post

কুরবানির তাৎপর্য ও শিক্ষা

১৫ নভেম্বর ২০১১
ড. মুহাম্মদ আবু ইউসুফ খান সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি মানবজাতিকে সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে দিয়েছেন সম্মান ও মর্যাদা। মানুষকে তার আসল মর্যাদায় টিকিয়ে রাখার জন্য দিয়েছেন বিভিন্ন বিধি-বিধান। কুরবানির বিধান এর মধ্যে অন্যতম, যার মাধ্যমে মানুষ একদিকে যেমন ত্যাগস্বীকারের দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে আল্লাহর আনুগত্যের অধীনে থাকার সুযোগ পায়। অন্য দিকে তার মাঝে লুকিয়ে থাকা পশুত্বকে বিসর্জন দিয়ে মনুষ্যত্ববোধের জাগরণের সুযোগ পেয়ে থাকে। বাহ্যত কুরবানি হচ্ছে তার নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু জবেহ করা। কুরবানির রয়েছে শরয়ি মর্যাদা ও গুরুত্ব। আবার কুরবানি আমাদের জীবনপ্রবাহে এনে দেয় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও শিক্ষা যা জীবনকে আল্লাহর আনুগত্যের অধীনে থেকে নতুনভাবে ঢেলে গঠন করতে সাহায্য করে। নিম্নে এ সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপিত হল : কুরবানি কী? শাব্দিক দিক : কুরবানি শব্দটি আরবি কারনুন মূলধাতু হতে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে : নিকটবর্তী হওয়া। নিকটবর্তী হওয়ার মাধ্যম। যেমন বলা হয়- “সৎকর্ম দ্বারা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া” কুরবানির অর্থ : সৎকাজ, নৈকট্য, সন্নিকটে, ঘনিষ্ঠ হওয়া। কুরবানি- উৎসর্গ, আত্মীয়তা, সান্নিধ্য। শরিয়তের দৃষ্টিতে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু জবেহ করাকে কুরবানি বলে। এই দিনে ঈদ পালন করা হয়ে থাকে এ জন্য একে কুরবানির ঈদ বলে। এদিনের অন্য নাম ঈদুল আজহা। আরবি শব্দ আজহা অর্থ কুরবানির পশু। যেহেতু এদিনে কুরবানির পশু জবেহ করা হয়। তাই একে ঈদুল আজহা বলা হয়। কুরআনে এসেছে- “তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও পশু কুরবানি কর।” (সূরা আল কাউসার-২) পারিভাষিক অর্থে কুরবানি : ইমাম রাগিব বলেন- “যে বস্তু দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। চাই তা জবেহকৃত বা অন্যকোন দান খয়রাত হোক।” তাফসিরে মাযহারির বর্ণনা মতে- “আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে নজর-মানত রূপে যা পেশ করা হয় তাকেই কুরবানি বলে।” ইমাম আবু বকর জাস্সাস বলেন- “আল্লাহর রহমতের নিকটবর্তী হওয়ার জন্য কৃত প্রত্যেক নেক আমলকে কুরবানি বলে।” কুরবানির ইতিহাস : হযরত আদম (আ) থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি ধর্মে, সকল যুগে কুরবানির প্রথা চালু রয়েছে। যদিও একেক ধর্মের নিয়ম পদ্ধতি একেক ধরনের। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে যেহেতু প্রত্যেক নবীর যুগে কুরবানির বিধান ছিল সেহেতু এর গুরুত্ব অত্যধিক। যেমন ইরশাদ হয়েছে- “আর আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানির নিয়ম করে দিয়েছি। তিনি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জীব দিয়েছেন সেগুলোর ওপর তারা যেন আল্লাহর নাম স্মরণ করে।” (সূরা আল হজ-৩৪) এ আয়াতের ব্যাখায় আল্লামা আলুসি (রহ) বলেন- “আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানির প্রথা সকল আসমানি ধর্মে বিধিবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষের ইতিহাসে সর্বপ্রথম কুরবানির প্রচলন করা হয় হযরত আদম (আ) এর পুত্র হাবিল ও কাবিলের হাতে। কুরআনে সূরা আল মায়েদায় বলা হয়েছেÑ “এবং আদম পুত্রদ্বয়ের সত্য ঘটনা লোকদের শোনাও। যখন তারা উভয়ে কুরবানি পেশ করে। অতঃপর একজনের (হাবিল) কুরবানি কবুল হয়। এবং অপরজনের (কাবিল) অগ্রাহ্য হয়। তখন (কাবিল) সে তাকে (হাবিলকে) বলে, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। (হাবিল) সে বলে আল্লাহ পরহেজগারিদের কুরবানিই কবুল করেন। (আয়াত : ২৭) তাফসিরে হাক্কানিতে বলা হয়েছেÑ “হজরত মূসা, ইয়াকুব, ইসহাক ও ইবরাহিম (আ) এর শরিয়তসমূহে কুরবানি করা ধর্মেও আইনরূপে স্বীকৃত ছিল। বহুতর বিকৃত বর্তমান বাইবেলেও কুরবানির উল্লেখ রয়েছে অনেক স্থানে। এমনকি হিন্দু ধর্মেও কুরবানির প্রচলন দেখা যায়। হযরত নূহ (আ) এর যুগে প্রচলিত কুরবানি প্রথার উল্লেখ করে মিসরের প্রখ্যাত আলেম মুহাম্মদ ফরিদ ওয়াজেদি “দায়েরাতুল মায়ারিফ” গ্রন্থে প্রমাণ সহকারে বলেন- “হযরত নূহ (আ) জন্তু জবেহ করার উদ্দেশ্যে একটি কুরবান গাহ নির্মাণ করেছিলেন। এবং তাতে জবেহকৃত জন্তু আগুন দ্বারা জ্বালিয়ে দিতেন। এরপর ইতিহাসে নজিরবিহীন কুরবানি পেশ করেন হযরত ইবরাহিম (আ)। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বন্ধু হযরত ইবরাহিম (আ)কে বিভিন্ন পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছেন এবং ইবরাহিম (আ) সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহিমকে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন। অতঃপর যে তা পূর্ণ করলেন তিনি বললেন- আমি তোমাকে মানবজাতির নেতা বানাবো। (সূরা আল বাকারা ১২৪) নিজ পুত্র জবেহ করার মত কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন হযরত ইবরাহিম (আ)। এ বিষয়ে সূরা আস সাফফাতের ১০০ থেকে ১০৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে- “তিনি বললেন হে প্রভু আমাকে নেক সন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম অত্যন্ত ধৈর্যশীল সন্তানের (ইসমাঈল)। পরে যখন সে সন্তান তার সাথে দৌড়াদৌড়ি করে বেড়ানোর বয়সে পৌঁছলো তখন তিনি (ইবরাহিম আ) বললেন, হে বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি আল্লাহর হুকুমে তোমাকে জবেহ করছি। তুমি চিন্তা করে দেখ. তোমার অভিমত কী? তিনি (ইসমাঈল) বললেন, হে পিতা আপনি তাই করুন যা করতে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। অতঃপর যখন দু’জনই আল্লাহর আদেশ মানতে রাজি হলেন তখন তিনি (ইবরাহিম) পুত্রকে জবেহ করার জন্য শুইয়ে দিলেন। আমি তাকে ডেকে বললাম, হে ইবরাহিম তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। আমি এভাবেই নেক বান্দাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এটি একটি বড় পরীক্ষা। আর আমি তাকে বিনিময় করে দিলাম এক বড় কুরবানির দ্বারা এবং যা পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম। শান্তি বর্ষিত হোক ইবরাহিম (আ) এর প্রতি।” কুরআনে কুরবানির ঘটনা অত্যন্ত সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কুরবানির গুরুত্ব : কুরবানি আল্লাহ তায়ালার একটি বিধান। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- “তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং কুরবানি কর।” (সূরা আল কাউসার ২) তাফসিরে রুহুল মাআনির ভাষ্যমতে- কতিপয় ইমাম ঐ আয়াত দ্বারা কুরবানি ওয়াজিব হওয়াকে প্রমাণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ পালন মূলত ওয়াজিব তথা ফরজ। তাই সামর্থ্যবান সকল মুসলমানের ওপর কুরবানি করা আবশ্যক। হাদিসে হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে সাহাবাদের কেউ কেউ রাসূল (সা) কে জিজ্ঞাসা করেন কুরবানি কী? তিনি বললেনÑ কুরবানি হলো তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ) এর সুন্নত। আমরা বললাম, তাতে আমাদের কী লাভ? তিনি বললেন, প্রত্যেকটি চুলের বিনিময়ে একটি করে নেকি। জিজ্ঞাসা করলাম হে রাসূল (সা), পশমের ব্যাপারে কী হবে? তিনি বললেন প্রতিটি পশমের বদলে একটি করে নেকি পাওয়া যাবে। (ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, হাকিম) হযরত আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন- কুরবানির দিনে আদম সন্তানের কোন নেক কাজই এত প্রিয় নয় যত প্রিয় কুরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। কুরবানির পশুগুলো তাদের শিং, পশম ও খুরসহ কিয়ামতের দিন (কুরবানি দাতার নেকির পাল্লায়) এসে হাজির হবে। কুরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর নিকট মর্যাদার স্থানে পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কুরবানি কর। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ) তিরমিযী শরীফে রয়েছে- হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রা বলেন, রাসূল (সা) দশ বছর মদিনায় ছিলেন এবং প্রতি বছর কুরবানি করতেন। রাসূল (সা) বলেছেন- “যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করে না সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।” (ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাদিসটি হাসান) যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি ত্যাগ করে তাদের প্রতি এ হাদিসটি সর্তকবাণী। রাসূল (সা) এর সময়ে কুরবানি : “ওয়াফাউল ওয়াফা ও কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবাআ” নামক প্রসিদ্ধ কিতাবদ্বয়ে লেখা আছে- “রাসূল (সা) হিজরি দ্বিতীয় সালে মদিনায় ঈদের নামাজ আদায় করেন অতঃপর কুরবানি করেন।” ইবনুল আসীর লিখিত “তারিখুল কামিল” গ্রন্থে দ্বিতীয় হিজরির ঘটনাবলি বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়, অতঃপর রাসূল (সা) বনু কায়নুকা যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করলে কুরবানির সময় এসে পড়ে। তাই তিনি ঈদগাহের দিকে গমন করেন এবং মুসলমানদের নিয়ে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। এটি মাদানি যুগের প্রথম কুরবানির ঈদ। অতঃপর তিনি দু’টি ছাগল, অন্য বর্ণনা মতে, একটি ছাগল কুরবানি করেন। আর এটি ছিল তার প্রথম কুরবানি যা মুসলমানগণ প্রত্যক্ষ করেন। কুরবানির শিক্ষা : কুরবানি একটি ইবাদত। আবার কুরবানির এ বিধান আমাদের জন্য অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকে। যেমন, আনুগত্যের চরম পরাকাষ্ঠা : আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে যে কোন আদেশ দেয়ার ইখতিয়ার রাখেন এবং বান্দাহ তা পালন করতে বাধ্য। আল্লাহর আদেশ সহজ আর কঠিন হোক তা পালন করার বিষয়ে এমন মানসিকতা থাকতে হবে এবং আল্লাহর হুকুম মানার বিষয়ে মায়ামমতা প্রতিবন্ধক হতে পারে না। পবিত্র কুরআন আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে যে, আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম (আ) কে আনুগত্যের চরম পরীক্ষায় অবতীর্ণ করেছিলেন। আর ইবরাহিম (আ) এর আনুগত্য ছিল শর্তহীন। কুরআনে এসেছেÑ “যখন তার প্রভু তাকে বললেন আত্মসর্মপণ কর, তিনি বলেন আমি বিশ্বপ্রতিপালকের জন্য আত্মসর্মপণ করলাম।” (সূরা বাকারা- ১৩২) হযরত ইবরাহিম (আ) বলতে পারতেন, হে আল্লাহ তোমার জন্য আগুনে গিয়েছি, ঘরবাড়ি ছেড়েছি, আত্মীয়-স্বজন সব কিছু হারিয়েছি। এসব কিছুর বিনিময়ে আমার ¯েœহের সন্তানকে কুরবানি করা থেকে  রেহাই দাও। কিন্তু তিনি তা করেননি বরং আল্লাহ যা হুকুম করেছেন তা শর্তহীনভাবে মেনে নিয়েছেন। এবং তিনি আল্লাহর আনুগত্য পালনের ব্যাপারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন। আর আল্লাহ তায়ালা যেভাবে বিশ্বমানবমণ্ডলীকে বিভিন্ন জাতিতে বিভক্ত করেছেন ঠিক সেভাবে সর্বশেষ মুসলিম জাতির পিতা হিসেবে ইবরাহিম (আ) কে মনোনয়ন দিয়েছেন। আল্লাহ বলেনÑ “এটা তোমাদের পিতা ইবরাহিমের মিল্লাত, তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম।” (সূরা আল হজ -৭৮) তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন : তাকওয়া অর্জন ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় না। একজন মুসলিমের অন্যতম চাওয়া হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জন। পশুর রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে কুরবানিদাতা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে। কুরআনে এসেছে- “আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না তাদের গোশত, রক্ত বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া। এভাবে এগুলোকে তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এ জন্য যে, তিনি তোমাদের পথপ্রদর্শন করেছেন। সুতরাং আপনি সৎকর্মকারীদের সুসংবাদ দিন (হজ -৩৭) আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা : সকল ইবাদতের মাঝেই রয়েছে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা। কুরবানি আমাদের সর্বাবস্থায় আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা করার শিক্ষা দেয়। আল্লাহ বলেন- “আল্লাহ তোমাদের সহজ চান, কঠিন চান না, যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ করতে পার এবং তিনি তোমাদের যে হিদায়াত দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।” (সূরা আল বাকারা -১৮৫) ত্যাগ স্বীকার করা : কুরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা তৈরি করা। আল্লাহর বিধি-বিধান পালনে জান-মালের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। কুরআনে এসেছেÑ “আর আমি তোমাদেরকে অবশ্যই ভয়, দারিদ্র্য, সম্পদ ও জীবনের ক্ষয়ক্ষতি করার মাধ্যমে পরীক্ষা করবো। আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন।” (সূরা বাকারা- ১৫৫) পশুত্বের দমন ও মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ : কুরবানির পশু কুরবানির সাথে সাথে কুরবানিদানকারী ব্যক্তির ভেতরে থাকা পশুসুলভ আচরণকেও কুরবানি করতে হবে। জাগিয়ে তুলতে হবে মনুষ্যত্ববোধকে। নফসের আনুগত্য ত্যাগ করে আল্লাহর একান্ত অনুগত হওয়ার মহান শিক্ষা দেয় কুরবানি। কুরবানি ইসলামী শরিয়তের অন্যতম বিধান। ইবরাহিম (আ) ত্যাগের সর্বচ্চ নজির পেশ করে কিয়ামত পর্যন্ত স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। একই সাথে আমাদের উচিত জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ ও রাসূল (সা) এর হুকুমের সামনে নিজেদের মত, জীবন, সম্পদের কুরবানি করে নিজেদের আল্লাহর রঙে রঙিন করে তোলা এবং আনুগত্যের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত পেশ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আমরা আল্লাহর রঙ গ্রহণ করেছি, আল্লাহর রঙের চেয়ে আর কার রঙ উত্তম হতে পারে।” (সূরা আল বাকারা- ১৩৯) লেখক : উপাধ্যক্ষ তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির