাচার পরিভাষা ব্যবহার না করলেও একবাক্যে সবাই ‘কর্তৃত্ববাদী’ বলে আখ্যায়িত করেন। জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো সব সময়ই চায়, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে বঞ্চিত করে তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার খুঁটিগুলো যে-কোনো মূল্যে আরো মোটাতাজা হোক। এতে দুর্র্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জনগণ যতই শোষিত-অত্যাচারিত এবং নির্যাতিত হোক না কেন, এতে তাদের কিছু যায় আসে না। তাই শুধু কোটা বাতিল নয়; ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তবেই বৈষম্যের পাহাড় ভেঙে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের আলোকে: ১. সাম্য ২. মানবিক মর্যাদা ও ৩. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে সমৃদ্ধ উন্নত সভ্য দেশ গড়া সম্ভব।
বৈষম্যের পাহাড় ভাঙতেই হবে
মেধার চেয়ে কোটার পাল্লা ভারী হওয়ায় প্রশাসনে দুর্নীতি বেড়ে মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেসামাল এ অবস্থা প্রসঙ্গে সাবেক সচিব এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার সাবেক সিএসপি অফিসার মোফাজ্জল করিমের সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি ক্ষোভ ও দুঃখের সাথে বলেছেন, ‘আমাদের আমলে দুর্নীতিবাজ ছিল ১০ শতাংশ। আর সৎ অফিসার ছিল ৯০ শতাংশ। এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। এখন সৎ অফিসার ১০ শতাংশ এবং দুর্নীতিবাজ অফিসার ৯০ শতাংশ। এ অবস্থার কি কোনো দিন প্রতিকার হবে?
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, কোটা নয়; সৎ ও মেধাবীরা সরকারি চাকরিতে বেশি বেশি সুযোগ পেলে অবশ্যই এ অবস্থার প্রতিকার হবে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিল হওয়ার এ সিদ্ধান্ত বদল না হলে কোটা বহাল হবে। তখন মেধাবীরা বঞ্চিত হবেন, সিংহভাগ চলে যাবে কোটায়। মোট কোটা হবে ৫৬ শতাংশ। এর মাধ্যমে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি পাঁচ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ কোটার দাবি করেছি, এর বেশি নয়। এই পাঁচ শতাংশ কোটা হবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, যেমন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য। নারী, মুক্তিযোদ্ধা বা অন্য কোনো কোটার দরকার নেই। এটা শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য নয়, সব ধরনের চাকরির জন্য করতে হবে।” মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে কোটা করেছিলেন, তা সঠিক ছিল। কিন্তু এখন আর প্রয়োজন নেই। কারণ, এখন তাদের তৃতীয় প্রজন্ম চলছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বৈষম্যের এ পাহাড় ভাঙতে হবেই। চাকরির অধিকারের সাথে সাথে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তবেই মেধার আলোয় উদ্ভাসিত হবে দেশ। এ প্রত্যাশা নিয়েই মেধাবী নেতৃত্বের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে ঐক্যবদ্ধ তারুণ্যের আহবানে জেগেছে গোটা জাতি।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক
আপনার মন্তব্য লিখুন