১৪১৫ সালে বাংলায় রাজা গনেশের পরিকল্পনা ছিলো একরকম কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছে ছিলো ভিন্ন। রাজা গনেশ তার ছেলে যদুকে প্রতারণা করে মুসলিম বানিয়েছিলো। কিন্তু যদু সত্যিকার অর্থেই মুসলিম হয়েছিলেন। যদু জালালুদ্দিন মুহম্মদ শাহ নাম ধারণ করে বাংলার সুলতান হন। তিনি দু’পর্যায়ে ১৪১৫ থেকে ১৪১৬ এবং ১৪১৮ থেকে ১৪৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন। ১৪১৬ খ্রিস্টাব্দে রাজা গনেশ তাঁকে সিংহাসনচ্যুত ও বন্দি করে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করেন। তাঁর প্রকৃত শাসন শুরু হয় ১৪১৮ খ্রিস্টাব্দে রাজা গনেশ ও তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র মহেন্দ্রের চূড়ান্ত উৎখাতের পর। প্রায় দু’দশকের শান্তিপূর্ণ রাজত্বকাল জালালুদ্দিনকে পূর্ববঙ্গ ও চট্টগ্রামসহ প্রায় সমগ্র বাংলার উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। তিনি ফতেহাবাদ (ফরিদপুর) অধিকার করেন এবং দক্ষিণবঙ্গে রাজ্য সম্প্রসারণ করেন। তিনি, ধার্মিক, ন্যায়পরায়ণ ও দয়ালু শাসক ছিলেন। তিনি দায়ী, পীর, উলামা ও শেখদের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ করেন। তিনি রাজা গনেশ কর্তৃক ধ্বংসকৃত মসজিদ, খানকাহ ও মাদ্রাসা পুনঃনির্মাণ ও মেরামত করেন এবং নতুন মসজিদ ও খানকাহ নির্মাণ করেন। তার আমলে পান্ডুয়া সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠে। তিনি তাঁর রাজধানী পান্ডুয়া থেকে গৌড়ে (চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ) স্থানান্তর করেন এবং সেখানে একটি মসজিদ, একটি পুকুর (জালালী পুকুর) ও একটি সরাইখানা নির্মাণ করেন। তখন বাংলা পৃথিবীর অন্যতম ধনী অঞ্চল ছিলো। জালালুদ্দিন পবিত্র মক্কা নগরীতে বিতরণের জন্য অর্থ প্রেরণ করেন এবং সেখানে একটি মাদ্রাসা নির্মাণ করান। তাঁর রাজত্বকালে বাংলার সম্পদ ও জনবল বৃদ্ধি পায়। (১)
জালালুদ্দিন হিরাতের তৈমুরি শাসক শাহরুখ, চীনের ইয়াং লো এবং মিশরের মামলুক সুলতান আল-আশরাফ বার্সবের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি ‘সুলতান’ ও আমির উভয় উপাধি ব্যবহার করেন এবং আব্বাসীয় খলিফার নিকট থেকে সম্মানসূচক পোশাক খিলাত ও খেতাব লাভ করেন। বাংলার সুলতানরা তখন থেকে আব্বাসীয় সুলতানদের আনুকূল্যে তাদের মৌখিক প্রতিনিধিত্ব লাভ করেন। বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ খলিফাত-আল্লাহ উপাধি ধারণপূর্বক তিনি ১৪৩১ খ্রিস্টাব্দে একটা নতুন মুদ্রা চালু করেন। তিনি তাঁর মুদ্রায় কালিমা উৎকীর্ণ করেন।
সুলতান জালালুদ্দিন মুহম্মদ শাহ-এর দু’টি শিলালিপি এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রথমটি রাজশাহী থেকে সুলতানগঞ্জ লিপি, এবং অপরটি ঢাকা থেকে মান্দ্রা লিপি। উভয় লিপিই দু’টি মসজিদ স্থাপনের স্মারক। লিপি দু’টির অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে, উক্ত অঞ্চলে সুলতান কর্তৃক বিজিত হয় ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা হয়। (২)
জালালুদ্দিন ১৪৩৩ সালে মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্র শামসউদ্দিন আহমাদ শাহ ক্ষমতায় আসেন। তবে তিনি বয়সে কম হওয়ায় পুরোপুরি ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হননি। তিনি প্রায় তিন বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি তার পিতার উদারনীতি বজায় রাখেন এবং ন্যায়বিচার ও দানশীলতার জন্য পরিচিত ছিলেন। দুজন অমাত্য সাদি খান ও নাসির খান তাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে। পরে তারা দুজনই বিবাদে লিপ্ত হয় এবং ক্ষমতাচ্যুত হয়। (৩) ১৪৩৭ সালে অমাত্যবর্গ ইলিয়াস শাহী বংশের নাসির উদ্দিন মাহমুদকে ক্ষমতায় বসান। তার মাধ্যমে আবার ইলিয়াস শাহী বংশ ক্ষমতায় আসে। নাসিরুদ্দীন মাহমুদ শান্তিপ্রিয় লোক ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে বাংলা দিল্লি সালতানাতের সাথে কোনো যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হয়নি। তিনি তাঁর রাজ্যের পুনর্গঠন ও উন্নয়নের দিকে সময় ও মনোযোগ দেয়ার সুযোগ পান। তদুপরি নাসিরুদ্দীন মাহমুদ বাংলার সামরিক শক্তিও পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং এর ফলে সামরিক বিজয়ও লাভ করেন। (৪) তাঁর রাজত্বকালে খানজাহান আলী খুলনা-যশোর এলাকা জয় করেন। খান জাহান দিল্লির তুগলক সুলতানদের অধীনে একজন আমির ছিলেন। তিনি বাংলার সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদের নিকট থেকে সুন্দরবন বনাঞ্চল জায়গির লাভ করেন। সুন্দরবন এলাকায় তিনি জনবসতি গড়ে তোলেন। অচিরেই তাঁর দুই নায়েব বুরহান খান ও ফতেহ খানের অক্লান্ত পরিশ্রমে মসজিদকুড় (খুলনা জেলার বয়রা থানাধীন) এবং কপোতাক্ষ নদের পূর্ব তীরবর্তী সন্নিহিত এলাকা বাসোপযোগী করে তোলা হয়। স্থানীয় জনশ্রুতি মতে, খান জাহান বৃহত্তর যশোর ও খুলনা জেলার অংশে প্রথম মুসলিম বসতি গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর সমাধিসৌধের ফলকে উৎকীর্ণ ‘উলুগ খান’ ও ‘খান-ই-আযম’ উপাধি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, খান জাহান একজন স্বাধীন সৈনিক ছিলেন না, বরং তিনি গৌড়ের সুলতানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি নড়াইলের উত্তরে নলদি পর্যন্ত বিস্তৃত খলিফতাবাদ পরগণা শাসন করতেন।
নাসিরুদ্দীন মাহমুদের রাজত্বকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অগ্রগতি ছিল মুসলিম শাসনের দ্রুত সম্প্রসারণ এবং বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁদের বসতি স্থাপন। দক্ষিণ বাংলায় মুসলিম বসতি স্থাপনের এ প্রক্রিয়ার পুরোধা ছিলেন খান জাহান। মসজিদ নির্মাণ, পুকুর খনন এবং এ ধরনের আরও বহু জনহিতকর কাজের মাধ্যমে তিনি পুনর্বাসনের একটি সুনিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। রাজ্যের অন্যান্য অংশেও মুসলিম বসতি স্থাপন ও শাসন সম্প্রসারণের অনুরূপ কাজ চলতে থাকে।
নাসিরুদ্দীন মাহমুদ শিল্প ও স্থাপত্যের একজন বড় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, তাঁর রাজত্বকালে বহু মসজিদ, খানকাহ, সেতু ও সমাধিসৌধ নির্মিত হয়। তাঁর রাজত্বকালে নির্মিত মসজিদগুলোর মধ্যে বাগেরহাটের খান জাহানের ষাটগম্বুজ মসজিদ, মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুরে সরফরাজ খানের নির্মিত দুটি মসজিদ (১৪৪৩), গৌড়ের নিকটবর্তী এলাকায় জনৈক হিলালী কর্তৃক নির্মিত মসজিদ (১৪৫৫), ঢাকার বখত বিনত মসজিদ (১৪৫৫) এবং ভাগলপুরে খুরশীদ খানের মসজিদ (১৪৪৬) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বাগেরহাটে খান জাহান আলীর সমাধিসৌধ এবং হজরত পান্ডুয়ায় জনৈক আল্লামার সমাধিসৌধ তাঁর রাজত্বকালে নির্মিত হয়। নাসিরুদ্দীন মাহমুদ নিজে গৌড়ে একটি দুর্গ ও প্রাসাদের ভিত্তি স্থাপন করেন। বহু ইমারত দ্বারা তিনি গৌড় শহর সুসজ্জিত করেন। স্থাপত্যকীর্তিসমূহের মধ্যে পাঁচটি খিলানবিশিষ্ট পাথরের সেতু, দুর্গের পুরু দেয়াল এবং কোতোয়ালি দরওয়াজার অস্তিত্ব এখনও বিদ্যমান। উপরিউক্ত ইমারতসমূহ নাসিরুদ্দীন মাহমুদের রাজত্বকালে শান্তি ও সমৃদ্ধির উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করছে।
নাসিরুদ্দীন মাহমুদ একজন আদর্শ সুলতান ছিলেন এবং তাঁর রাজত্বকালে সাধারণ ও অভিজাত, ধনী ও দরিদ্র সর্বস্তরের মানুষ শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে সুখী ও পরিতৃপ্ত জীবন যাপন করত। গোলাম হোসেইন সলিমও তাঁকে উদার ও ন্যায়পরায়ণ সুলতান বলে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন যে, তাঁর সুশাসনে যুবক-বৃদ্ধ সকলেই সন্তুষ্ট ছিলেন। চব্বিশ বছর শান্তিপূর্ণ রাজত্বের পর ১৪৫৯ সালে সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদের মৃত্যু হয়। (৫) সুলতান নাসির উদ্দিনের মাহমুদ শাহের মৃত্যুর পর বাংলার ক্ষমতায় আসেন রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ। তিনি ১৪৫৯ সাল থেকে ১৪৭৪ সাল পর্যন্ত বাংলার ক্ষমতায় ছিলেন। রুকন উদ্দিন তার বাবার মতোই খ্যাতিমান ছিলেন। বারবাক শাহের শাসনামলে কলিঙ্গের গজপতি রাজ্যের (বর্তমান উড়িষ্যা) রাজা দক্ষিণ বঙ্গ আক্রমণ করেন এবং মান্দারান দুর্গ দখল করেন। বারবাক শাহ তার সেনাপতি শাহ ইসমাইল গাজীকে তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। ইসমাইল গাজী কলিঙ্গের সেনাদের পরাজিত করে দুর্গ পুনরুদ্ধার করেন। কামরূপের (বর্তমান আসাম) রাজা কামেশ্বর বাংলার উত্তর অঞ্চলে আক্রমণ করেন। শাহ ইসমাইল গাজীকে এবারও কামরূপের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হয়। সন্তোষের যুদ্ধক্ষেত্রে বারবাক শাহের সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়ে গেলেও ইসমাইল গাজী তার গুণের কারণে কামেশ্বরের মন জয় করেন। কামরূপের রাজা ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বারবাক শাহের অধীনতা স্বীকার করেন।
তবে ইসমাইল গাজীর শান বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গুজব ছড়ায় যে তিনি কামেশ্বরের সাথে পরিকল্পনা করে নিজের জন্য কামরূপে একটি স্বাধীন রাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। বারবাক শাহ ইসমাইল গাজীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনেন এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বারবাক শাহের আমলে সিলেট, আসাম ও চট্টগ্রামে সুলতানি শাসন দৃঢ় হয়।
বারবাক শাহের আমলে সাহিত্য সংস্কৃতি ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা পায়। তার নির্দেশনায় ইবরাহিমকাওয়াম ফারুকী শরফনামা নামে একটি ফারসি ভাষার অভিধান রচনা করেন। বারবাক শাহের সভাকবি ছিলেন জৈন উদ্দিন হারবি। এছাড়াও তার সভা অলংকৃত করে রাখতেন শাহ উদ্দিন হাকিম কিরামানি, মনসুর শিরাজি, মালিক ইউসুফ, সৈয়দ জালাল, সৈয়দ মুহাম্মদ রুকন, সৈয়দ হাসান, শায়খ ওয়াহেদীসহ অনেক কবি ও পণ্ডিতগণ।
বারবাক শাহের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তিনি আট হাজার হাবশি সৈন্য আমদানি করেন। তিনি তার পূর্বপুরুষ ভুল থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে চেয়েছিলেন। তাই হিন্দুমুক্ত করে স্পেশাল এই হাবশিদের দিয়ে তার রাজবংশ রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর এই হাবশিদের হাতেই ইলিয়াস শাহী বংশ পুরোপুরি ক্ষমতা হারায়। (৬) ১৪৭৪ সালে বারবাকের শাহের মৃত্যুর পর তার ছেলে শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ ক্ষমতায় আসেন। তাঁর শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, তিনি ‘খলিফাতুল্লাহ বিল হুজ্জত ওয়াল বুরহান’, ‘সুলতান-উস-সালাতীন’, ‘জিল্লুল্লাহ ফিল আলামীন’ এবং ‘খলিফাতুল্লাহ ফিল আরদিন’ উপাধিও গ্রহণ করেছিলেন। শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহ একজন আদর্শ, বিচক্ষণ ও দক্ষ শাসক ছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যে, তিনি তাঁর সালতানাতে শরিয়া আইন কঠোর ও নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ করেছিলেন এবং তাঁর রাজ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ ছিল। ন্যায়বিচারের প্রতি অনুরাগী ইউসুফ শাহ প্রায়ই আলেম ও কাজীদের তাঁর দরবারে ডেকে পাঠাতেন এবং নিরপেক্ষভাবে বিচার করার জন্য তাদেরকে উপদেশ দিতেন। আইন বিশারদ হিসেবে জটিল মামলায় তিনি প্রায়শ কাজীদের সাহায্য করতেন। (৭)
সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতায় কবি জৈনুদ্দীন তাঁর রসুল বিজয় কাব্য রচনা করেন। ধার্মিক মুসলমান হিসেবে তিনি ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল প্রজার সঙ্গে অভিন্ন আচরণ করতেন। ইউসুফ শাহের রাজত্বকালে অনেক মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এগুলির মধ্যে মালদহের সাকোমোহন মসজিদ, তাঁতিপাড়া মসজিদ, লট্টন মসজিদ, কদম রসুল মসজিদ এবং গৌড়ের (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) দারাসবাড়ি মসজিদ সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। মেজর ফ্রাঙ্কলিনের মতে ইউসুফ শাহ পান্ডুয়ার সোনা মসজিদ নির্মাণ করেন। সুলতান ইউসুফ শাহ সাত বছর রাজত্ব করার পর ১৪৮১ সালে মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর তার ভাই জালাল উদ্দিন ফাতেহ শাহ ক্ষমতায় আসেন। এই আমলেই মূলত হাবশিরা ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসে। ফাতেহ শাহ নিয়ন্ত্রণ পুনরায় লাভ করার প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয় ও পরবর্তীকালে ১৪৮৭ সালে হাবশি প্রাসাদরক্ষীদের প্রধান তাকে হত্যা করে। তার মৃত্যুর মাধ্যমে ইলিয়াস শাহী বংশের শাসনের সমাপ্তি হয়। (৮)(৯) শাহজাদা বারবাক বাংলায় হাবশি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি জালালউদ্দিন ফাতেহ শাহ-এর রাজত্বে তাঁর প্রাসাদরক্ষী বাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু তার রাজত্ব একমাস বা তার চেয়ে বেশি কিছুদিন বলে জানা যায়। পুরো হাবশি রাজবংশ বাংলায় বেশিদিন ক্ষমতায় ছিলো না। তারা প্রায় সাত বছরের মতো ক্ষমতায় ছিলো। এর মধ্যে শাসক এসেছেন চারজন। শাহজাদা বারবাকের পর সাইফুদ্দিন ফিরোজ শাহ ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি দুবছরের কাছাকাছি সময় শাসন করেছেন। এরপর দ্বিতীয় মাহমুদ শাহ। তিনি একবছর ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর ক্ষমতায় আসেন শামসুদ্দিন মোজাফফর শাহ। তিনি প্রায় চার বছর সময় ধরে বাংলার ক্ষমতায় ছিলেন। হাবশি সুলতান মোজাফফর শাহ অত্যাচারী শাসক ছিলেন। এ সময় তার উজির ছিলেন সৈয়দ হোসেন। তার প্রধান উজির সৈয়দ হোসেনের নেতৃত্বে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংঘটিত হয় এবং তিনি নিহত হন। তার নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলায় সাত বছরের হাবশি শাসন শেষ হয় এবং একই সাথে হোসেন শাহী রাজবংশ ক্ষমতায় আসে। (১০)
তথ্যসূত্র :
১. জালালউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ / বাংলাপিডিয়া / https://bit.ly/3ivbadZ/ অ্যাকসেস ইন ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ২. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৮৩-৮৪ ৩. শামসুদ্দীন আহমদ শাহ / বাংলাপিডিয়া / https://bit.ly/3ilT91M/ অ্যাকসেস ইন ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ৪. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৮৬ ৫. নাসিরুদ্দীন মাহমুদ শাহ / বাংলাপিডিয়া / https://bit.ly/3sz4AYD / অ্যাকসেস ইন ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ৬. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৮৮-৮৯ ৭. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৯০ ৮. শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহ / বাংলাপিডিয়া / https://bit.ly/2N6Sfui / অ্যাকসেস ইন ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ৯. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৯১-৯২ ১০. বাংলার ইতিহাস / ড. আবদুল করিম / বড়াল প্রকাশনী / পৃ. ৯৩-৯৪
আপনার মন্তব্য লিখুন