post

২৮ অক্টোবর:এক রক্তভেজা ইতিহাস

২৬ নভেম্বর ২০২৩

[caption id="attachment_17" align="alignleft" width="217" caption="২৮ অক্টোবর এক রক্তভেজা ইতিহাস"]২৮ অক্টোবর এক রক্তভেজা ইতিহাস[/caption] ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম কালো দিবস। দিনটি জাতির জীবনে এক রক্তভেজা ইতিহাসের জন্ম দিয়ে গেল। এই ইতিহাস এতই বেদনার যে তা কখনো ভুলবার নয়, মুছবারও নয়; বরং চির অমলিন এক স্মৃতিজাগানিয়া হৃৎকম্পন! বিশ্বের ইতিহাসে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি। হিটলার, মুসোলিনী ও স্টালিনরা হত্যা করেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ। এসব নৃশংস হত্যার পরিসংখ্যান হয়তো পাওয়া যাবে না। কিন্তু ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টন ময়দানের ঘটনা প্রত্যক্ষ করলে নিঃসন্দেহে হিটলাররা লজ্জিত হতো। কারণ তারা মানুষ হত্যার পর লাশের উপর উঠে “নৃত্যোল্যাস” করার মতো পাশবিকতা প্রদর্শন করেননি। অথচ ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বাংলাদেশে কী ঘটেছিল তা দেশীয় মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি মানুষ যেমন প্রত্যক্ষ করেছিল তেমনি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কল্যাণে সমগ্র বিশ্বও তা অবলোকন করেছিল। সেদিন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল পৃথিবীর মানুষ। আর নিদারুণভাবে কলঙ্কিত হয়েছিল মানবতা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক মত পার্থক্যকে কেন্দ্র করে এমন পাশবিক কায়দায় মানুষ হত্যার দৃশ্য এর আগে কখনো কোথাও দেখা যায়নি। আজ ঘটনার প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য ঐ ঘটনার হোতাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো তো দূরের কথা, বরং বর্তমান সরকার চরম নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়ে সেদিনের সকল মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নিহতদের মা-ভাই-বোনদের চোখের পানির ন্যূনতম মূল্য দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন সরকার। তাই প্রশ্ন জাগে এই সরকারের হাতে মানবতা কতটুকু নিরাপদ? তবে আমরা নিরাশ হতে চাই না। মানবতার দুশমনদের বিচার একদিন অবশ্যই হবে। হয়তো দুনিয়ার আদালতে রায় ঘোষিত হবে না, কিন্তু মহান বিচারক আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের আদালতে এই ঘৃণ্য নির্মমতার অবশ্যই বিচার হবে এবং দোষীরা চরম শাস্তির সম্মুখীন হবে এ বিশ্বাস বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষের। রাজনৈতিক সহনশীলতার সংস্কৃতি জাতীয় উন্নতির প্রধান শর্ত। রাজনৈতিক মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য পোষণ করা ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য শিক্ষণীয়। তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ রেখে মানবতার জয়গান গাওয়া হোক আমাদের একমাত্র ব্রত। শহীদরা অমর। ২৮ অক্টোবরের শহীদরা তো আরও জীবন্ত! চলার প্রতিটি পদক্ষেপে শহীদি কাফেলার সাথীরা তাঁদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করে থাকেন। উজ্জীবিত হন নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলার। কাফেলার কণ্ঠে তাই ধ্বনিত হচ্ছে
“শহীদেরা আমাদের দিয়ে গেছে ঋণ শোধরাতে কাজ করি লাগে যত দিন।”

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির