post

রাজধানীতে যানজট নিরসনে অধিক ব্যয়ে ৭টি মেট্রোরেল ও বিআরটি শব্দ দূষণ ও ঝুঁকির আশঙ্কা

মেহেদী হাসান সিকদার

২৮ জানুয়ারি ২০১৬
রাজধানীর যানজট নিরসনে পাঁচটি মেট্রোরেল বা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) ও ২টি বাস র‌্যাটিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি)। ২০ বছর  মেয়াদী এসকল প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হবে ১ লাখ ৮১ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় অনেক বেশী ধরা হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া মেট্রোরেলে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকি হবে শব্দদূষণ। জানা গেছে, সংশোধিত এসটিপি বাস্তবায়নে ২০ বছরে ৫টি এমআরটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে উত্তরা-মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাধীন মেট্রোরেলটি এমআরটি-৬ নামে আশুলিয়া-কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর দিয়ে কমলাপুর হয়ে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল পর্যন্ত এমআরটি-১ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি আশুলিয়া-সাভার-গাবতলী-ঢাবি-ডিএসসিসি-কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি-২, কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এমআরটি-৪ এবং গাবতলী-মিরপুর-গুলশান-ভাটারা পর্যন্ত এমআরটি-৫ নামে একটি রিং মেট্রোরেল নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে আরএসটিপিতে। এই ৫টি মেট্রোরেলের মধ্যে ৩টি মেট্রোরেল দ্রুত নির্মাণ করতে হবে বলে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আরএসটিপির ৩টি মেট্রোরেল দ্রুত নির্মাণ করতে হবে। মেট্রোরেলের পাঁচটির রুটের মধ্যে বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল প্রকল্প চলমান রয়েছে, র‌্যাপিড ট্রানজিট-৬ (এমআরটি-৬) নামে পরিচিত। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সংশোধিত এসটিপিতে এমআরটি-৬ উত্তরা থেকে আশুলিয়া ও মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে মেট্রোরেলটির দৈর্ঘ দাঁড়াবে ৪১ কিলোমিটার। বাড়তি ২১ কিলোমিটার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৯ কোটি ডলার। প্রথম অংশের মতো বর্ধিত অংশও হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। উত্তরা-মতিঝিল ২০ কিলোমিটার ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হলেও বর্ধিত ২১ কিলোমিটার ২০৩৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। এমআরটি-১ গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে বিদ্যমান রেলপথ ধরে কমলাপুর হয়ে ঝিলমিল পর্যন্ত যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশ ২০২৫ সালে ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর হয়ে ঝিলমিল পর্যন্ত ২০৩৫ সাল নাগাদ নির্মাণ করতে হবে। প্রথম পর্যায়ের দৈর্ঘ হবে ২৬ দশমক ৬ কিলোমিটার, যার ৬ কিলেমিটার হবে মাটির নিচে ও বাকি অংশ উড়ালপথে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের দৈর্ঘ হবে ৫২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪২ দশমিক ৭ কিলোমিটার উড়ালপথে ও ৯ দশমিক ৩ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করতে হবে। প্রথম পর্যায়ের জন্য ব্যয় হবে ২৮৩ কোটি ডলার ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫৮৭ কোটি ডলার। এমআরটি-২ এর সম্ভাব্য রুট ধরা হয়েছে আশুলিয়া থেকে শুরু করে সাভার, গাবতলী হয়ে মিরপুর রোড দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবনের (নগর ভবন) সামনে দিয়ে কমলাপুর পর্যন্ত। পুরোটাই উড়ালপথে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ মেট্রোরেলের দৈর্ঘ হবে ৪০ কিলোমিটার ও ব্যয় ৩৭৫ কোটি ডলার। এমআরটি-৪ নির্মাণ করতে হবে কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত। উড়ালপথে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেলটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৪ কোটি ডলার। এমআরটি-৫ হবে অনেকটা রিং মেট্রোরেল। এটি নির্মাণ করতে হবে ভুলতা থেকে বাড্ডা, মিরপুর সড়ক, মিরপুর-১০, গাবতলী বাস টার্মিনাল, ধানমন্ডি, বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) হয়ে হাতিরঝিল লিঙ্ক রোড পর্যন্ত। এটি মূলত এমআরটি-১, ২, ৪ ও ৬কে যুক্ত করবে। ৩৫ কিলোমিটার এ মেট্রোরেলটি ৯ দশমিক ১ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে ও ২৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার উড়ালপথে নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এজন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪২৮ কোটি ডলার। অর্থায়ন রাজধানীর যানজট নিরসনে পাঁচটি মেট্রোরেল ও ২টি বিআরটি নির্মাণে বিনিয়োগ করতে হবে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫টি মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হবে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এর অংশ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার নির্মাণ কাজ চলছে। এই অংশের অর্থায়ন করছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। এছাড়া এমআরটি-১ এর বিমান বন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের অর্থায়ন করতে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে এই অংশের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর প্রকল্পটির প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় জাইকা। এতে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল নির্মাণ সম্পন্ন হলে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াতে সময় লাগবে ২৩ মিনিট। কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ হবে ১২ দশমিক ৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে খিলক্ষেত থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক হয়ে বারিধারা ও মালিবাগ হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার হবে মাটির নিচে। বাকি অংশ হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। পুরো পথে স্টপেজ থাকবে ১১টি। এর মধ্যে যমুনা ফিউচার পার্ক, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর চারটি হবে মাটির নিচে। আর বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, বারিধারা, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল ও রামপুরার স্টপেজ সাতটি হবে উড়ালপথে। ২০২৫ সালের মধ্যে এ অংশ শেষ করার কথা বলা হয়েছে। পূর্বাচলকে মেট্রোরেল সুবিধার আওতায় আনতে পরবর্তীতে এটিকে বারিধারা থেকে পূর্বাচলে সম্প্রসারণের সুপারিশও করা হয়েছে। এ অংশ হবে উড়ালপথে। প্রায় ১৪ কিলোমিটার অংশে পাঁচটি স্টপেজ থাকবে। এগুলো হলো- বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল কেন্দ্র ও পূর্বাচল টার্মিনাল। বর্ধিত অংশটুকু ২০৩৫ সালের মধ্যে শেষ করার কথা বলা হয়েছে। পুরো প্রকল্প সম্পন্ন হলে দৈনিক ১৩ লাখ ৬৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে এ মেট্রোরেলে। এতে জমি অধিগ্রহণ ছাড়া এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮২ কোটি ৬৯ লাখ ডলার বা ২২ হাজার ৫০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে ঋণ দিতে প্রাথমিকভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে জাইকা। আর জমি অধিগ্রহণে আরো প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ অর্থ সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে। এছাড়া গাবতলী-মিরপুর-গুলশান-ভাটারায় আরেকটি মেট্রোরেল নির্মাণেও সম্ভাব্যতা যাচাই করছে জাইকা, যা এমআরটি-৫ নামে পরিচিত। এটি নির্মাণেও আগ্রহী জাইকা। পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) এমআরটি-৫ অর্থায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ স্থাপনে গাবতলী-মিরপুর-গুলশান-ভাটারা মেট্রোরেলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এটি নির্মাণে সেনানিবাস অতিক্রম করতে হবে বিধায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করা হচ্ছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর গাবতলী-মিরপুর-গুলশান-ভাটারা রুটের মেট্রোরেলের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন জমা দেয় জাইকা। এতে বলা হয়, মেট্রোরেলটি আংশিক উড়ালপথে ও আংশিক মাটির নিচে নির্মাণ করতে হবে। এক্ষেত্রে গাবতলী থেকে শুরু হয়ে টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪ পর্যন্ত উড়ালপথে নির্মাণ করতে হবে। এর পর মাটির নিচে চলে যাবে রেলপথটি। সেখান দিয়ে কচুক্ষেত, সেনানিবাস, বনানী, গুলশান-২ পেরিয়ে আবার উঠবে রেলপথটি। এর পর উড়ালপথে নতুন বাজার হয়ে ভাটারা পর্যন্ত যাবে। ২০৩৫ সালে মেট্রোরেলটি চালুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ রুটে স্টেশন থাকবে ১০টি। এগুলো হলো- গাবতলী, দারুস সালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২, নতুন বাজার ও ভাটারা। এর মধ্যে কচুক্ষেত, বনানী ও গুলশান-২ স্টেশন হবে মাটির নিচে। মেট্রোরেলটির দৈর্ঘ হবে ১৩ দশমিক ২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭ দশমিক ৮ কিলোমিটার উড়ালপথে ও ৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করতে হবে। মূলত সেনানিবাস অতিক্রম ও বনানী-গুলশান-২ সড়কটি সরু হওয়ায় কিছু অংশ মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে চাইলে পুরো পথটি মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করা যাবে। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, কিছু অংশ মাটির নিচে ও বাকি অংশ উড়ালপথে নির্মাণ করলে মেট্রোরেলটি নির্মাণে ব্যয় হবে ২২৩ কোটি ডলার বা ১৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। তবে পুরোটা মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করতে সম্ভাব্য ব্যয় হবে ২৭৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ২১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। গাবতলী-ভাটারা রুটের মেট্রোরেলটি পরে আদাবর, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল হয়ে আফতাবনগর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সুপারিশও করেছে জাইকা। এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জাপান সফরকালে ঢাকায় নতুন দুটি মেট্রোরেল নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সে সময় তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। এরই মধ্যে মেট্রোরেলটি নির্মাণে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে জাইকা। সংশোধিত এসটিপি পাস হওয়ার পরই এগুলোর কাজ শুরু করা হবে। মেট্রোরেলের ঝুঁকি শব্দদূষণ মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনায় নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে পরিবেশ দূষণ ছাড়াও রয়েছে ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও ঝুঁকি রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে শব্দ দূষণের। এজন্য নিতে হবে প্রতিকারমূলক নানামুখী ব্যবস্থা। সম্প্রতি প্রকাশিত মেট্রোরেলের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জাপানের নিপ্পন কোয়াইয়ের নেতৃত্বে ছয়টি প্রতিষ্ঠান মেট্রোরেলের পরিবেশগত সমীক্ষা পরিচালনা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত মেট্রোরেলের শব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হবে। নষ্ট হবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সৌন্দর্য। এসব দাবিতে মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে ইআইএ প্রতিবেদন প্রকাশ করল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনটির ওপর জনমত আহ্বান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শিগগিরই তা চূড়ান্ত করা হবে। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকালে পরিবেশগত বিভিন্ন বিষয় সামনে আসবে। এক্ষেত্রে প্রথমেই থাকছে শব্দ, কম্পন ও বায়ুর গুণগত মান। এর মধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার সময় প্রচন্ড শব্দ তৈরি হতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমনটা হয়েছে। নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে এজন্য প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে। ঢাকা শহরেও মেট্রোরেল নির্মাণকালে প্রকল্প এলাকায় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চার ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে থাকছে ২০০৬ সালের শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন মেনে চলা, শব্দের মাত্রা জাপানি আদর্শ মান তথা ৮৫ ডেসিবলের মধ্যে রাখা ও কম শব্দ উৎপন্ন হয় এমন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা। পাশাপাশি নির্মাণ এলাকার চারপাশে শব্দ প্রতিবন্ধক (ব্যারিয়ার) ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে। মেট্রোরেল পরিচালনাকালে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী শব্দের মাত্রা বাণিজ্যিক এলাকায় ৭০ ডেসিবল ও আবাসিক এলাকায় ৬০ ডেসিবলের মধ্যে রাখা, শব্দহীন রেলপথ ব্যবহার করা, রেলপথের (ট্র্যাক) পাশে শব্দ প্রতিবন্ধক ব্যবহার করা, দৃঢ়ভাবে যুক্ত লম্বা ট্রাক ব্যবহার ও বাঁক নেয়া এলাকাগুলোয় ট্রেনের গতি সীমিত রাখা এর মধ্যে অন্যতম। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হলে প্রকল্প এলাকার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ভবনের কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না বলে ইআইএতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মেট্রোরেলের শব্দ দূষণ নিয়ে চিন্তিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, মেট্রোরেলের রুটটি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মধ্য দিয়ে যায় তবে গোটা ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হবে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চারুকলা, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকা। মেট্রোরেলের শব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও দোয়েল চত্বরের পাশে বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হবে। তবে এ ধারণা সঠিক নয় বলে মনে করছেন না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকালে সম্ভাব্য সব ধরনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এজন্য ইআইএতে বেশকিছু সুপারিশও রয়েছে। যেমনÑসোজা পথে মেট্রোরেলের গতি ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার হলেও বাঁক নেয়া জায়গায় তা ২০০ মিটার পর্যন্ত নামিয়ে আনা হবে। উন্নত প্রযুক্তির শব্দহীন ট্র্যাক ব্যবহার করা হবে। এর পরও কিছুটা শব্দ উৎপন্ন হতে পারে। এক্ষেত্রে ট্র্যাকের দুই পাশে শব্দ প্রতিবন্ধক ব্যবহার করা হবে। ইআইএর তথ্যমতে, মেট্রোরেল নির্মাণকালে কম্পন সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। তবে এর মাত্রা ৯০ ডেসিবলের মধ্যে রাখতে উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি মেট্রোরেলের ডিপোর আশপাশে ভবন অপসারণ করতে হবে। আর পরিচালনাকালে কম্পনের মাত্রা ৬০ ডেসিবলের মধ্যে রাখতে হবে। এজন্য গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, কম্পনমুক্ত ট্র্যাক ব্যবহার ও স্পর্শকাতর অবকাঠামো থেকে পিলার দূরে নির্মাণ করতে হবে। তবে উন্নত প্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিক ট্রেন ব্যবহারের কারণে মেট্রোরেলের জন্য কোনো ধরনের বায়ু দূষণের সম্ভাবনা নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ভূমিকম্পে মেট্রোরেলের ভায়োডাক্টের (উড়ালপথ) ক্ষতি প্রতিরোধে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। এতে ৮-৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও মেট্রোরেলের পিলার বা ভায়োডাক্ট ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। এদিকে মেট্রোরেল নির্মাণকালে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে ইআইএতে উঠে এসেছে। একইভাবে নির্মাণকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। আর অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোয় পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, মেট্রোরেলের পরিবেশগত প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ দূষণ। খামারবাড়ি ও শাহবাগে তিনটি হাসপাতাল আছে মেট্রোরেলের পাশে। তাই ইআইএতে এ বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যাবে। তাই শিক্ষার পরিবেশকেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যথাসম্ভব কম প্রভাবিত করেই এটি নির্মাণ করা হবে। তাই শিক্ষার্থীদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি। বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) রাজধানীর যানজট মুক্ত ও ঢাকার আশপাশ জেলার সাথে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তৈরি করা হচ্ছে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। বিআরটি চালু করার জন্য গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত চার লেন বিশিষ্ট ২০ কিলোমিটার বাসের পৃথক লেন, ৩১টি স্টপেজ ও গাজীপুরে ১টি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। কিছু সড়ক প্রশস্ত, সার্ভিস সড়ক ও গাজীপুরে ৩ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পটির আওতায় ৮ লেন বিশিষ্ট টঙ্গী সেতু ও ৭টি মোড়ে ফ্লাইওভার নির্মাণেরও কথা রয়েছে।  গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত নভেম্বরে প্রকল্পটির বিস্তারিত নকশা চূড়ান্ত করা হয়। বর্তমানে এর ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে বাড়ানো হচ্ছে দ্রুতগতির এ বাস সার্ভিস নির্মাণ ব্যয়। প্রকল্পটির ব্যয় এক হাজার বৃদ্ধির প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়। সূত্র জানায়, প্রকল্প অর্থায়নকারি সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে গত ২৭-২৮ জানুয়ারি বিআরটি প্রকল্প নিয়ে বৈঠক করে বাস্তবায়নকারি সংস্থা সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। সেখানে বিআরটি প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি প্রকল্পটিতে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়। তবে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সংস্থাটি। তবে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মিতব্য বিআরটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তবে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ছে ৯৭০ কোটি টাকা বা ৪৭ শতাংশ বলে সড়ক ও জনপথ (সওজ)’র সূত্র জানায়। এ ব্যাপারে বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক মো. আফিল উদ্দিন বলেন, প্রকল্পটির বিস্তারিত নকশার ভিত্তিতে ব্যয় পুর্নমূল্যায়ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ৭টি ফ্লাইওভার দুই লেনের পরিবর্তে চার লেন করা হচ্ছে। মূলত এজন্য ব্যয় বাড়ছে। এডিবি বাড়তি ব্যয়ের অর্থ সংস্থান না করলে সরকারের তহবিল থেকে সরবরাহের প্রস্তাব করা হবে। সওজ’র সূত্র জানায়, বিআরটি নির্মাণে ১ হাজার ৬০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এডিবি, এজেন্সি ফ্রান্স ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)। আর ৪৩৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করার কথা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআরটি ব্যবস্থা চালুতে খুব বেশি কাজের প্রয়োজন হয় না। বিদ্যমান সড়কের দুই পাশে ডিভাইডার (সড়ক বিভাজক) দিয়ে বাসের জন্য পৃথক লেন করলেই চলে। আর বাসে ওঠানামার জন্য কিছু স্টপেজ তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে ভূমি থেকে দুই-তিন ফুট উঁচুতে ছাউনির ব্যবস্থা করতে হয়। বাস স্টপেজের সামনে থামার পর সোজা হেঁটে তাতে উঠে যান যাত্রীরা। আর চলাচলের রুটের মধ্যে কোনো জংশন (মোড়) থাকলে সেখানে বিআরটির বাসকে প্রাধান্য দেয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি মোড়ে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা স্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। বাস মোড়ের কাছাকাছি আসার পর সিগন্যাল বাতি জ্বলে। এতে মোড়ে অন্যান্য যানবাহন বন্ধ করে বিআরটির বাসকে আগে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। ফলে বিআরটি নির্মাণে ব্যয় অনেক কম হয়। তবে বাংলাদেশে বিআরটি নির্মাণ খুবই ব্যয় বহুল হচ্ছে বলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বিআরটি নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয় ১০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বিমানবন্দর সড়ক থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রস্তাবিত বিআরটির জন্য কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ১০২ কোটি টাকা। এখন ব্যয় আরো বাড়লে তা আরো বাড়বে। বুয়েটের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বিশ্বে প্রথম বিআরটি চালু হয় ব্রাজিলের কুরিতিবা শহরে ১৯৭৪ সালে। ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্যাবস্থাটি চালু করতে সে সময় ব্যয় হয় ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারে ব্যয়ের পরিমাণ ১৫ লাখ ডলার। ২০১১ সালে একই শহরে নতুন আরেকটি বিআরটি চালু করা হয়। এতে ব্যয় হয় কিলোমিটারপ্রতি ২৫ লাখ ডলার। কলাম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় বিআরটি ব্যবস্থা চালু করা হয় ২০০০ সালে। ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পে ব্যয় হয় ২১ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা কিলোমিটারপ্রতি ৫৩ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাসে ২০০৪ সালে চালু করা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বিআরটির দৈর্ঘ প্রায় ১১ কিলোমিটার। এতে ব্যয় হয় প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ডলার, কিলোমিটারপ্রতি যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ লাখ ডলার। ব্রাজিলের সাওপাওলোয় ২০০৫ সালে ১১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আরেকটি বিআরটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৩৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। কিলোমিটার হিসাবে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০০৮ সালে ইকুয়েডরের কুইটো শহরে ৩৭ কিলোমিটার বিআরটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২ কোটি ২২ লাখ ডলার। কিলোমিটারপ্রতি যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ লাখ ডলার। এছাড়া ২০১০ সালে তাইওয়ানের তাইপে শহরে বিআরটি চালু করা হয়। ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ব্যবস্থা নির্মাণে ব্যয় হয় ২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার বা কিলোমিটারপ্রতি ৫ লাখ ডলার। এদিকে নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে ২০১২ সালে আহমেদাবাদে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি চালু করেন। এতে ব্যয় হয় ১৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রতিবেশ দেশটিতেও এ ব্যবস্থা চালু করতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ১৯ লাখ ৩১ হাজার ডলার। আর ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ব্রাজিলের পোর্তো অ্যালেগ্রে শহরে ৩৭ দশমিক ৪ কিলোমিটার বিআরটি চালু হয় গত ১৪ মার্চ। এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। কিলোমিটারপ্রতি যার পরিমাণ ১০ লাখ ডলার। জানতে চাইলে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থায় বিআরটি সবচেয়ে কম ব্যয়সম্পন্ন পদ্ধতি। খুব বেশি জটিলতা না থাকায় খুব দ্রুতই এটি চালু করা যায়। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয় ১০ থেকে ৩০ লাখ ডলার। তবে বাংলাদেশে এটা অনেক বেশি হচ্ছে। মূলত অপরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থায় বিআরটি চালু করার কারণেই ব্যয় বেশি পড়ছে। লেখক : সাংবাদিক

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির