post

শহীদ রায়হান খন্দকারকে যেমন দেখেছি

১০ ফেব্রুয়ারি ২০১২
আতিকুর রহমান পৃথিবীতে মানুষের জন্মের সাথে মৃত্যুর অমোঘ সত্যি চিরন্তন। প্রতিটি মানুষের জীবন এক সময় থমকে যেতে বাধ্য। কিন্তু সেটি কখন, কোন অবস্থায়,  কোন স্থানেÑ তা থাকে সকলেরই অজানা। তথাপিও মানুষ ছুটতে থাকে তার লক্ষ্যপানে, পেতে চায় পৃথিবীকে হাতের মুঠোয়। ‘প্রত্যেক মানুষ মরণশীল’Ñ এটি স্রষ্টার এক চিরন্তন বাণী হলেও কিছু মৃত্যু মানুষকে জীবিত রাখে অনাদি-অনন্তকাল। তাইতো বলতে  শোনা যায়, জন্ম হোক যথাতথা মৃত্যু হোক ভালো। সন্তান জন্মের পরই প্রতিটি মা-বাবা তার ছোট্ট শিশুটিকে নিয়েই পর্বতসম কখনো বা আকাশসম আকাক্সক্ষা বুকে ধারণ করে অবুঝ শিশুটিকে পিতৃ-মাতৃস্নেহে বড় করে তোলার অবিরত সংগ্রাম চালিয়ে থাকেন। মা-বাবার স্বপ্নের আকাশে উড়ে বেড়ায় তাদের ছোট্ট শিশুটি।  সময়ের ব্যবধানে সেই শিশুটিই তার  কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের উত্তাল তরঙ্গে সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের আকাশে বাস্তবে উড়ে বেড়ানোর প্রতিচ্ছবি দেখাতে দীপ্তমান থাকে। নিশ্চয়ই তেমনি একটি  আশার বীজ বুকে ধারণ করেছিলেন শহীদ রায়হান খন্দকারের গর্বিত মা ও বাবা। কিন্তু হঠাৎ করেই থমকে গেল সব আশা, নিমিষেই  উবে গেল আকাক্সক্ষার অতৃপ্ত মশাল। শহীদ রায়হান খন্দকার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১২২তম শহীদ। ১৯৮৬ সালের ২৮ অক্টোবর দিনের কোন এক  শুভক্ষণে পৃথিবীতে আলো ছড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ শহরের বুকে নন্দীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ২০০৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি শহীদ রায়হান খন্দকার চলে গেলেন তার মহান প্রভুর সান্নিধ্যে শাহাদাতের মর্যাদা নিয়ে। এত কম বয়সে রায়হান খন্দকারের জীবন এত উজ্জ্বল প্রতিভায় দীপ্তমান ছিল যে, সকলকে কাঁদিয়ে হাসতে হাসতে তিনি চলে গেলেন ওপারের সুন্দর ভুবনে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে শহীদ রায়হান খন্দকার ছিলেন সবার বড়। তার বাবা খন্দকার আব্দুল বাতেন ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। সন্তানদেরকে আদর্শিক বলয় ও যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় বসবাস করে আসছিলেন। শহীদ রায়হান খন্দকারকে ভর্তি করেছিলেন বাড্ডা আলাতুন্নেসা হাইস্কুলে। শাহাদাৎ কালীন সময় শহীদ রায়হান খন্দকার এ প্রতিষ্ঠানে দশম শ্রেণীতে (বাণিজ্য বিভাগে) পড়ালেখা করছিলেন। শহীদ রায়হান খন্দকারের সাথে আমার পরিচয় ২০০৩ সালের শুরু থেকে। তখন  সে ছিল সংগঠনের কর্মী। শহীদের শ্রদ্ধেয় মা ও বাবা আদর্শিক মূল্যবোধে বলীয়ান থাকার কারণে বলা যায় পারিবারিকভাবে সংগঠন করার তাগিদ ছিল সবসময়। মনে পড়ে, আমাদের শ্রদ্ধেয়া মা অনেকবার আমাদেরকে অনুরোধ করেছেন তাঁর দুই ছেলেকে (রায়হান ও জাকির) কে খুব শিগগিরই সম্ভব সাথী করার জন্য। মা-বাবার আন্তরিকতার কারণে প্রায়ই আমরা বাসায় যেতাম তার সন্তানদের  খোঁজখবর নেয়ার জন্য। সন্তানদেরকে আল্লাহর দ্বীনের পথের অকুতোভয় সৈনিক বানানোর জন্য একজন মায়ের মধ্যে কী পেরেশানিই না কাজ করেছিল, তা সত্যিই ভাববার বিষয়। শহীদের বাবা মনে মনে কামনা করেছিলেন তার সন্তান একদিন ইসলামী আন্দোলনের বড় দায়িত্বশীল হবে, বড় বড় সমাবেশে বক্তব্য রাখবে, বাতিলের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ আওয়াজ তুলবে আর তা দেখে তিনি তার চক্ষু শীতল করবেন। একজন গর্বিত বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করবেন। শাহাদাৎ-পরবর্তী সময়ে সন্তানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আমাদের শ্রদ্ধেয় বাবা আব্দুল বাতেন প্রায়ই এই কথাগুলো বলতেন। মা ও বাবার প্রত্যাশা আল্লাহ কবুল করেছেন। যদিও তা দুনিয়ায় না হয়ে আখেরাতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের নিষ্পাপ ছেলের শাহাদাতের বিনিময়ে আখেরাতে নিশ্চয়ই শহীদের মা-বাবা হিসেবে অনেক বেশি মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করবেন। ২০০৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর জেলার টঙ্গীস্থ তামীরুল মিল্লাত মাদ্রাসার মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ঢাকা বিভাগীয় সাথী সম্মেলন। ছাত্রশিবিরের জনশক্তিদের জন্য এই সম্মেলনটি ছিল অনেক বেশি আকাক্সক্ষা ও আবেগের। সাধারণত ছাত্রশিবিরের সদস্য সম্মেলন প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়। সাথী সম্মেলন নিয়মিত কোনো কর্মসূচি নয়। মাঝে মাঝে সংগঠন বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে এ সম্মেলন আয়োজন করে থাকে। সম্মেলনের খবর শোনা মাত্রই শহীদ রায়হান খন্দকার ও তার  ছোটভাই জাকির খন্দকার একাধিকবার আমার কাছে এ সম্মেলনে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। রায়হান বললো, এত বড় সুন্দর সম্মেলন হবে অথচ আমরা যেতে পারবো না কেন? আমিতো সাথী প্রার্থী হয়েছি কিছু দিন পরতো সাথী হবোই। আমি বারবারই বলে আসছিলাম, এ সম্মেলন তো তোমাদের নয়। এক দিকে তোমরা  এখনো সাথী হওনি আর অন্য দিকে তোমরা বয়সে ছোট। এত বড় সম্মেলনে আমরা তোমাদের দেখাশোনা করতে পারবো না। কিন্তু দুই ভাই তাদের সিদ্ধান্তে অটল। তাদের দাবি একটাইÑ আমাদেরকে সম্মেলনে নিতেই হবে, প্রয়োজনে আমরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করব। আমার কাছে থেকে হ্যাঁ-সূচক সম্মতি আদায় করতে না পেরে তারা তাদের মায়ের মাধ্যমে আশরাফ আলী কাজল  (বাড্ডা থানার সাবেক সভাপতি) ভাইয়ের শরণাপন্ন  হয়। সর্বশেষ প্রচেষ্টায় কাজল ভাই তাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন। তাদেরকে সম্মেলনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেল। সম্মেলনের দিন সকাল থেকেই শহীদ রায়হান খন্দকার মাদরাসার গেট থেকেই মূল ভবন পর্যন্ত রাস্তায় পানি ছিটিয়ে ঝাড়– দিচ্ছিলেন। বয়সে ছোট হলেও দুই ভাই মিলে দীর্ঘক্ষণ  অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিল। কাজ শেষে দুই ভাই দায়িত্বশীলকে বলে  গোসল করতে যায়।  তাদের সাথে আরো অনেকে তখন গোসল করছিল। সাঁতার কাটার একপর্যায়ে রায়হান খন্দকার সকলের অজান্তে গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর চারদিকে খোঁজাখুঁজির শুরু হয়।  কোথাও কিশোর মুজাহিদ রায়হানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ পর নিশ্চিত হওয়া যায় রায়হান খন্দকার পুকুর থেকেই ওঠেনি। এক দিকে সম্মেলনের কার্যক্রম চলছে, অন্য দিকে দায়িত্বশীলদের মাঝে অজানা আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে। তাহলে কী ঘটতে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় ভাই রায়হান খন্দকারের! সম্মেলনের কোনো ডেলিগেটদের বিন্দুমাত্র বুঝতে দেয়া হয়নি।  অনেক দায়িত্বশীল ভাইকে পানিতে নামিয়ে দেয়া হল কিন্তু রায়হান খন্দকারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে ডুবুরি এসে প্রায় ৩০ মিনিট পর আমাদের প্রিয় ভাই রায়হান খন্দকারের প্রাণহীন নিথর দেহ পানির গভীর থেকে তুলে নিয়ে আসল। এ কী করলেন রাব্বুল আলামিন!  এক ঘণ্টা আগেও যে কিশোর তার রবকে খুশি করার জন্য পেরেশানির সাথে দ্বীনি আন্দোলনের কর্মসূচি সুন্দরভাবে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছিল, সে কি না এখন তার রবের সান্নিধ্যেই চলে গেল। কিছুতেই আবেগকে সামলাতে পারিনি এ কথা ভেবে যে, কী জবাব দেবো শহীদ রায়হান খন্দকারের মা-বাবাকে। সম্মেলনে তখন ছিল পিনপতন নীরবতা। দায়িত্বশীলদের চেহারায় কান্নার চিত্র। কিন্তু কাউকে বুঝতে দিচ্ছেন না। সম্মেলনের শেষ দিকে যখন শহীদ রায়হান খন্দকারের শাহাদাতের সংবাদ মাইকে ঘোষণা করা হল তখন সম্মেলনের আগত ডেলিগেটদের কেউ-ই তাদের চোখের অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। মুহূর্তের মধ্যেই উচ্ছ্বাসের সম্মেলনে কান্নার রোল পড়ে গেল। এ যেন ছিল এক ভিন্ন রকমের দৃশ্য! কেন্দ্রীয় সভাপতি সেলিম উদ্দিন ভাই যখন মুনাজাত করছিলেন টঙ্গীর মাঠের সেই কান্নার আওয়াজ যেন আকাশ-বাতাসকে প্রকম্পিত করে তুলেছিল। ইসলামী আন্দোলনের একজন ভাইকে আরেকজন ভাই যে কত গভীরভাবে ভালোবাসেন, সে দিন তা আবারও প্রমাণিত হলো। মহান আল্লাহ শহীদ রায়হান খন্দকারকে কবুল করেছিলেন বিধায় তার শাহাদাতের স্থানে আসার জন্য সে ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিল। মানুষ যেমন ফুলবাগানে গেলে সুন্দর গোলাপকে তার নিজের জন্য বাছাই করে নেয়, তেমনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার সৃষ্টির মাঝে ফুটন্ত গোলাপগুলোকে বাছাই করে পরকালীন জীবনে উত্তম মর্যাদা দেয়ার জন্য শহীদ হিসেবে কবুল করেন। শাহাদাতের ৬ মাস আগে থেকেই রায়হান বারবার বলে আসছিল, ভাই আপনাদেরকে আমাদের ময়মনসিংহের বাড়িতে নিয়ে যাব, সেখানে অনেক কিছু দেখার আছে। আমি বলেছিলাম, দায়িত্বশীলরা কোন কর্মীর বাড়িতে বেড়াতে যায় না তবে শর্ত মানলে আমরা যাব। তুমি তাড়াতাড়ি সাথী হও। উত্তরে মৃদু হেসে রায়হান বলল, ভাই সাথীতো হবোই। ইসলামী আন্দোলন ও ছাত্রশিবির করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আজ যখন রায়হানকে নিয়ে এ কথাগুলো লিখছিম, তখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়। যে কর্মীর অনুরোধ তার জীবিত অবস্থায় আমরা রাখার চেষ্টা করিনি কিন্তু তার শাহাদাতের পর ঠিকই আমরা তার কফিনের সাথে গিয়েছি। বাড়িতে গিয়ে দেখি আরেক অবর্নাতীত দৃশ্য। আত্মীয়স্বজনদের সবাই যেন তাদের মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলেন। ঢাকায় থাকলেও অল্প বয়সে রায়হান তার গ্রামের সকল পর্যায়ের মানুষের হৃদয়ের স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তা তার জানাযায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণেই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম। তার দো’য়ার অনুষ্ঠানে যখন তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাই গিয়ে ছিলেন, এলাকা বাসির কান্নার আওয়াজ আজও আমাদের আবেগাপ্লুত করে। সত্যিই আমরা কী সম্পদ হারিয়েছি। সত্যের মশাল প্রজ্বলিত করার প্রত্যয় নিয়ে যে কিশোর তার জীবনকে ধীরে ধীরে আলোয় উচ্ছাসিত তরঙ্গমালাল ন্যায় গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় লিপ্তছিল, আলো বিচ্ছুরিত হওয়ার পূর্বেই যেন সে হারিয়ে গেল। সত্যিই শহীদ রায়হানকে হারিয়ে ছাত্রশিবির তার আন্দোলনের এক সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারিয়েছে। ছাত্রশিবিরকে নিয়ে শহীদ রায়হান খন্দকার যে পেরেশান ছিল তা আজও আমাদেরকে অনেক অনুপ্রাণিত করে। স্কুলের তার সমকক্ষ ছাত্রদের দাওয়াত দেয়ার জন্য প্রত্যেহ বিকেল বেলা সময় সে বাছাই করত। মাঝে মাঝে যখন তার টার্গেটকৃত ছাত্রদের খবর নিতাম, তখন দেখতাম তার টার্গেটের মধ্যে অনেক উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র ও বিধর্মী ছাত্রও ছিল। একদিন আমি ধমক দিয়ে বললাম, নিজের মানোন্নয়ন না করে এ ধরনের ছাত্রকে টার্গেট নিলে তোমার মানও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। রায়হান বলল, ভাই ঠিক বলেছেন, কিন্তু তাদের মাঝেও তো আমাদের কাজ করতে হবে। সংগঠনের উপশাখা দায়িত্বশীল হিসেবে সে চেষ্টা করতো তার কাজকে সুন্দরভাবে করার জন্য। শহীদ রায়হান খন্দকারের শাহাদাতের পর সবচেয়ে বেশি অভিভূত হয়েছি মায়ের ভূমিকা দেখে। মা নিজেকে একজন শহীদের মা হিসেবে গর্বিত মনে করে অনেকটাই শোককে প্রশমিত করেছিলেন। শহীদের বাবা আব্দুল বাতেন বলেছিলেন, আল্লাহ অনেক ছেলের মধ্যে আমার ছেলেকে বাছাই করেছেনÑ এটা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে নিয়ামত আমাকে দিয়েছেন, তিনিই আবার আমার কাছ সেই নিয়ামতকে নিয়ে গেছেন। দোয়া কর আমরা যেন সবর করার মধ্য দিয়েই হাশরের ময়দানে সেই সবরের মর্যাদা পাই। ইসলামী ছাত্রশিবির একটি শহীদী কাফেলার নাম। ইতোমধ্যে ১৩৬ জন তরুণ-যুবক এ কাফেলার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে শহীদী কাফেলাকে তার মঞ্জিলে পৌঁছার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। বাতিলের বিরুদ্ধে আমাদের গর্জে ওঠা, বিপদসঙ্কুল পথে অটল-অবিচল থাকা, বাংলার জমিনে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সকল অপপ্রচার অপবাদ, ষড়যন্ত্র, জুলুম-নির্যাতন, জেল-জুলুম, মামলা-হামলা উপেক্ষা করে আমাদেরকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মনে করতে হবে আমাদের হারানোর বা ক্ষতির কিছু নেই। বাতিল শক্তি তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা-প্রচেষ্টা, রাষ্ট্রীয় শক্তি ও ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদেরকে হয়তোবা শেষ করে দেয়ার কূটকৌশলে লিপ্ত হয়েছে কিন্তু যে জমিনে আল্লাহর দ্বীনের মুজাহিদদের রক্ত ঝরেছে, যে জমিন শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, যে জমিনের লাখো তরুণ-যুবক গভীর রাতে আল্লাহর কাছে শাহাদাতের মর্যাদা পাওয়ার জন্য চোখের পানি জায়নামাজে ফেলছে, তাদের সাথে আল্লাহর সাহায্য অবধারিত। আল্লাহ মজলুমের সাথে আছেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জুলুমবাজদের ক্ষমতা বেশি দিন টিকে থাকে না। সময়ের ব্যবধানে তাদের পতন অনিবার্য, যেমন পতন হয়েছিল আবু জেহেল, আবু লাহাব, উতবা, শায়বা, মীরজাফর ও ঘসেটি বেগমদের। সুতরাং সকল বাধা উপেক্ষা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শাহাদাতের তামান্না বুকে ধারন করে ময়দানে দৃঢ়তার সাথে ভূমিকা রাখতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে জুলুম-নিপীড়নকে হাসিমুখে বরণ করে নিয়ে আদর্শের ঝাণ্ডাকে উচ্চকিত করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে মঞ্জিলের পথে এগিয়ে যাওয়ার তাওফিক দিন। লেখক : কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির