post

সম্পাদকীয়

৩১ অক্টোবর ২০১৫

রাজনীতির নামে অতি বাড়াবাড়ি মানুষ পছন্দ করে না। সেটা ২৮ অক্টোবর ২০০৬-এ লগি-বৈঠার তাণ্ডব, হরতালের নামে বিরোধী দলের গাড়ি পোড়ানো, মানুষ হত্যা অথবা হরতাল প্রতিরোধের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি তৎপরতা যাই হোক না কেন। ছাত্ররাজনীতিরও একই অবস্থা। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের পেশিশক্তির নানান ঘটনা প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে। অস্ত্রসহ ক্যাডারদের ছবি পত্রিকায় আসাকে কেউ কেউ গৌরবের বিষয় মনে করে। কারণ প্রভাবশালী না হলে তো পত্রিকায় ছবি আসে না। চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেওয়ার পর যুবলীগের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় সরকার। ছাত্রলীগের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায়। প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, ‘কোনো নালিশ শুনতে চাই না। ছাত্রলীগের পর যুবলীগ ধরেছি। সমাজের অসঙ্গতি এখন দূর করব। একে একে এসব ধরতে হবে। জানি কঠিন কাজ, কিন্তু আমি করব।’ গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যুবলীগ পরিচালিত অবৈধ জুয়ার আস্তানাগুলোতে অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব। বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রসহ দলীয় নেতা, দেশি-বিদেশি মুদ্রা, মাদকদ্রব্য, নগদ কোটি কোটি টাকা, ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, মহিলাকর্মীসহ মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার, অন্যান্য অবৈধ অর্থসম্পদ উদ্ধার করার দৃশ্য দেখে এ জাতি হতবাক। অন্যদিকে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির নির্দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা বাংলাদেশকে করেছে কলঙ্কিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে দেড় কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও যুবলীগের অপকর্মের হোতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

সম্প্রতি আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে শুধুমাত্র আসামেই বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৬১ জন আবেদনকারীর মধ্যে এনআরসি তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লক্ষ ২১ হাজার ৪ জন। আসামের পরে পশ্চিমবঙ্গেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তৈরির ঘোষণা করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি। এনআরসির পেছনে সরকারের যুক্তি হলো ভারতের রিসোর্স খুবই লিমিটেড কিন্তু অবৈধ অভিবাসীর কারণে তাও ভোগ করতে পারছে না তারা। তাই অবৈধ অভিবাসী দেশ থেকে বের করে দিতে হবে। এনআরসির বিরোধিতা করে আসছে ভারতের সাধারণ নাগরিকসহ বিরোধী দলগুলো। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন যে তার রাজ্যে তিনি এনআরসি হতে দেবেন না। সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি বন্ধ করতে বিশ্বের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের আহ্বান জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কপিরাইট © বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির