post

শিক্ষাঙ্গনে অপবিত্রতা ও বিদ্বানের অনৈতিকতা

অধ্যক্ষ ডা. মিজানুর রহমান

২১ নভেম্বর ২০১৯

শিক্ষা The American Herritage Dictionary of the English Language নামক গ্রন্থে Education এর সংজ্ঞায় বলা হয়- The knowledge or skill obtained or developed by a learning process অর্থাৎ শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান বা দক্ষতা অথবা অর্জিত জ্ঞান বা দক্ষতার উৎকর্ষ সাধনই হলো শিক্ষা।

শিক্ষাঙ্গন বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বিশ্বকে গড়ার জন্য যে কারিগর প্রয়োজন তা পূরণ করে শিক্ষাঙ্গন। সৎ, যোগ্য, আলোকিত আদর্শ মানুষের মতো মানুষ গড়ার উপযুক্ত স্থান হলো শিক্ষাঙ্গন। যেখানে শিক্ষার্থীরা শিখবে জীবনের সকল প্রয়োজনীয় বিষয়াদি। সময়জ্ঞান, জীবনাচরণ, শৃঙ্খলা, আদর্শ নৈতিকতাসহ যাবতীয় মানবীয় গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে একজন আলোকিত মানুষ হতে হলে শিক্ষালয়ের বিকল্প নেই।

শিক্ষার ভাষাগত ব্যাখ্যা বাংলা ভাষায় শিক্ষা শব্দটি ‘শাসা’ ধাতু থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। যার অর্থ হলো শাসন করা, নিয়ন্ত্রণ করা, শৃঙ্খলিত করা, নির্দেশনা দেয়া বা শিক্ষা দেয়া। বাংলা ভাষায় অন্য একটি প্রতিশব্দ হলো ‘বিদ্যা’ যার অর্থ হলো জ্ঞান আহরণ করণ, কৌশলগত আয়ত্তকরণ বা কৌশলগত দক্ষতার প্রয়োগকরণ ইত্যাদি।

শিক্ষা ও নৈতিকতা শিক্ষা ও নৈতিকতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নৈতিকতাবিহীন শিক্ষা ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কাজেই নৈতিকতা হলো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রক। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা বিবেকবর্জিত শিক্ষার নামান্তর। তাই আমি বলি আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও বিবেকের বিকশিত রূপই হলো শিক্ষা যা ভালো-মন্দ, সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী তথা বিবেকের আদালতের মানদণ্ড তৈরিতে সহায়ক।

শিক্ষাবিদ/দার্শনিকদের অভিমত যেমন, সক্রেটিস বলেন- “মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের আবিষ্কারই হলো শিক্ষা।” অ্যারিস্টটলের ভাষায়- দেহ মনের সুষম ও পরিপূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবনের প্রকৃত মাধুর্য ও চরম সত্যে উপনীত হওয়ার কৌশলই হলো শিক্ষা। প্লেটোর মতে- “শিশুর দেহ মনের পরিপূর্ণ ও সার্বিক বিকাশ সাধনই হলো শিক্ষা।” এফ ফ্রয়েবলের মতে-“সুন্দর, বিশ্বস্ত এবং পবিত্র জীবনের উপলব্ধিই হলো শিক্ষা”। ফেডাটিক হার্বাট বলেন- “শিক্ষা হলো মানুষের বহুমুখী প্রতিভা ও অনুরাগের সুষম প্রকাশ এবং নৈতিক চরিত্রের পরিপূর্ণ গঠন।” হোয়াইটহেডের মতে- “জ্ঞান অর্জন ও অভিজ্ঞতার সুষ্ঠু ব্যবহারের কলাকৌশল আয়ত্ত করার নামই হলো শিক্ষা।” হার্বাট স্পেনসারের মতে- “পরিপূর্ণ জীবন বিকাশই হলো শিক্ষা”। থপসোন বলেন- Education is the itlicvce of the environment on the behaviour with a view to producing a permanent change in this habit. জন মিল্টন বলেন- Education is harmonius development of body mind and soul. অর্থাৎ “শরীর, মন ও আত্মার সমন্বিত বিকাশ সাধনের নামই শিক্ষা”। শতাব্দীর অন্যতম বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী বলেন- ‘দেহ, মন ও আত্মার উন্নতি সাধনই শিক্ষা।’ বিশ্বে ধনৈশ্বের্যের, প্রাচুর্যের, শৌর্য-বীর্যের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে বটে, কিন্তু মানুষের মানবাধিকার, মানবতাবোধ, নিরাপত্তা, মূল্যবোধ, সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দিন দিন ক্রমবর্ধমান হারে হ্রাস পাচ্ছে। যে কারণগুলোর জন্য উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী হ্রাস পাচ্ছে। এ হ্রাসকৃত লক্ষণের সম্পূর্ণ বিপরীত শিক্ষাই হলো প্রকৃত শিক্ষা। যা মানবরচিত তন্ত্র মন্ত্র শিক্ষা দীক্ষা দ্বারা সম্ভব নয়। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আজকের আধুনিক বিশ্বে চলমান মানবাচরণ, মানবাধিকার, হরণ, বৈষম্য, শোষণ, শাসন, হত্যাযজ্ঞ, অমিতাচার, যৌনাচার, মাদকাসক্ততা, আনবিক ও পারমাণবিক এবং রাসায়নিক যন্ত্রের ভয়াবহতার আতঙ্ক। এসবের মূল কারণ হলো বৈষয়িক স্বার্থ হাসিলের নৈতিকতা ও বিবেকবর্জিত অসম প্রতিযোগিতা। এ ক্ষেত্রে কোন কাজটি নৈতিক আর কোন কাজটি অনৈতিক তা বুঝাবার মিযান বা মানদণ্ড হলো যা মানুষ নিজের জন্য অপছন্দ অমঙ্গলজনক তা অপরের জন্য ও অপছন্দ ও অমঙ্গলজনক মনে করার মতো অনুভূতি ও প্রবণতা। এ প্রবণতা ও দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিকশিত বিবেকবোধের মাধ্যমে। একজন শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক পাঠ করে একের পর এক ধাপ অতিক্রম করে সনদ অর্জনের নাম শিক্ষা নয় বরং শিক্ষার পাশাপাশি অর্জিত জ্ঞানকে যদি বিবেকের মানদণ্ডে বিচার বিশ্লেষণ করে অর্জিত শিক্ষার আলোকে অনুশীলন করতে চেষ্টা করে সেটিই হলো প্রকৃত শিক্ষা। আমাদের মনে রাখতে হবে কুশিক্ষা কুকর্মের জননী, আর সুশিক্ষা সুকর্মের জনক। সুতরাং ইনসাফ ও ইনসানিয়াত অর্থাৎ ন্যায় ও মানবতাই হলো শিক্ষার মূলকথা। অপরদিকে তৌহিদ বা একত্ববাদ, রিসালাত বা রাসূলের আদর্শ ও আখিরাত বা পরকাল বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা, স্বীকৃতি, বিশ্বাস ও কার্যে পরিণত করার যাবতীয় উপাদান বা মৌলিকত্ব সম্পর্কে যারা সম্যক ধারণা রাখে জানে ও মানে তারাই হলো কামিলে ইনসান বা পরিপূর্ণ মানুষ। আর যা মানে তাই হলে বুনিয়াদি শিক্ষা। এক কথায় মানবতার কল্যাণ সাধনের জ্ঞানই শিক্ষা আর যারা কল্যাণ সাধনে ব্রত তারাই প্রকৃত শিক্ষাবিদ।

শিক্ষাঙ্গনে অপবিত্রতা আদর্শ ও আলোকিত মানুষের মতো মানুষ হওয়ার উপযোগী পবিত্র স্থানই হলো শিক্ষাঙ্গন। এতদিন দেশের জনগণ একথাই মনে করতো। ইদানীং সে ধারণা পাল্টে যেতে বসেছে। মানুষ গড়ার আঙিনাগুলো এখন মানুষ হত্যার, নির্যাতন, যৌনাচারের, মাদকের বেহায়াপনার স্থান হিসেবে পরিগণিত হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। পেশিশক্তির অপব্যবহার, হামলা মামলার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসব অপকর্মের কোন না কোন ঘটনায় এখন শুধু শিক্ষার্থীরাই জড়িত হওয়ার প্রমাণ মিলছে না সেই সাথে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এমনকি হাফেজি মাদরাসা, কওমি মাদ্রাসা, খারেজি মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন পীরের আস্তানা খানকাহ ও দরবারসহ মাযার ও মসজিদে অপকর্ম ও অপবিত্রতার বর্তমান খবরা-খবর জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হচ্ছে। হৃদয়বিদারক লোমহর্ষক ও বিবেকবর্জিত এসব কর্মকাণ্ড খোদ জেলা প্রশাসনের ও সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত ও এনজিওতে ছড়িয়ে পড়েছে। মাঝে মাঝে ঘটনা ফাঁস হলে তা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও অপ্রকাশিত ঘটনার পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

শিক্ষাঙ্গনের অতীত ও বর্তমান অবস্থা আগের দিনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, মতাদর্শ ও স্বার্থ বা ক্ষমতার মোহে এবং আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র ব্যবহারসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতো। আবার সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় সংঘটিত ঘটনার প্রতি অনুতপ্ত ও ভুলস্বীকারসহ হাত ধরাধরি, বুকে বুক মেলানোর মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা আবারও একই প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতো। কিন্তু আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাধারী ছাত্রসংগঠনের দাপটের কারণে বিরোধীদলীয় ছাত্রসংগঠনের কর্মকাণ্ড প্রায়ই বিলুপ্তির পথে। যে কারণে শিক্ষাঙ্গনে মিছিল মিটিং হানাহানি মারামারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নজির প্রায়ই শূন্যের কোঠায়। সেই সাথে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নানা জটিলতা, অদক্ষতা, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারজনিত কারণে বিদ্যালয়ের কাক্সিক্ষত পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে অপবিত্রতা ও অনৈতিকতা।

শিক্ষাঙ্গনে অনৈতিকতার চর্চা শিক্ষাঙ্গনে নৈতিকতার পরিবর্তে নতুন নতুন ঘটনার আবির্ভাব শুরু হয়েছে। ইদানীং ফেসবুক, ইন্টারনেট, পর্নোছবি, পাশ্চাত্যে অপসংস্কৃতি অনুকরণ, মাদকের ছড়াছড়ির কারণে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধসহ নৈতিকতার চরম অধঃপতন ঘটে চলেছে। অবাধ মেলামেশা অশালীন পোশাক-আশাক যুবক-যুবতী কপত-কপতির জুটির অন্ত নেই। এসব দেখে জেনে সুশীলসমাজ, অভিভাবকবৃন্দ দারুণভাবে উদ্বিগ্ন। তারা কখনো সন্তানদের খোঁজখবর নিতে এবং আর্থিক জোগান দিতে বিশ^বিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে এসে স্বচক্ষে এসব কাণ্ড-কারখানা দেখে অবাক হয়ে যান। প্রকাশ্যে এসব জুটির মেলামেশা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ধরন-ধারণ দেখে অধিকাংশ অভিভাবক ভাবতেই তাদের গা শিউরে ওঠে। তারা অবাক হয়ে যান যে তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত টাকা জোগান দেয়ার এই কী পরিণতি? এরা কি মানুষ হচ্ছে না অন্যকিছু? গাছতলায়, পুকুর পাড়ে, বিল্ডিংয়ের সিঁড়িতে বিভিন্ন পার্কে, ক্যাফেটেরিয়াতে, জোড়ায় জোড়ায় জুটি বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করে গল্প করা আড্ডা দেয়া, ঘাড়ের উপর হাত রেখে পায়ের উপর মাথা রেখে সময় পার করা এসব তো পাশ্চাত্যের অপসংস্কৃতিকেও হার মানানোর মতো।

শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিবর্তন লেখাপড়ায় অমনোযোগিতা, নকল প্রবণতা, ভাল ফলাফল না করা, মাদকাসক্ত হওয়া, প্রেম করা, উচ্ছৃঙ্খলতা, যৌন কর্মে লিপ্ত হওয়া, যৌন উত্তেজক ঔষুধ সেবন করার অভ্যাস, ধূমপান গাঁজা সেবনসহ নানাবিধ মাদক সেবন, সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ এসব কিসের আলামত? ইন্টারনেটে-ল্যাপটপে, মোবাইলে, দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেলের নানাবিধ যৌন উত্তেজক দৃশ্য অবলোকনসহ টুইটার, ইউটিউব, বিভিন্ন ব্লক অনলাইনে অশ্লীল ম্যাগাজিন পড়া ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীরা আজ মানসিক ও শারীরিকভাবে রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। সেই সাথে অছাত্র যুব-যুবতীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী চাকরিজীবী মহিলাদের চলন্ত ট্রেনে, স্টিমারে, ট্রাকে, যৌন হয়রানির খবরাখবরসহ নির্যাতন শেষে হত্যা করার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে।

পরিবর্তনের কারণ দেশের উল্লেখযোগ্য যুবক-যুবতীর এমন পরিবর্তন হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করা দরকার, হঠাৎ করে কেন এতো অনাকাঙ্ক্ষিত ন্যক্কারজনক ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পেল? তা নিয়ে ভাবতে হবে। খাদ্যে অনীহা, দেরি করে বাড়ি ফেরা, রাত জাগার প্রবণতা, দরজা বন্ধ করে রাত জাগরণ, বায়না ধরা, প্রণোদনের অতিরিক্ত টাকার চাহিদা, অতিরিক্ত রাগারাগি করা, নিয়মিত গোসল না করা, দিন দিন শুকিয়ে যাওয়া, দাড়ি গোঁফ না কামানোর বদভ্যাস, ধূমপান মদপানের অভ্যাস তৈরি হওয়া, মা-বাবা ভাই-বোন আত্মীয় স্বজনদের সাথে যৌনতামূলক আচরণের তারতম্য পরিলক্ষিত হওয়া, বিনয় ও নম্রতা ভদ্রতার পরিবর্তে রুক্ষ আচরণ ও গালাগালির অভ্যাস তৈরি হওয়া, সকালে ঘুম থেকে দেরিতে বিছানা ত্যাগ করা, সারাক্ষণ মোবাইলে কথা বরার অভ্যাস তৈরি হওয়া, ধর্মীয় কাজ কর্মে অনীহা প্রদর্শন করা, নিরাপত্তা ও সাবধানতার প্রতি শৈথিল্য প্রদর্শন করা, স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে বিশ্বস্ততায় ভোগা মানসিকভাবে আগ্রহবোধ করা, যৌনবিষয়ক দৃশ্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রদর্শন করা, কুচিন্তা দুশ্চিন্তা হস্তমৈথুন ও যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে পড়া, ইত্যাকার- নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা একটি বৈশ্বিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ করে এই সব তরুণ-তরুণীদের মাঝে এসব কুঅভ্যাস, কুকর্ম দেখে দেশের সুশীলসমাজ, অভিভাবক এমন কি নীতিনির্ধারক ও সচেতন মহল আজ দারুণভাবে উদ্বিগ্ন ও হতাশ হয়ে পড়েছেন। এভাবে মুষ্টিমেয় যুবক ও তরুণদের কারণে দেশের সমস্ত যুব ও যুবারা আজ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এসব ঘটনা কোন না কোন ভাবে তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মনে করে এসব ঘটনাতো এখন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমি করলে দোষটা কোথায়। আজকাল শিক্ষাঙ্গনে, অফিস-আদালতে, বাসে, ট্রেনে, কিংবা নানা যানবাহনে, পার্কে, হোটেলে, রেস্তোরাঁয়, বিনোদন কেন্দ্রে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে তা এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। কুৎসিত, বর্বরতা, অপকর্ম বেহায়াপনা, যৌনাচার, মাদকাসক্ত, খুন, গুম, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, প্রেমে ব্যর্থতা, বারবনিতার মাত্রা আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে দেশে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ জনগণের। তারা নিজ নিজ পরিবারের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে উদ্বিগ্নতা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে প্রতিটি মুহূর্ত। এসব অনাকাক্সিক্ষত বিষয় নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দেশের সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার পরিবর্তে নানা রকম অপকর্মের রহস্য উদঘাটনে তাদের মেধা, সময় অপচয় করতে করতে অধৈর্য ও হিমশিম খাবার উপক্রম হয়ে পড়েছে। জাগতিক মজার জন্য মত্য হয়ে পাগলপারা যুবসমাজ ধর্মীয় অনুভূতির কথা ভুলতে বসেছে। কৃত কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা ও ঐশ্বরিক ভয়ভীতি তাদের অন্তরে নেই বললেই চলে। এসব কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় দ্বিমুখী শিক্ষাব্যবস্থা তথা সহশিক্ষার কারণে শিক্ষার্থীরা দার্শনিক, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রকৌশলসহ নানা বিষয়ে সফলতার সোনালি যুগের সভ্য সমাজের ইতিহাস ভুলেই গেছে। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গৎবাঁধা বই পড়ে পরীক্ষায় পাসের পর পাস করে সনদের অধিকারী হচ্ছে কিন্তু সত্যিকারে শিক্ষিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠছে না। এক শ্রেণীর শিক্ষার্থী আধুনিকতার নামে অবাধ যৌনাচার, মেলামেশা, অসভ্যতার জালে আটকে যাওয়ার কারণে বর্তমান সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তিন বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৯২ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত এদেশের ধর্ষণের শিকার হবার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মাতা-পিতা কর্তৃক সন্তান হত্যার, সন্তান কর্তৃক পিতা-মাতা হত্যা, মামা কর্তৃক ভাগ্নে যৌনাচার, পিতা কর্তৃক সন্তান ধর্ষিত ও হত্যার শিকারসহ দেশের একজন জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা কর্তৃক যৌনাচারের অপরাধে অপরাধী হওয়ার খবরা খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের পাসের হার পূর্বের তুলনায় যথেষ্ট বেড়েছে, বেড়েছে গোল্ডেন এ প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থী। অপরদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত নানা ঘটনা আদিম যুগের ঘটনাকেও হার মানিয়েছে। সন্তানের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ বা মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ বিদেশী ফিল্মকেও হার মানিয়েছে। দিনের বেলায় কুপিয়ে মানুষ হত্যার দৃশ্য দেখেও সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা এগিয়ে আসছে না। কেন এত অমানবিকতা? এসব দেখে দেশের মানুষতো অবাক হবারই কথা। এমন দৃশ্যের ভিডিও দেখে খোদ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিস্মিত হয়ে মন্তব্য করেছেন অনেকবার। সরকার উপায়ান্তর না পেয়ে অবশেষে এসব অপরাধী দাগি আসামিদের শনাক্ত করে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা শুরু করেছে। তারা মনে করছে এভাবেই দেশের আইনশৃঙ্খলা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। মূলত এভাবে বিনা-বিচারে মানুষ হত্যা করে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করা আর বিদ্যুতের তার ধরে প্রাণ বেঁচে থাকার মতো আশা করা একই কথা।

যে শিক্ষা জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার কারিকুলাম ও নীতিমালার কৌশলগত ত্রুটিজনিত কারণে ডিসঅর্ডার বা মানসিক বিকৃতি কুরুচি সৃষ্টির কারণ ও লক্ষণ সংগ্রহ করে সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ১৯৭৩ সালে ব্রিটিশ গবেষক ড. ম্যাকলে যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছিল অদ্যাবধি আমরা সেই শিক্ষাব্যবস্থার অনুকরণে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে চলেছি। তিনি শিক্ষাদানের জন্য সিলেবাস প্রণয়ন করে বলেছিলেন, এ শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা এমন এক জাতি তৈরি করবো যারা রক্তে মাংসে হবে ভারতীয় আর চিন্তা-চেতনায় হবে ইংরেজ। সেই সাথে তারা সাধারণ শিক্ষা, ইসলামী শিক্ষাকে আলাদা করে তার মধ্যে আবার দু’ভাগে বিভক্তের সিলেবাস প্রণয়ন করে জাতিকে তিন ভাগে বিভক্তের সূচনা করেছিলেন। আস সে তিনভাগেই সিলেবাস প্রণীত হচ্ছে এবং পাঠ্যক্রম করা হচ্ছে। ফলে এক সিলেবাসের শিক্ষার্থী অন্য সিলেবাসের শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত বলেই মনে করে না, ফলে এমনিতেই জাতি তিনভাগে ভাগ হয়ে যায়, যেমন সাধারণ শিক্ষা, আলিয়া শিক্ষা ও কওমিসহ হাফেজি শিক্ষা।

নৈতিক শিক্ষায় ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি “নিশ্চয়ই আমার পালনকর্তা সব প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা হারাম করেছেন।” (সূরা আরাফ : ৩৩) “নির্লজ্জতার কাছেও যেও না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য।” (সূরা আনয়াম: ১৫১) রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “লজ্জা-শরম ঈমানের অঙ্গ।” (বুখারি: ৯) তিনি আরও বলেন, “হে যুব সম্প্রদায় তোমাদের মধ্যে যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য আছে তাদের উচিত বিয়ে করা; আর যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই তারা যেন রোযা রাখে, কেননা তা যৌন উত্তেজনাকে প্রশমিত করে।” (বুখারি: ১৬০৬) বিবাহবহির্ভূত যৌনাচারকে ইসলাম জেনা বলে গণ্য করেছে, চোখের জেনা হাতের জেনা, পায়ের জেনা, মুখের জেনা একসময় বাস্তব বড় জেনায় রূপ নেয়। তাই জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য এসব অঙ্গের জেনা ও জেনা-পূর্ব আচরণ থেকে দূরে থাকতে ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। মুমিন নারী ও পুরুষদের দৃষ্টি নত রাখতে বলেছে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করতে বলেছে। সেই সাথে প্রকাশ্যে সৌন্দর্য প্রদর্শন না করার বিষয়ে সূরা নূরের ৩৩-৩১ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যেক মানুষের দুই কাঁধে দু’জন সম্মানিত ফিরিশতা দায়িত্বরত আছেন সার্বক্ষণিকভাবে। আল-কুরআনে বলা হয়েছে কিরামান কাতিবিন সব জানে তোমরা যা কর। অন্যত্র বলা হয়েছে, “আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।” (সূরা আনকাবুত : ৪৫)

ইসলামী শিক্ষা : ইসলাম একটি শান্তি ও মার্জিত জীবনব্যবস্থা, উন্নত নৈতিকতা মূল্যবোধ ও উত্তম চরিত্রের মাধুর্যের ওপর এর নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠিত ও বিকশিত। ইসলামে অশ্লীলতা, অশালীন, অসভ্যতা, অভদ্রতা, লৌকিকতা, অপব্যয়, মূর্তিপূজা, অবতার পূজা কোনটাই প্রশ্রয় দেয় না। ইসলাম মনে করে অশ্লীল ও অশোভন কাজকর্ম মানুষের বিবেকবোধকে ক্ষয় করে নৈতিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়। ইসলাম অশ্লীলতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শাস্তি নিশ্চিত করেছে। শালীন পোশাক ও পর্দা মেনে না চলা ও অবাধে নারী-পুরুষের খোলামেলা মেলামেশাই অবৈধ যৌনাচারের মূল কারণ। বেপর্দা ও অশালীন পোশাক যৌন হয়রানিকে উসকে দেয়। নাটক সিনেমায় অবাধ মেলামেশার দৃশ্য, প্রেম, প্রেমে ব্যর্থতা, বাহুগামিতা, নারী নিয়ে যুদ্ধ, হত্যা এসব দৃশ্য কোমলমতি শিশুসহ বয়স্কদের অন্তরেও ছাপ পড়ে। ফলে এসব দৃশ্য দেখে তা অনুশীলনের ইচ্ছা জাগে। ফলে যা হবার তাই হয়। সহশিক্ষা একই শিক্ষালয়ে নারী-পুরুষ একসাথে শিক্ষা গ্রহণ, অফিস-আদালতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, চলাফেরা, খাওয়া দাওয়া, লিফটে ওঠা, বিনোদন কেন্দ্রে, সিনেমা হলে গমন, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন পরিবেশে অবস্থানের ফলে অবাধ যৌনাচার ছড়ায়।

সভ্যতার নামে অসভ্যতার চর্চা মুসলিম শাসন আসলে স্পেনের ঘরে ঘরে ইসলামের বিস্তার ঘটেছিল। প্রতিটি জনপদে গড়ে উঠেছিল দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতার চরম উৎকর্ষের কেন্দ্রস্থল ছিল স্পেন। ধর্মীয় মূল্যবোধ, সহনশীলতা, বিকশিত মূল্যবোধ, সমগ্র ইউরোপের সীমানা ছাড়িয়ে অন্যান্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল সভ্যতা ও সংস্কৃতিক মডেল। কালের বিবর্তনে স্পেনের সেই গৌরবগাথা সোনালি যুগের অবসান ঘটে ১৪৯২ সালের ১ এপ্রিল, সেদিন খ্রিষ্টশক্তি মুসলমানদের নিরাপত্তার অবসানে মসজিদে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল অসংখ্য মুসলমানকে। সেই থেকে ঐতিহাসিক গ্রানাডা ট্র্যাজেডি দিবসকে 'অঢ়ৎরষ ঋড়ড়ষ' তথা এপ্রিলের নির্বোধ’ হিসেবে পালন করে। আজকে মর্মান্তিক ও নির্মমতায় দিবসটিকেও অবোধ মুসলমানদের একাংশ গড্ডালিকায় গা ভাসিয়ে অশুভ সূত্রে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় যা দুঃখজনক ও কলঙ্কজনক বটে। সাংস্কৃতিক অবক্ষয় মানেই হলো একটি পরিবার একটি সমাজ ও একটি রাষ্ট্রের অবক্ষয়। উন্নতবিশ্ব যখন গবেষণা করে চাঁদে যাচ্ছে, নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করছে, তখন আমরা মাদক অপসংস্কৃতি অশ্লীলতা যৌনাচার মদ জুয়া আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মোহে বিভোর। অপর দিকে দেশের প্রায় অধিকাংশ মসজিদের খতিব ইমাম স্বল্পশিক্ষিত ও তাগুতের তাঁবেদার হয়ে দিনাতিপাত করছে। তারা শুধু নামাজের নেতা সমাজের নয়। গর্জনের চেয়ে অর্জন বড়। যার হাতে শাসনক্ষমতা নেই তার মুখে ভাষণ বেমানান। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন ও সমাজের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। একটি জাতিকে চেনার মানদণ্ড হলো সুস্থ সংস্কৃতি, মননশীলতা, নৈতিকতা, ভদ্রতা, সভ্যতার বিকাশের মাত্রা। পক্ষান্তরে, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, উলঙ্গপনা, অবাধ যৌনতা, মাদকাসক্ততা, উচ্চ শব্দে যন্ত্রসঙ্গীত ও নৃত্য করাসহ মনুষ্যত্ব ও বিবেক বর্জিত আনন্দ ফুর্তি ও মজা করার নাম জাহেলি সংস্কৃতি। আর এর বিপরীত ইসলামী সংস্কৃতি হলো সুস্থ ও নৈতিকতা সমৃদ্ধ তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের মূলনীতি ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে বিকশিত সংস্কৃতি। একত্ববাদের প্রতি সীমাহীন বিশ্বাস, রাসূলের আদর্শ ও জীবনাচরণের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা বিশ্বাস ও অনুশীলনের মাধ্যমে সংস্কৃতির চর্চা হয় তাই হলো তাহজিব তামাদ্দুনিক সভ্যতা ও সংস্কৃতি। এই সভ্যতা ও সংস্কৃতির গণ্ডির ভিতর দিয়ে যে যুবসমাজ বেড়ে ওঠে তারা হয় সৎ, যোগ্য, আদর্শবান। এসব যুবক সংখ্যায় যখন বাড়তে থাকে তখন শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতি পরিশীলিত হয়। জাতি তখন উন্নতির দিকে ধাপিত হয়। অবাধ্যতা, উচ্ছৃঙ্খলা, অমনোযোগী, আড্ডা দেয়া, যৌন উত্তেজনাকর ছবি দেখা ও ম্যাগাজিন পড়া, টি.ভি, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, ফেসবুক, মাদকাসক্ততা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতি, দুষ্টুমি চুরির প্রবণতা, খাদ্যে অনীহা, ঘুম না হওয়া, বায়না ধরা, জেদ করা, গোছল না করা, আত্মহত্যা প্রবণতা, এদের মধ্যে মানসিক অস্থিরতা, এসবই বৈশ্বিক রোগ লক্ষণ, এগুলো তাদের দোষত্রুটি বলে শারীরিক শাসন করা বিজ্ঞানসম্মত কাজ নয়। এসব লক্ষণ দূর করতে দ্রুত নিরাময়যোগ্য শারীরিক ও মানসিক সুচিকিৎসা দরকার। প্রয়োজনে যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের সর্বপ্রথম নৈতিক শিক্ষা, উপযুক্ত পরিবেশ ও নীতিবান মানুষের সাহচর্য দরকার।

মুক্তির উপায় ১. সমাজ, রাষ্ট্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার ও প্রসার। ২. সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোকে অশ্লীল পেজ ও সাইট বন্ধ করা। ৩. বিজাতীয় সংস্কৃতিক আগ্রাসন হতে দেশকে মুক্ত করা। ৪. যাবতীয় নেশা দ্রব্যের উৎপাদন বিপণন ও আমদানি বন্ধ করা। ৫. চলচ্চিত্র শিল্পকে গঠনমূলক ও নৈতিক মানসম্পন্ন করে তৈরি করা। ৬. ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ যাবতীয় প্রচার মাধ্যম হতে সবধরনের নগ্ন ও অশ্লীল সম্প্রচার বন্ধ করা। ৭. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে দুর্নীতি বন্ধ করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধ করা। মূলত আমরা সন্তানদের খোঁজখবর রাখি না তাই তাদের এ করুণ অবস্থা। অবজ্ঞা না করে তাদের মনের কথা শুনুন এবং সে মোতাবেক বাস্তবতার সাথে পরিস্থিতি মোতাবেক কার্যকর ব্যবস্থা নিন। লেখক : সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মী

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির