post

যুদ্ধাপরাধ নয় কুরআনের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়াই আল্লামা সাঈদীর অপরাধ

২৪ অক্টোবর ২০১৪

 মাসুদ সাঈদী #

Sayde(তৃতীয় ও শেষ পর্ব) অনিয়মটাই যেখানে পরিণত হয়েছিলো নিয়মে আমার আব্বা আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে আমৃত্যু কারাদন্ডের রায় দেয়া হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে তার প্রতি চরম অবিচার করা হয়েছে। আমি মনে করি এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক এবং ষড়যন্ত্রমূলক রায়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এক মিথ্যা মামলায় আমার আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ৩ অক্টোবর ২০১১ সালে ২০টি চার্জ গঠন করা হয় এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মিথ্যা মামলায় এক অন্যায় রায় প্রদান করা হয়। অনিয়মটাই একটা নিয়মে পরিণত হয়েছিলো আমার আব্বা আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে পরিচালিত তথাকথিত এই যুদ্ধাপরাধ মামলায়। অনিয়ম করা হয়েছে এই মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। ১. ১৯৯২ সালে গঠিত তথাকথিত গণআদালতে যিনি প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেছেন, যিনি আওয়ামী লীগের সম্মিলিত আইনজীবী পরিষদের নেতা ছিলেন, সেই নিজামুল হক নাসিমকে আওয়ামী সরকার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। আবার গণআদালতের সেক্রেটারিয়েট মেম্বার ছিল জিয়াদ আল মালুম, তাকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়েছিল সরকার (সূত্র : ‘একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’ বইয়ের ১০৩ ও ১০৪ পৃষ্ঠা) ২. বিচারপতি নিজামুল হক মামলার বিভিন্ন অর্ডার এবং রায়ের বিষয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি, হাইকোর্টের বিচারক এমনকি দেশের বাইরের জনৈক জিয়াউদ্দিনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন এবং তাদের নির্দেশনা মতে আদালত পরিচালনা করতেন (সূত্র : স্কাইপ সংলাপ) ৩. সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম জহির আহমেদকে পদত্যাগে বাধ্য করেন, অন্য দিকে সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম রায় দ্রুত দেয়ার জন্য বিচারপতি নিজামুল হকের সাথে নিয়মিত তার বাসায় দেখা করতেন (সূত্র : স্কাইপ সংলাপ) ৪. যে চার্জশিটের ওপর ভিত্তি করে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল প্রথমে মৃত্যুদন্ড এবং পরে আপিল বিভাগ আজীবন কারাদন্ড দিয়েছেন সেই চার্জশিট ট্রাইব্যুনালের কোন বিচারপতি তৈরি করেননি এমনকি বাংলাদেশের কোন বিচারপতি তৈরি করেননি, চার্জশিটটি তৈরি করেছেন ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান নিজামুল হকের বন্ধু জাসদ নেতা বেলজিয়াম প্রবাসী আহমেদ জিয়াউদ্দিন। তার পাঠানো চার্জ ফ্রেমিং অর্ডারের ওপর ভিত্তি করেই আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জিয়াউদ্দিনের পাঠানো চার্জ ফ্রেমিং অর্ডারটি শুধু আদালতে পাঠ করে শুনিয়েছেন মাত্র। এই ঘটনা গোটা বিশ্বের বিচার বিভাগের ইতিহাসে শুধু নজিরবিহীনই নয় বরং অকল্পনীয়ও বটে। (সূত্র : নিজামুল হক নাসিম ও আহমেদ জিয়াউদ্দিনের ২০১১ সালের ২ অক্টোবর তারিখের ই-মেইল) ৫. সরকারপক্ষ মুরগি চোর, ধান চোর, কলা চোর, ট্রলার চোর, যৌতুক আইনে দন্ডপ্রাপ্ত ও বিভিন্নভাবে সরকারি সুবিধাভোগী এবং একশ্রেণীর রাজনৈতিক টাউট ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছিল। সাক্ষীদের মধ্যে যারা দন্ডপ্রাপ্ত এবং যারা রাজনৈতিক সুবিধাভোগী তাদের সকল নথিপত্র আমরা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করার পরও ট্রাইব্যুনাল তা আমলে না নিয়ে ঐসব ব্যক্তির সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে রায় প্রদান করেছে। ৬. সরকারপক্ষের সাক্ষীদের ঢাকার গোলাপবাগে ট্রাইব্যুনালের সেইফ হাউজে রেখে দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে মিথ্যা মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য শিখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ৭. অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে আল্লামা সাঈদীকে আদালতে কোন বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়া হয়নি। বারবার বলার পর আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখতে দেয়া হবে বলে আদালতে বিচারকরা ওয়াদা করলেও কোন বক্তব্য না শুনেই আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অন্যায়ভাবে সমাপ্ত করা হয়েছে। ৮. সরকার ইচ্ছামাফিক তাদের পক্ষে সাক্ষী মান্য করেছে এবং ট্রেনিং শেষে ট্রাইব্যুনালে যাদেরকে হাজির করার সুযোগ পেয়েছে তাদেরকে হাজির করেছে কিন্তু আমাদের সাক্ষীর সংখ্যা শুধু সীমিতই করে দেয়া হয়নি বরং সাক্ষীর সাক্ষ্য দেয়ার সময়ও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। ৯. আল্লামা সাঈদী যে জন্মলগ্ন থেকেই ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’, তিনি যে কথিত দেলু শিকদার নন এ মর্মে সকল দালিলিক কাগজপত্র আমরা আদালতে দাখিল করার পরও পিরোজপুরের দেলু শিকদার নামক কুখ্যাত এক রাজাকারের সকল অপকর্মের দায় পরিকল্পিতভাবে আল্লামা সাঈদীর ওপর চাপানো হয়েছে। ১০. বিশাবালীর আপন ছোট ভাই সুখরঞ্জন বালী তার ভাই হত্যার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে আল্লামা সাঈদীর পক্ষে সত্য সাক্ষ্য দিতে এলে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে সাংবাদিক, আইনজীবীদের সামনে থেকে সুখরঞ্জন বালীকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই বিশাবালী হত্যার দায়েই আল্লামা সাঈদীকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল এবং আপিল বিভাগ এই হত্যাকান্ডের অভিযোগেই আজীবন কারাদন্ড দিয়েছে। ১১. ইব্রাহীম কুট্টি হত্যাকান্ডের পরপরই ১৯৭২ সালে ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রী মমতাজ বেগম পিরোজপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলো। ’৭২ সালে মমতাজ বেগমের দায়ের করা ঐ মামলায় আসামি হিসেবে মোট ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আসামিদের নামের তালিকার কোথাও আল্লামা সাঈদীর নাম নেই। ঐ মামলার এজাহার এবং চার্জশিটের সার্টিফাইড কপি আমি ডিফেন্স সাক্ষী নম্বর ১৩ হিসেবে ট্রাইব্যুনাল এবং আপিল বিভাগে দাখিল করেছিলাম। কিন্তু এতো কিছুর পরও ট্রাইব্যুনাল ইব্রাহীম কুট্টি হত্যাকান্ডের অভিযোগে আল্লামা সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল এবং আপিল বিভাগ এই হত্যাকান্ডের অভিযোগেই আজীবন কারাদন্ড দিয়েছে। ১২. শুধু বাংলাদেশ নয় বরং গোটা পৃথিবীর বিচার বিভাগের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক বিষয় ‘ট্রাইব্যুনালের স্কাইপ কেলেঙ্কারি’ উন্মোচিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করলেও তারই রেকর্ড করা জবানবন্দী এবং বেলজিয়াম থেকে পাঠানো জাজমেন্টের ওপর ভিত্তি করেই রায় প্রদান করা হয়েছে ১৩. সরকারপক্ষ তাদের ১৬ জন সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির না করেই তদন্ত সংস্থার কাছে দেয়া কথিত জবানবন্দীকেই ‘আদালতে দেয়া সাক্ষীর জবানবন্দী’ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল সরকারপক্ষের আবেদন মোতাবেক হাজির না করা সাক্ষীদের বক্তব্যকে নজিরবিহীনভাবে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন। একজন বিচারকও মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জড়িত ছিলেন না তিনজন বিচারক নিয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-১ আল্লামা সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এই তিনজন বিচারকের একজনও আল্লামা সাঈদীর মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কেউই জড়িত ছিলেন না। কেউ পুরো মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শুনতে বা দেখতে পারেননি। অথচ তারাই একজন মানুষকে মুত্যুদন্ড দিয়েদিলেন। গোটা বিশ্বের আইনজ্ঞদের কাছে এটা বিস্ময়কর ঘটনা। কারণ সাক্ষী যখন কোর্টে এসে সাক্ষ্য দেয় এবং তার জেরা হয় তখন তার চেহারা সুরত এবং কথা বলার ধরন থেকেই বিচারক অনেক কিছু বুঝে যান যে, সে সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে। কিন্তু তাদের বক্তব্য সরাসরি না শুনে এবং না দেখে লিখিত জবানবন্দী এবং জেরা পড়ে সঠিকভাবে অনেক কিছু বোঝা যায় না বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। যে তিনজন বিচারক মিলে আল্লামা সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন তাদের একজন হলেন সাবেক চেয়ারম্যান এ টি এম ফজলে কবির। তিনি ২০১০ সালের মার্চ মাসে ট্রাইব্যুনাল গঠনের শুরু থেকে ২০১২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ছিলেন। ২০১২ সালের মার্চ মাসে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সময় তাকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর স্কাইপ কেলেঙ্কারির কলঙ্ক মাথায় নিয়ে ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করার পর দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল থেকে এ টি এম ফজলে কবিরকে আবার আনা হয় ট্রাইব্যুনাল-১ এ। তাকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান করা হয়। তিনি যখন ট্রাইব্যুনাল-১ এ এলেন তখন আল্লামা সাঈদীর বিচারকার্যক্রম শেষ এবং যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে বলে রায়ের তারিখ উহ্য অবস্থায় ছিল। ২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে বদলি হবার আগ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপক্ষের অনেক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ দেখেছেন কিন্তু আসামিপক্ষের কোন সাক্ষ্য গ্রহণ তিনি দেখেননি। তিনি ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করার পর আসামিপক্ষ পুরো মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরুর আবেদন করে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার কলিগদের কাছ থেকে শুনে নেবো এবং পড়ে নেবো।’ এরপর তিনি শুধুমাত্র যুক্তি উপস্থাপন পুনরায় শুরুর নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের আরেকজন বিচারক হলেন জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনিও মামলার শুরু থেকে ছিলেন না। ২০১২ সালের ২৮ আগস্ট বিচারক এ কে এম জহির আহমেদকে সরকার জোর করে সরিয়ে দেয়ার পর তাকে তার স্থলে নিয়োগ দেন। আরেক বিচারক হলেন আনোয়ারুল হক। তিনিও শুরু থেকে ছিলেন না। ২০১২ সালের মার্চ মাসে এ টি এম ফজলে কবিরকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ বদলি করার পর তার স্থলে তাকে তখন নিয়োগ দেয়া হয়। সুতরাং কেউই পুরো মামলার কার্যক্রম সরাসরি না দেখে এবং না শুনে একজনকে মৃত্যুদন্ডের রায় দিলেন যা গোটা বিশ্বের কাছে বিস্ময়কর। লন্ডনের বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ‘ইকোনমিস্ট’সহ অনেক প্রভাবশালী মিডিয়ায় এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। ‘হাজার বার ফাঁসির মঞ্চে যেতে রাজি আছি’ স্কাইপ কেলেঙ্কারি বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচিত হওয়ার পূর্বে গত ৬ ডিসেম্বর ২০১২ ছিল আমার আব্বা আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত শতাব্দীর নিকৃষ্টতম মিথ্যাচারে ভরা তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ মামলার শুনানির শেষ দিন। সেদিন স্কাইপ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগকারী বিচারপতি নিজামুল হক মামলাটি শেষ করার জন্য খুব তাড়াহুড়া করছিলেন। সেদিন সকল বিচারকের বিচারক, মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর ভরসা করে নিজেকে বিশ্বাসের চূড়ান্ত এবং শেষ স্তরে সঁপে দিয়ে আল্লামা সাঈদী ট্রাইব্যুনালে পিন পতন নীরবতায় ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের উদ্দেশে ৫-৭ মিনিটের একটি বক্তব্য রেখেছিলেন। আল্লামা সাঈদীর স্বল্প সময়ের ঐ বক্তব্যের মধ্যে ফুটে উঠেছিল তার বিরুদ্ধে করা সরকারের ষড়যন্ত্র ও দায়ের করা মামলার কারণ। পাঠকের জ্ঞাতার্থে আল্লামা সাঈদীর ঐ বক্তব্য এখানে তুলে ধরছি : ‘মাননীয় আদালত, বিচার প্রক্রিয়ার প্রায় শেষ প্রান্তে এসে আজ আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি কিছু বলার জন্য। অত্যন্ত ত্রস্ততার সাথে সম্পন্ন করা এই বিচারের রায়ও হয়তো ইতোমধ্যে নির্ধারণ করা হয়ে থাকতে পারে। এমতাবস্থায় আসামি হিসেবে আমার বক্তব্য আপনার ন্যায়পরায়ণতা বোধের কাছে আবেদন রাখার জন্য কতটুকু সময় ও সুযোগ অবশিষ্ট আছে, তা অনুধাবনের চেষ্টা থেকে বিরত থেকে আমি আপনাদের সামনে কিছু কথা খোলামেলাভাবে বলার প্রয়াস পাচ্ছি। কথাগুলো যেমন আপনাদের জানা প্রয়োজন, একাধিক কারণে কথাগুলো আমারও বলা প্রয়োজন।’ ‘আমি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলার আপামর জনগণের অতি পরিচিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। আল্লাহ সাক্ষী, তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের রচিত দেলোয়ার শিকদার বর্তমান সাঈদী বা দেলোয়ার শিকদার ওরফে দেলু ওরফে দেইল্যা রাজাকার আমি নই।’ ‘মাননীয় আদালত, গণতন্ত্রের লেবাসধারী বর্তমান আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত যুদ্ধাপরাধের দায় চাপানোর মিশন নিয়ে হেলাল উদ্দিনকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। মিথ্যাচার প্রতিষ্ঠায় স্বনাম খ্যাত হেলাল উদ্দিন আমার বিরুদ্ধে ২০টি জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ এনে সরকারি ও দলীয় আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে গিয়ে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য আমার নাম বিকৃত করেছেন। আমার পারিবারিক পরিচয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে লুটেরা, খুনি, ধর্ষক, নারী সরবরাহকারী, অগ্নিসংযোগকারী পাক বাহিনীর দোসর, দুর্ধর্ষ রাজাকার, এক কথায় এই তদন্ত কর্মকর্তা মনের মাধুরী মিশিয়ে ৪ হাজার পৃষ্ঠার নাটক রচনা করেছেন আমার বিরুদ্ধে।’ ‘কোন মুসলমানের কলিজায় সর্ব শক্তিমান আল্লাহর ওপর বিন্দু পরিমাণ বিশ্বাস থাকলে, মৃত্যুর ভয় থাকলে, পরকালে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার ভয় থাকলে, জাহান্নামের কঠিন শাস্তির ভয় থাকলে অন্য কোন মুসলমানের বিরুদ্ধে শুধু আদর্শিক ও রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে এতো জঘন্য মিথ্যাচার করা আদৌ সম্ভব হতো না।’ ‘দেশবাসী সাক্ষী, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার কখনো কোনকালেই তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। বরাবরই আমার বিচরণ ছিলো কুরআনের ময়দানে। জনগণকে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছানোই ছিল আমার কাজ। আমার তাফসির মাহফিলগুলোতে হাজারো লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করে। এসব মাহফিল থেকে অসংখ্য অগণিত মানুষ সঠিক পথের দিশা পেয়েছেন, নামাজি হয়েছেন। এটাই কি আমার অপরাধ? দেশ-বিদেশের লক্ষ কোটি মানুষ আমার ওপর আস্থা রাখেন, আমাকে বিশ্বাস করেন, আমাকে ভালবাসেন। আমি সাঈদী লক্ষ কোটি মানুষের চোখের পানি মিশ্রিত দোয়া ও ভালবাসায় সিক্ত। এই ভালবাসাই কি অপরাধ? বিগত অর্ধ শতাব্দী ধরে আমি কুরআনের দাওয়াত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি, এটাই কি আমার অপরাধ? আমি কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি, এটাই কি আমার অপরাধ? মাননীয় আদালত এটা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে, এ অপরাধে অপরাধী হয়ে হাজারবার ফাঁসির মঞ্চে যেতে আমি রাজি আছি।’ ‘মাননীয় আদালত, আজকের এই বিচারপ্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে দু’টি পর্বে শেষ হবে। একটি এই জাগতিক আদালতে আর অপরটি আখেরাতের আদালতে। আজ আমি এই আদালতের অসহায় এক নির্দোষ আসামি আর আপনারা বিচারক।’ ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে ক্ষমতার জোরে আমার প্রতি যদি জুলুম করা হয়, তাহলে আজকের দুর্দান্ত প্রতাপশালী ব্যক্তিবর্গ যারা একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে আদর্শিক কারণে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার প্রতি জুলুমের প্রয়াস পাচ্ছেন তারা দ্বিতীয় পর্বের বিচারের দিন, কিয়ামতের দিন নিঃসন্দেহে আসামি হবেন। সেদিন আমি হবো বাদি। আর সর্ব শক্তিমান, রাজাধিরাজ, স¤্রাটের স¤্রাট, আকাশ ও জমিনের সার্বভৌমত্বের একচ্ছত্র অধিপতি, সকল বিচারের মহা বিচারপতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, তিনিই হবেন সেদিনের আমার দায়ের করা মামলার বিচার প্রক্রিয়ার বিচারক। সূরা আত তিনের ৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়াল বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা কি সকল বিচারকের তুলনায় শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?” সূরা দোখানের ১৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “একদিন আমি এদেরকে অবশ্যই কঠোরভাবে পাকড়াও করব এবং নিশ্চয়ই প্রতিশোধ নেবোই।” ‘মাননীয় আদালত, আপনাদের এই আদালতে বসে যাঁর হাতের মুঠোয় আমাদের সকলের জীবন, সেই মহাশক্তিধর আল্লাহ তায়ালার নামে শপথ করছি। তাঁর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে কসম করে বলছি, আমার নামে আপনাদের এ আদালতে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তার হাজার কোটি মাইলের মধ্যে আমার অবস্থান ছিলো না। উত্থাপিত অভিযোগের একটি বর্ণনাও সত্য নয়। আল্লাহর কসম! সব ঘটনা বা দুর্ঘটনার সাথে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার নাম যোগ করা হয়েছে। এ সকল অভিযোগের সাথে আমার দূরতম সম্পর্ক নেই।’ ‘সুতরাং আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পূরণে যিনি যতটা ষড়যন্ত্র করে, জঘন্য থেকে জঘন্যতর মিথ্যা মামলা দিয়ে, মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে, মিথ্যা সাক্ষীর প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছেন, দেশ-বিদেশে অসংখ্য অগণিত মানুষের কাছে কুরআনের বাণী পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আমাকে বঞ্চিত করেছেন, আমার প্রিয়জনদের কাঁদাচ্ছেন, কলঙ্কের তিলক পরিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন, আমি দোয়া করি আল্লাহ তাদের হেদায়াত করুন। আর হেদায়াত যদি তাদের নসিবে না থাকে তাহলে আমার এবং আমার প্রিয়জন, আমার কলিজার টুকরা সন্তান, বিশ্বব্যাপী আমার ভক্ত অনুরক্তদের যত চোখের পানি ফেলানো হয়েছে তাদের সকলের প্রতিফোঁটা চোখের পানি অভিশাপের বহ্নিশিখা হয়ে আমার থেকে শত গুণ যন্ত্রণা ভোগের আগে, কষ্ট ভোগের আগে আল্লাহ তায়ালা যেনো তাদের মৃত্যু না দেন। মিথ্যাবাদী ও জালিমদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ অযুত ধারায় বর্ষিত হোক। আর জাহান্নাম যেন হয় এদের চিরস্থায়ী ঠিকানা।’ যেসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও > আল্লামা সাঈদীকে যে অভিযোগে অন্যায়ভাবে ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির আদেশ এবং পরবর্তীতে আজীবন করাদন্ড দেয়া হয়েছে তার একটি বিশাবালীকে হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে বলা হয়, সাঈদীর নির্দেশে জনৈক রাজাকার গুলি চালিয়ে বিশাবালীকে হত্যা করেছে। কে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, হত্যার পর লাশ কী হয়েছে তার কোন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে পেশ করা হয়নি বরং সাঈদী সাহেবের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসা বিশাবালীর আপন ছোট ভাই সুখরঞ্জনবালীকে ট্রাইব্যুনাল গেট থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে গুম করে। ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে গুম হওয়ার পূর্বে সুখরঞ্জন বালী বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভির সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেই বলেছিল, তার ভাই বিশাবালী হত্যার সাথে কোনভাবেই সাঈদী সাহেব জড়িত ছিলেন না, পাক সেনারা তার ভাইকে হত্যা করেছে। এই কথাগুলোই তিনি ট্রাইব্যুনালে গিয়ে বলতে চান বলে জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদেরকে। তাহলে, ট্রাইব্যুনালের গেট থেকেই তাকে অপহরণ করা হল কেন? তার সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে কি তার ভাই হত্যাকান্ডের সঙ্গে আল্লামা সাঈদীকে জড়িত করার সরকারের ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যেত? ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে সুখরঞ্জন বালীকে পুলিশ কর্তৃক গুম করার ঘটনা ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করার পরও ট্রাইব্যুনালের গেটে রক্ষিত সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে অপহরণকারীদের চিহ্নিত করা হলো না কেন? সুখরঞ্জন বালীকে অপহরণ করার পর তার আত্মীয়রা থানায় জিডি করতে গেলেও সেটি গ্রহণ করা হলো না কেন? অপহরণকৃত সুখরঞ্জন বালীকে উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে করা হেভিয়াস করপাস রিটটি এখনো নিষ্পত্তি করা হলো না কেন? > আল্লামা সাঈদীকে আরেকটি অভিযোগে আজীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে আর তাহলো ইব্রাীহম কুট্টি হত্যাকান্ড। ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রী মমতাজ বেগম ১ অক্টোবর ১৯৭১ সালে তার স্বামীকে হত্যার জন্য পাক সেনাসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করে পিরোজপুর আদালতে ১৬ জুলাই ১৯৭২ সালে নিজে বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যার মামলা নম্বর- ৯, জিআর নম্বর ৩৭৮/৭২। ঐ মামলায় এজাহার নামীয় ১৪ জন আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে অন্তত ৪ জন বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন। ঐ মামলার এজাহার বা চার্জশিটে আল্লামা সাঈদীর নামতো ছিলই না, এমনকি তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন এমন কোন শব্দও নেই। অথচ ১ অক্টোবর ১৯৭১ সালে সংঘটিত ইব্রাহীম কুট্টি হত্যাক্যান্ডের ঘটনাটিকে সরকার ৮ মে ১৯৭১ সালের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছে। ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রী ও সন্তানেরা আজো জীবিত আছেন, ইব্রাহীম কুট্টির পিতা, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা সবাই জীবিত আছেন। তাদেরকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলো না কেন? ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রী মমতাজ বেগমের ১৯৭২ সালে করা সেই মামলার এজাহারের সার্টিফাইড কপিও উক্ত মামলার তথ্য ‘প্রদর্শনী-এ’ হিসেবে আমি নিজে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করলেও ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিলো না কেন? > বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের চাঞ্চল্যকর স্কাইপ কেলেঙ্কারি উদঘাটিত হওয়ার পর সেখানে দেখা যায়, নিজামুল হক নাসিম আল্লামা সাঈদীর মামলাটিকে একটি ‘গ্রাম্য সালিশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতেই কি বুঝা যায় না যে, আল্লামা সাঈদীর কথিত বিচারের নামে তামাশা করা হয়েছে? > ঢাকার গোলাপবাগে সরকারের বানানো ‘সেইফ হাউজে’ সাক্ষীদেরকে বারবার এনে দিনের পর দিন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন হলো, ঐসব সাক্ষী যদি ১৯৭১ সালে সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন এবং আল্লামা সাঈদীই যদি তাদের সেই ক্ষতির কারণ হয়ে থাকেন তাহলে সাক্ষীদেরকে দিনের পর দিন ‘সেইফ হাউজে’ এনে ট্রেনিং দিতে হবে কেন? সাক্ষীদের বারবার পিরোজপুর থেকে নিয়ে আসা ও ফেরত পাঠানো, তাদের থাকা-খাওয়ার যাবতীয় তথ্য সম্বলিত ‘সাক্ষী সেইফ হাউজের রেজিস্টার’ আদালতে উপস্থাপনের পরও প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার এই মামলায় করা এতো বড় জঘন্য জালিয়াতির ব্যপারে ট্রাইব্যুনাল কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করল না কেন? > পাক বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যারা স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকা রেখেছিল তাদের অপরাধমূলক কাজের শাস্তি বিধানের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি দালাল আইন জারি করে এ আইনের অধীনে প্রায় ১ লক্ষ লোককে দেশ স্বাধীনের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্য থেকে ৩৭,৪৭১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে থেকে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ২,৮৪৮ জনকে বিচারে সোপর্দ করা হলেও বিচারে ৭৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং বাকিদের খালাস দেয়া হয়। জন্মের পর থেকে বিগত ৭৬ বছরের মধ্যে আল্লামা সাঈদীর নামে বাংলাদেশের কোথাও কোন মামলা তো দূরের কথা সামান্য একটি জিডি পর্যন্ত ছিল না। জনতার আদালতে আল্লামা সাঈদী নির্দোষ প্রমাণিত আমি গত ২৩ মার্চ ২০১৪ পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছি। আমি যে এলাকা থেকে নির্বাচন করেছি সেই এলাকাটি নানা কারণে আলোচিত। অনেক কারণের মধ্যে প্রথম কারণ হলো, জিয়ানগর আমার আব্বা আল্লামা সাঈদীর জন্মস্থান। আর দ্বিতীয় কারণটি হলো, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের দায়ভার আমার আব্বার ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে আজীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে যেসব সাক্ষীদের মিথ্যা সাক্ষ্যে, তাদের সকলের বাসস্থানও এই জিয়ানগর। এই জিয়ানগর থেকে নির্বাচন করা আমার জন্য খুব সহজ বিষয় ছিল না। কিন্তু আল্লাহর রহমত ও দয়ার ওপর ভরসা করে আমরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই এই নির্বাচন করেছি। নির্বাচন করেছি এই কারণে যে, সারা দুনিয়ার মানুষ দেখুক আল্লামা সাঈদী যদি সত্যিই অপরাধী হন তাহলে জিয়ানগরের মানুষ তার সন্তান হিসেবে আমাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে আর যদি আল্লামা সাঈদী নিরপরাধ হন তাহলে এই জিয়ানগরের মানুষই তার সন্তান হিসেবে আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে দুনিয়াবাসীর কাছে প্রমাণ করবেন ‘আল্লামা সাঈদী নির্দোষ’। আল্লাহর মেহেরবানিতে জিয়ানগরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে গোটা বিশ্বে আল্লামা সাঈদীর নির্দোষিতা প্রমাণ করে দিয়েছেন। শেষ কথা সরকার যত অপপ্রচারই করুক, যত ষড়যন্ত্রই করুক, ইনশাআল্লাহ কোন কিছুই কুরআনের খাদেম আল্লামা সাঈদীকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। মহান আল্লাহ তায়ালা আপন করুণায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুন, নিরাপত্তার চাদরে আবৃত রাখুন, ষড়যন্ত্রকারীদের সকল ষড়যন্ত্র থেকে তাঁকে হেফাজতে রাখুন। ষড়যন্ত্রের সকল কালো পর্দা ভেদ করে কুরআনের স্নিগ্ধ আলোয় মুসলমানদের হৃদয় আলোকিত করুন, পবিত্র কুরআনের অমিয় বাণী শুনে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করুন সমগ্র বিশ্ববাসী। আমিন। লেখক : আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে ও চেয়ারম্যান, জিয়ানগর উপজেলা পরিষদ, পিরোজপুর

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির