post

শান্তি আসুক সিরিয়ায়

জালাল উদ্দিন ওমর

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন এবং রাশিয়ায় পালিয়ে গেছেন। বিরোধী বাহিনী রাজধানী দামেস্ক দখল করার প্রেক্ষাপটে গত ৮ ডিসেম্বর তিনি ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় চলে যান। এর মাধ্যমে বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান হয়। বাশার আল আসাদের পিতা হাফেজ আল আসাদ ১৯৭১ সাল হতে ২০০০ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে তার সন্তান বাশার আল আসাদ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাশার আল আসাদের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনের অবসান হয়। তার পতনে সিরিয়াবাসী আনন্দ উল্লাস করে এবং সিরিয়াকে মুক্ত ঘোষণা করে। দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ার সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে পড়েছে। সিরিয়ার সবকিছুকে এখন নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সিরিয়ায় শান্তি আসুক এবং সিরিয়ার মানুষেরা শান্তিতে জীবন যাপন করুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সিরিয়া মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। হাফেজ আল আসাদ ও তার ছেলে বাশার আল আসাদের শাসনামলে সিরিয়া বরাবরই ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিরোধী ছিল। অপরদিকে চীন, রাশিয়া, ইরান, হিজবুল্লাহ এবং হামাসের সাথে সিরিয়ার বরাবরই ভালো সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালে সিরিয়ার জনগণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করলে বাশার আল আসাদ তা দমনে শক্তি প্রয়োগ করে। ফলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ইরান, রাশিয়া এবং হিজবুল্লাহ সরাসরি আসাদের পক্ষাবলম্বন করে এবং আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। অপরদিকে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব আসাদবিরোধী শক্তিকে সরাসরি সাহায্য সহযোগিতা করে। এই যুদ্ধে সিরিয়ার ৫ লাখ মানুষ মারা যায় এবং ৬০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়। সিরিয়ার শাসনব্যবস্থা বহু খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একেক গ্রুপ একেক অঞ্চল শাসন করতে থাকে। এ অবস্থায় রাশিয়া, ইরান এবং হিজবুল্লাহর সমর্থনে রাজধানী দামেস্ক, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় শাসন টিকিয়ে রেখে বাশার আল আসাদ সিরিয়ার ক্ষমতায় বহাল থাকে। কিন্তু গত ২৭ নভেম্বর হায়াত-আল তাহরি-আল শাম (এইচটিএস) নামক একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অভিযান শুরু করে। তারা ঝড়ের বেগে আলেপ্পো এবং আরো বিভিন্ন এলাকা দখল করে দামেস্ক অভিমুখী অভিযান শুরু করে। অবশেষে ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করে নেয় আর বিদ্রোহীরা দামেস্ক প্রবেশ করায় আসাদ সিরিয়া থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় চলে যায়। এভাবেই সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়। এইচটিএস প্রধান আবু মোহাম্মদ জোলানি এই বিপ্লবের প্রধান নেতা এবং তিনি একজন ইসলামপন্থী মানুষ।

সিরিয়া এখন বিভিন্ন গ্রুপের দখলে, একেক গ্রুপ একেক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল এখন আসাদ পরবর্তী সিরিয়ায় প্রধান খেলোয়াড়। সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে। আসাদ পরবর্তী সিরিয়ায় রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনিক অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। এ অবস্থায় সিরিয়ায় বিদ্যমান সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ইতোমধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং মোহাম্মদ আল বশির তার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন। এখন সবার আগে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তার জন্য প্রশাসনিক অবকাঠামো এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পুনর্গঠন করতে হবে। পুরো দেশকেই এই প্রশাসনিক অবকাঠামো এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় আনতে হবে। বিভিন্ন অঞ্চল বিভিন্ন গ্রুপের দখলে এবং শাসনে থাকলেও এখন এসব অঞ্চলের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তার জন্য আঞ্চলিক গ্রুপসমূহকে ছাড় দিতে হবে এবং সিরিয়ার অখণ্ডতার স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বন্ধ হওয়া কলকারখানা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় চালু করতে হবে এবং এর মাধ্যমে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। বিদেশে বসবাসরত সিরিয়ার মানুষগুলোকে সিরিয়ায় ফিরিয়ে এনে তাদের নিজ নিজ বসত বাড়িতে বসবাসের সুযোগ দিতে হবে। একই সাথে সিরিয়ার অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত মানুষগুলোকেও তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে এসে বসবাসের সুযোগ দিতে হবে। সিরিয়ার মানুষগুলো যেন আবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে, তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সিরিয়ার অর্থনীতি পুনর্গঠনে বিরাট অঙ্কের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক অর্থদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সিরিয়ায় যথাযথ এবং আর্থিক সাহায্য প্রদান করতে হবে। তবে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ যাতে কোনো অবস্থাতেই সিরিয়ার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা নষ্ট করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।

সিরিয়ার ক্ষমতা থেকে আসাদের পতন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করবে। এখানে রাশিয়া, ইরান এবং হিজবুল্লাহ পরাজিত হয়েছে। অপরদিকে তুরস্ক, ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব বিজয়ী হয়েছে। এখন সিরিয়া হয়ে ইরানের সাথে হিজবুল্লাহ এবং হামাসের যোগাযোগের নেটওয়ার্ক আপাতত বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে হিজবুল্লাহ এবং হামাস আপাতত দুর্বল হবে। তবে এসব অবস্থা খুব দ্রুতই পরিবর্তন হবে। আসাদের পতনে আপাতত ইসরাইল সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। কারণ আসাদ ছিল ইসরাইল বিরোধী এবং হিজবুল্লাহ ও হামাসের সমর্থনকারী। তবে আসাদের পতনে ইসরাইল যতটা খুশি হয়েছে, তার থেকে বেশি চিন্তায় পড়েছে। কারণ সিরিয়ায় এখন ইসলামপন্থীদের উত্থানের ব্যাপক সম্ভাবনা এবং সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আসাদের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করেছে তারা প্রায় সবাই ইসলামপন্থী এবং রাজনৈতিক ইসলামে বিশ্বাসী। আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই ইসলামপন্থীরাই পূরণ করবে। আসাদের চেয়ে সিরিয়ার আপামর জনগণ অনেক বেশি ইসরাইল বিরোধী হবে। অদূর ভবিষ্যতে সিরিয়ায় ইসলামপন্থীদের উত্থান হবে, যারা কখনো ইসরাইলের আনুগত্য করবে না এবং ইসরাইলের অবৈধ দখলদারিত্ব মেনে নেবে না। সময়ের ব্যবধানে তারা ইসরাইল বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে এবং হিজবুল্লাহ এবং হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল হবে। তখন পুরো সিরিয়ার জনগণই ইসরাইল এবং পশ্চিমাবিরোধী হয়ে উঠবে। ইসরাইলের নেতারা এবং বুদ্ধিজীবীরা এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছেন। তাই আসাদের পতনের পরপরই ইসরাইল অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে সিরিয়ার সামরিক শক্তিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যাতে করে ভবিষ্যতে ইসলামপন্থীরা ক্ষমতায় আসার পর সামরিকভাবে দ্রুত শক্তিশালী হতে না পারে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় কোনো সরকার ছিল না। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনীসহ পুরো সামরিক এবং প্রতিরক্ষাবাহিনী অকার্যকর অবস্থায় ছিল। তাছাড়া সিরিয়ার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপের দখলে রয়েছে। এই সুযোগে পুরো সিরিয়াজুড়ে অবস্থিত সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর ঘাঁটিসহ বিভিন্ন সামরিক যান, বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র, অস্ত্রাগার, অস্ত্র উৎপাদন কারখানা, বিজ্ঞান গবেষণাগারসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় ইসরাইল অবিরাম বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই প্রায় ৫০০ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে সিরিয়ার যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, ক্ষেপণাস্ত্র , ড্রোনসহ সকল ধরনের অস্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়ে লাকাতিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা সিরিয়ার অন্তত ১৫টি যুদ্ধজাহাজকে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। ইসরাইলের লাগাতার বিমান হামলায় সিরিয়ার সামরিক সক্ষমতার প্রায় ৮০ ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল সরকারের ভাষ্য মতে আসাদ সরকারের ফেলে যাওয়া সামরিক সরঞ্জাম যেন জিহাদিদের হাতে না যায় এবং সেই অস্ত্র যেন ইসরাইলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্যই ইসরাইল এই বিমান হামলা চালাচ্ছে। ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই নাকি এই বিমান হামলার প্রধান উদ্দেশ্য। শুধু তাই নয় ইসরাইল সিরিয়ার অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণাও দিয়েছে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশ সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইসরাইলের এই অন্যায় আগ্রাসন সিরিয়ার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি হুমকি। তবে সময়ের ব্যবধানে তা ইসরাইলের প্রতি বুমেরাং হয়েই ফিরে আসবে।

সিরিয়া ঐতিহ্যবাহী একটি মুসলিম দেশ। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক কয়েক হাজার বছরের পুরনো শহর এবং ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র। অসংখ্য নবী রাসূল সিরিয়ার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সিরিয়ার মাটিতে তারা কবরস্থ আছেন। হজরত মুহাম্মদ (সা) এই দামেস্ক নগরী সফর করেছেন। এখানে শুয়ে আছেন অসংখ্য সাহাবি, তাবে তাবেঈন, পীর মাশায়েখ এবং আলেম দরবেশ। এই সিরিয়ার কথা কুরআন হাদিসেও বর্ণিত আছে। দামেস্ক ছিল উমাইয়া খিলাফতের রাজধানী। এসব কারণে দামেস্ককে পবিত্র শহরও বলা হয়। পুরো সিরিয়ায়ই ইসলামী ঐতিহ্যের সূতিকাগার। এখানকার মুসলমানদের মাঝে ইসলামের প্রভাব অনেক গভীরে অবস্থিত এবং এদের মন মানসিকতা থেকে ইসলামকে মুছে ফেলা কিছুতেই সম্ভব নয়। সময়ের ব্যবধানে সেখানে ইসলামের পুনর্জাগরণ ঘটবেই, যা নিশ্চিতভাবেই ইসরাইল এবং পশ্চিমাদের বিপক্ষে যাবে। এজন্য ইসরাইল এবং পশ্চিমা বিশ্ব সিরিয়ার বিবাদমান গ্রুপগুলোর ভিতর দ্বন্দ্ব সংঘাত জিইয়ে রেখে সিরিয়াকে দুর্বল করে রাখতে চাইবে। এজন্য সিরিয়ার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং যে-কোনো মূল্যে সিরিয়ার অখণ্ডতা রক্ষা করতে হবে। সিরিয়ার আপামর জনগণ এই বাস্তবতা অবশ্যই উপলব্ধি করবেন। আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতকারী গোষ্ঠীসমূহ যদি ইসরাইলের এইসব হামলার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে এবং ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষা করে চলে, তাহলে এসব রাজনৈতিক গোষ্ঠীসমূহ খুব দ্রুতই জনগণের আস্থা এবং সমর্থন হারাবে। এ অবস্থায় সেখানে ইসরাইল বিরোধী নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ কোনো একটি দেশ যখন বিদেশী আগ্রাসনের শিকার হয়, তখন তা দেশের মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে এবং দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। আর বিদেশী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়ায়, তাদের পাশে জনগণও এসে দাঁড়ায়। ফলে তারাই রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। তাছাড়া সিরিয়ার মানুষ আসাদের স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়ে ইসরাইলের আনুগত্য করার জন্য লড়াই করেনি এবং তারা ইসরাইলের আনুগত্য কিছুতেই মানবে না। এটাই রাজনীতির চিরন্তন সত্য কথা। সুতরাং আজ ইসরাইল যেভাবে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে সিরিয়ার সামরিক শক্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তা কিছুতেই ইসরাইলের জন্য সুফল বয়ে আনবে না। ইসরাইলের এই অন্যায় আগ্রাসন শুধু সিরিয়া নয় সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো মুসলিম বিশ্বেই ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। যার ফলে মুসলমানরা অধিক হারে ইসরাইলসহ পশ্চিমাবিরোধী হয়ে উঠবে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায় আগ্রাসন আফগানিস্তানের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী করেছে। ভারতের অন্যায় আচরণ বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ এবং ভারতবিরোধী করে তুলেছে। একইভাবে সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইসরাইলের অন্যায় আগ্রাসন ও সিরিয়ার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ এবং ইসরাইল বিরোধী করে তুলবে। এই বাস্তবতা ইসরাইলকে বুঝতে হবে। তাই সিরিয়ার আগ্রাসন চিরতরে বন্ধ করতে আমি ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানাই। সকল ধরনের প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা এবং ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হউক এবং সিরিয়ার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা পাক- এটাই আজকের দিনের প্রত্যাশা।

লেখক : প্রকৌশলী ও উন্নয়নগবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির