post

শিশুশিক্ষা ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

আশীষ মাহমুদ

০৪ আগস্ট ২০২২

আজকের শিশুই আগামী দিনের জাতির কর্ণধার। জাতির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক। শিশুরা যদি কাক্সিক্ষত আদর্শ ও শিক্ষা নিয়ে বড় হতে না পারে তাহলে সে জাতির কপালে দুর্দশা ছাড়া ভালো কিছু হতে পারে না। নেপোলিয়ান বোনাপার্ট বলেছিলেন, “আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে শিক্ষিত জাতি উপহার দিবো।” অন্যদিকে আমাদের কবি গোলাম মোস্তফার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে, “ভবিষ্যতের লক্ষ আশা মোদের মাঝে সন্তরে, ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।” উভয়ই শিশুর মানসিক বিকাশ ও ভবিষ্যতে একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার পেছনে পিতা-মাতার অবদান কতটা তুলে ধরেছেন। পৃথিবীর প্রতিটি মা-বাবাই চায় তার সন্তান গড়ে উঠুক শ্রেষ্ঠ আদর্শ ও শিক্ষার আলোয়। কোনো মা-বাবা চায় না তার সন্তান অন্ধকারের কালো রাতে হারিয়ে যাক। মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে শিশুকাল। এই সময়ে প্রতিটি মানবসন্তান অনেকটা কাদামাটির মতো অবস্থায় থাকে। কাদামাটি দিয়ে একজন কুমার যেমন মনের রং মিশিয়ে আমাদের দৈন্দদিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তৈজসপত্র বানায়। ঠিক তেমনিভাবে এই সময়ে একজন অভিভাবক চায় তার সন্তানের অন্তরে তার আদর্শ ও বিশ্বাস গেঁথে দিতে। প্রতিটি মানবসন্তানের শিক্ষার প্রাথমিক কেন্দ্র হচ্ছে দু’টি। এক তার পারিবারিক শিক্ষা, দুই শিশু বয়সে প্রাপ্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। শিশুর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ৫ বা ৬ বছর বয়সে শুরু হলেও পারিবারিক শিক্ষা শুরু হয় জন্মের পর থেকে। শিশু ধীরে ধীরে বড় হয় আর তার চারপাশের পরিবেশ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। এই সময়ের শিক্ষার ওপর শিশুর ভবিষ্যতের গতি প্রকৃতি নির্ভর করে। একুশ শতাব্দীর দুই দশক শেষে সদ্যোজাত শিশুকে পৃথিবী নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। আজ থেকে ২০ বছর আগে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা জন্মের পরপর তথ্যপ্রযুক্তি নামক এক আজব জিনিসের ছোঁয়া পায়নি। কিন্তু আজকে শিশু জন্মের পরপর তার পিতা-মাতা তার হাতে তুলে দিচ্ছে এক ভয়ানক চ্যালেঞ্জ। যে চ্যালেঞ্জের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও বিবেকবান মানুষের পক্ষে মোকাবেলা করা কঠিন। সেই একই চ্যালেঞ্জ শিশুর হাতে তুলে দিয়ে তার সুস্থ ও স্বাভাবিক মানসিক বিকাশের পথ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।

২. আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জীবন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন জনপদে নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছিলেন এবং জনপদের অধিবাসীদের সুপথে পরিচালিত ও শিক্ষার জন্য দিয়েছিলেন বিভিন্ন আসমানি কিতাব। নবী মুহম্মদ সা.-কে সর্বশেষ নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তার ওপর অবতীর্ণ করেছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব আল কুরআন। কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর পূর্বের সকল কিতাবের কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে। এখন মানবজাতির জন্য ইসলাম ও কুরআন ছাড়া আর কোনো ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থ নেই। মানবজাতি প্রকৃত সত্যের পথে পরিচালিত হতে হলে কুরআন থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭৫০ কোটি হলেও ইসলাম ধর্মের অনুসারী প্রায় ১৮০ কোটি। বাকি জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ পূর্বেকার আসমানি কিতাবের অনুসারী। তারা আসমানি কিতাবকে বিকৃত করে নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আরেকটি অংশ নিজেদের মত করে ধর্মগ্রন্থ রচনা করেছে। মানুষ রচিত মতবাদ কখনো আদর্শিক ও প্রকৃত ধর্মগ্রন্থ হতে পারে না। মানুষ মাত্রই ভুল করে এবং সর্বদা নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। নিজ স্বার্থ প্রাধান্য দিতে গিয়ে অপরের অধিকার ক্ষুণ্ন করে। যেহেতু পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বিকৃত ধর্মগ্রন্থের অনুসারী সেহেতু সেসব দেশ ও জাতির মধ্যে প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে এবং হতে থাকবে। তাদের ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি নেই। তারা প্রতিদিন নানা সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এখানে তারা ক্ষান্ত হয়নি। অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে দিতে তারা পৃথিবীর বুকে নিত্য নতুন সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের এ পথে বাধা ইসলাম ও এর অনুসারীরা। তাই বিকৃত মনের এই মানুষরা ইসলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে বিভিন্ন কৌশলে অনুপ্রবেশ করে সাধারণ মানুষের মন থেকে ইসলামকে উৎখাত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দিয়েছে মুসলমান নামধারী কিছু ব্যক্তি। ফলে তাদের কাজ আরও সহজ হয়ে গেছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এই চক্রের প্রথম টার্গেট ছিল মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া। নতুন প্রজন্মের শিশুদের মনমগজে যেন ইসলাম গেঁথে যেতে না পারে সেজন্য তারা সদা তৎপর আছে। তাদের এই তৎপরতা প্রথম পরিলক্ষিত হয় দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ থেকে। অবিভক্ত পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে দূরে সরে সরিয়ে রাখতে তারা বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এখন পর্যন্ত দেশে ৯টি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। যারা এই সকল কমিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা সকলেই ছিলেন আন্তর্জাতিক দোসরদের ঘনিষ্ঠ সহচর। 

৩. স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ড. কুদরাত-ই-খুদার নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। ২০০৯ সালে সর্বশেষ কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। প্রতিটি কমিশনের কাগজে কলমে মূল উদ্দেশ্য ছিল, আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নপূর্বক একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সুনাগরিক গড়ে তোলা। কিন্তু যে কথা কাগজে লিখা নাই তা হলো এই জাতিকে ইসলাম ধর্ম থেকে দূরে রাখাই ছিল এসব কমিশনের অলিখিত উদ্দেশ্য। এসব কমিশন শুরু থেকে চেষ্টা করেছে এমন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে যেন শিশুদের মনমগজে ইসলাম প্রবেশ করতে না পারে। তারা ধীরে ধীরে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থাকে সংকুচিত করেছে। ইসলাম তথা ধর্মীয় শিক্ষার সিলেবাস এমনভাবে প্রণয়ন করেছে যেন শিশুর কাছে ধর্ম অপ্রয়োজনীয় বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়। এই সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশের সচেতন নাগরিক ও ইসলামপন্থীরা বরাবর সোচ্চার থেকে রাজপথে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিছু সময় সেক্যুলার গংরা নমনীয় হলেও তারা দীর্ঘ মেয়াদে তাদের লক্ষ্য পূরণে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। ইসলামপন্থী ও সেক্যুলার গংরা নিজ নিজ শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ও কৌশল ধারণ করেছে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করা। পত্রিকায় কলাম লেখা, টিভি টকশোতে কথার বুলি উড়ানো, সিম্পোজিয়াম-সেমিনার করা এবং বিভিন্ন সময়ে স্বপক্ষের শাণিত যুক্তি দিয়ে পুস্তিকা প্রকাশ করা। ইসলামবিরোধীদের সুবিধা হলো তারা আলাদা আলাদা প্লাটফরমে দাঁড়ালেও আদর্শিকভাবে তারা সবাই ইসলামবিরোধী তৎপরতায় এক ও ঐক্যবদ্ধ। ঠিক বিপরীত দৃশ্য ইসলামপন্থীদের মধ্যে। তারা সবাই আদর্শিকভাবে ইসলামপন্থী হলেও ঐক্যবদ্ধ নয়। অন্যদিকে দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমগুলো ইসলামবিদ্বেষী লোকদের দখলে থাকার ফলে ইসলামপন্থীদের কথা তারা জনগণের সামনে তুলে ধরতে অপারগ। ফলে ইসলামবিদ্বেষীরা যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের ওপর মিডিয়ার শক্তি প্রয়োগ করে নিজেদের আদর্শ ও ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশের আড়ালে ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের সুযোগ গ্রহণ করে। এবং ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পরও তারা চিৎকার দিয়ে বলে সরকার সাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে। এটি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের তাদের এক ধরনের কৌশল। 

৪. শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে উভয় পক্ষ প্রায় কাছাকাছি কর্মসূচি পালন করলেও সেক্যুলার গংরা অন্যদিকে তারা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে গেছে বহুদূর। তাদের একটি প্রধান কর্মসূচি হলো তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তথা তাদের দোসরদের সাথে মিলে দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। সেখানে তারা বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর নাম করে আরেক শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করে বিনামূল্যে শিক্ষার নামে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানদের ধর্মবিমুখ করে যাচ্ছে। এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। দ্বিতীয়ত তারা দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের একত্রে শিক্ষা দেওয়ার নাম করে ছোট বয়সে তাদের মনে অবাধ যৌনতা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যার ফলাফল খুবই ভয়াবহ। তৃতীয়ত আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার ব্যানারে বিভিন্ন কার্টুন বানিয়ে শিশুদের মনমগজ থেকে ইসলামী আদব-কায়দা ও শিক্ষা দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। একই সাথে বিভিন্ন দেশীয় দোসরদের প্রতিষ্ঠান হতে বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন ও কমিকসের বই প্রকাশ করে শহরের শিশুদের মাথায় নিভৃতে ইসলামবিরোধী চিন্তা-চেতনা অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। যে বয়সে শিশুদের কুরআন হাদিস ও ইসলামী বিভিন্ন আদব-কায়দা শিখার কথা সে বয়সে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মগজ ও সুস্থ জীবন বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে। সেক্যুলার গংরা যখন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখন ইসলামপন্থীদের মধ্যে এই বিপদ থেকে শিশুদের বাঁচানোর মতো কার্যকর উদ্যোগ আমার চোখে খুব একটা ধরা পড়েনি। আমার মনে হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থায় সেক্যুলার নীতি বাস্তবায়নের পর থেকে হতাশার চাদরে ইসলামপন্থীরা মুষড়ে গেছে। তাদের এই ঘুম যত দ্রুত ভাঙবে ততই জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। অন্যথায় এই জাতির কপালে বিপদ ছাড়া আর কিছুই নেই। 

৫. একুশ শতাব্দীর এই সময়ে পৃথিবী অতিদ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। সময়ের ক্ষুদ্রভাগে বদলে যাচ্ছে আমাদের চারপাশ। আধুনিক বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় এত বিশাল পৃথিবী ইতোমধ্যে গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। উত্তর মেরুর খবর দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছে যাচ্ছে চোখের পলকে। এই সবই সম্ভব হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে। আজকের দিনে মানুষের হাতে হাতে যেমন স্মার্টফোন ঠিক তেমনিভাবে ঘরে ঘরে ল্যাপটপ-কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার শিশুদের জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনছে। আগেই বলেছি জন্মের পরপর পিতা-মাতা শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দিচ্ছে। সেই মোবাইল এখন অধিকাংশ পিতা-মাতার কাছে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুরা আজ ভিনদেশী কার্টুন-কমিকস দেখা ছাড়া খেতে চায় না। তারা শিশু বয়সে পিতা- মাতার কাছ থেকে ছড়া-কবিতা, হামদ-নাত, কুরআন তেলাওয়াত ও আদব-কায়দা শিখতে চায় না। তারা শুধু চায় মোবাইল আর মোবাইল। এসব ভিনদেশী কন্টেন্ট বানানো হয় সুদূরপ্রসারী চিন্তার আলোকে। ফলে আজকের প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে একটি সত্যিকারের আদর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে। এই বিচ্ছিন্নতার কারণে তাদের কাছে মুসলিম জাতির কাক্সিক্ষত স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। যে পরিবার ইসলাম অনুশীলন করে আর যে পরিবার করে না তাদের উভয়ের ঘরে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এই থেকে আমাদেরকে দ্রুত বেরিয়ে আসতে হবে। শিশুদের অপসংস্কৃতির রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করতে একটি বিকল্প আদর্শিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের পাশাপাশি ও একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

৬. শিশুদের পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দানের জন্য চাই একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। এ জন্য চাই প্রচুর বিনিয়োগ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দ্বীনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয় তারচেয়ে কম বিনিয়োগে শিশুদের দ্বীনের মূলস্রােতে রাখা সম্ভব। শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পূর্বে পারিবারিকভাবে শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য সময়োপযোগী প্রচুর পরিমাণে বই ও অন্যান্য কন্টেন্ট তৈরি এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এসব বই ও কন্টেন্ট তৈরির উৎস হবে কুরআন-হাদিস। শিশুরা যেসব মাধ্যম ব্যবহার করে শিখছে সেসব মাধ্যমে শিশুদের উপযোগী আদর্শিক কন্টেন্ট তৈরি ও শিশুদের মনে গেঁথে দেওয়ার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আত্মীয়-স্বজন ও দ্বীনি ভাইদের বাসায় আসা যাওয়ার সময় শিশুদের উপযোগী বই নিয়ে যেতে হবে। 

নিশ্চয় বাতিলের সকল হুঙ্কার ও ষড়যন্ত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মাটির সাথে একদিন না একদিন মিশিয়ে দিবেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই জমিনে তার দ্বীনের আলো উদ্ভাসিত হবেই। সেই আলোতে আমি আপনি যদি কিছুটা আলোকিত হতে পারি, এটি হবে জীবনের বড় পাওয়া। আল্লাহ আমাদের সকল তৎপরতা কবুল করুন। আমিন।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির